স্বাস্থঃ
প্রস্রাবে ইনফেকশন রুখতে শতভাগ হাইজেনিক টয়লেট নিশ্চিত করতে UTI এবং হাইজেনিক টয়লেট ব্যবহার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি লক্ষ্যে বিশ্ব টয়লেট দিবস উদযাপন করেছে হারপিক এবং আরটিভি।
“সকলের জন্য স্যানিটেশন’’ স্লোাগানে ১৯ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখ, (মঙ্গলবার) রাজধানীর বেঙ্গল মালটিমিডিয়া স্টুডিওতে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ স্কাউটস-এর জাতীয় উপ কমিশনার (সমাজ উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য) ও বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো’র মহাপরিচালক মো.ফসিউল্লাহ্, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপার্চায অধ্যক্ষ কামরুল হাসান খান, সাবেক সংসদ সদস্য নুরজাহান বেগম মুক্তা, মেহেজাবিন খালেদ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ডেইজি সারোয়ার, ‘ডেটল হারপিক পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ’-এর মুখ্য সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আহমেদ তারেক এবং টেলিভিশনের বড় পর্দার অভিনেত্রী আইরিন সুলতানা; ছোট পর্দার পরিচিত মুখ উর্মিলা শ্রাবন্তী কর, ফারিয়া শাহরিন, তানিন তানহা; কন্ঠশিল্পী ঝিলিক, বিন্দু কণা, নাজু আখন্দ, আর্নিক, বেলী আফরোজ, সাবরিনা সাবা; নৃত্যশিল্পী বারিষ হকসহ দেশের শোবিজ অঙ্গনের অনেকেই উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেন,“আমরা দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা করে টয়লেটের ব্যবস্থা করেছি। কারণ আমরা মনে করি মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে একটি হচ্ছে স্বাস্থ্য। সেই স্বাস্থ্য সেবার অন্যতম পাঠ হচ্ছে টয়লেট। আমাদের দেশে যে পাবলিক টয়লেট ব্যবস্থা রয়েছে তা আমাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। তাই আমরা সমগ্র বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে পাবলিক টয়লেট তৈরি করবো এবং সেগুলো ব্যবহারের জন্য সকলকেই সচেতন হতে হবে। কারণ আমরা আগামী প্রজম্মকে যদি স্বাস্থ্যসম্মত ভাগে গড়ে তুলতে না পারি তাহলে আগামী প্রজম্ম নেতৃত্ব শুন্যতায় ভুগবে। এজন্য সম্মলিত ভাবে যদি আমরা এগিয়ে না আসি তাহলে কারো একার পক্ষে কাজ করে সফল হওয়া সম্ভব হবে না”। এছাড়াও জনগণের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে এবং এমন গুরুতর বিষয়টিকে সবার নজরে আনার জন্য বিশেষ ভাবে হারপিককে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন,“ঢাকা শহরের ট্রাফিক জ্যামের সাথে টয়লেটের বিষয়টা জড়িত। কারণ মানুষ যখন জ্যামে আটকে থাকে তখন মানুষের টয়লেটের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য খুবই দরকার। ঢাকা শহরে যারা বড় বড় মার্কেট বা শপিং মল তৈরি করবে তাদেরকে বাধ্যতামূলক ভাবে ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা ভাবে টয়লেট তৈরি করতে হবে। যারা এ ব্যবস্থা করবে না তাদের কাছ থেকে দিগুণ কর আরোপ করা হবে। এজন্য যার যার অবস্থান থেকে এসব বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে’’।
রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ লিমিটেডের মার্কের্টি ডিরেক্ট্রর নুসরাত জাহান বলেন,“ হারপিক একটি দায়িত্বশীল ব্র্যান্ড হিসেবে সবার জন্য সব জায়গায় নারী বান্ধব টয়লেট নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। হারপিক স্বপ্ন দেখে সবার জন্য পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত টয়লেট এবং একটি স্বাস্থ্যকর বাংলাদেশের। হারপিক যে স্বাস্থ্যসম্মত ও হাইজেনিক টয়লেটের প্রয়োজনে কাজ করছে তা একার পক্ষে সফল করা সম্ভব না। তাই সকলকে যার যার জায়গা থেকে সচেতনতা গড়ে তোলা এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন’’।
আরটিভির সিইও আশিক রহমান বলেন, “নারীদের অন্যতম সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে UTI (ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা মূত্রনালির সংক্রমণ)। প্রয়োজনীয় পানি পান না করা বা দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে যেতে না পারার কারণে, তাদের কেউ কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন ভয়াবহ UTI রোগে। এই মারাত্মক রোগ থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন বাসার বাইরে পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত টয়লেটের’’।
দেশের নারীদের মধ্যে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, বাজার, শপিংমলে গেলে টয়লেটে যাতে না যেতে হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় পানি পান করা থেকে বিরত থাকার প্রবণতা দেখা যায়, যা থেকে দেখা দিতে পারে ইউটিআই, কিডনির সমস্যাসহ নানাবিধ স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি। সারাদিন টয়লেট চেপে রাখায় তাদের UTI রোগে ভোগার আশঙ্কা অনেক বেশি বেড়ে যায়।
গড়ে প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে ৫ জন নারী ইউটিআই রোগে ভুগেন। হারপিক বাংলাদেশ-এর ফেসবুক পেজের এক জরিপে দেখা যায়, দেশের প্রায় ৭৯% মানুষ পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করে না। ৯৪% মানুষ বাসার বাইরে ব্যবহার উপযোগী টয়লেট পায় না। ৯১% মানুষ শহরের শপিংমলগুলোতে নারীদের জন্য ব্যবহার উপযোগী টয়লেট পাই না এবং ৭৯% লোক UTI কী তা জানে না।
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৫০% নারী ইউটিআই-তে আক্রান্ত এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিত্রও ভয়াবহ। সম্প্রতি ইউনিসেফ পরিচালিত এক গবেষণা থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ৫৬ মিলিয়ন মানুষ অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন রোগে ভুগে। এতে আরও বলা হয়েছে, পয়ঃব্যবস্থাপনা একটি শক্তিশালী অর্থনীতি, স্বাস্থের উন্নতি, নিরাপত্তা ও মর্যাদা বিশেষ করে নারীদের রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য কর্মস্থলে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ টয়লেট ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি। ইউটিআই মোকাবেলায় পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত টয়লেটের ভূমিকা অনবদ্য।
ইউটিআই-এর ব্যাপকতা এবং ভয়াবহতা বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সম্প্রতি হারপিক #HarpicAgainstUTI শিরোনামে একটি ডিজিটাল ক্যাম্পেইন শুরু করেছে, যার লক্ষ্য হলো দেশে শতভাগ নারীবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নিশ্চিত করা।
হারপিক বিগত ৪০ বছরেরও অধিক সময় ধরে বাংলাদেশে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত টয়লেট ব্যবহারের সচেতনতায় কাজ করে আসছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে হারপিক বর্তমানে ইউটিআই ও হাইজেনিক টয়লেট ব্যবহার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে।
-কেএম