সারাদেশঃ
গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে ঢাকাফেরত এক নারী (২১) স্বাস্থ্যকর্মীকে তালপাতার ঝুপড়িঘরে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়ি কোটালীপাড়া উপজেলার লখণ্ডা গ্রামে। অভিযুক্ত প্রশান্ত বাড়ৈ উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
ওই স্বাস্থ্যকর্মী রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসকের অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে চাকরি করেন। সম্প্রতি হাসপাতালটিতে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। এরপর ওই হাসপাতালটির কয়েকটি বিভাগ বন্ধ করা হলে গত মঙ্গলবার বাড়িতে যান তিনি।
ভুক্তভোগী ওই নারী স্বাস্থ্যকর্মী জানান, ঢাকা থেকে ফেরার খবর জানাজানি হলে এলাকাবাসীরা তার বাড়িতে জড়ো হয়। এরপর বাড়ি থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে পুকুরপাড়ে তালপাতা দিয়ে ঝুপড়িঘর তৈরি করে সেখানেই তাকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বাধ্য করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আজ প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আমি এখানে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর জীবনযাপন করছি। খুব কষ্ট হচ্ছে। একজন স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে অনেক মানুষকে আমি সেবা দিয়েছি। আর আজ এখানে থেকে আমার জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। মানুষ যে এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে তা আমার আগে জানা ছিল না।’
ওই স্বাস্থ্যকর্মীর মা বলেন, ‘আমার স্বামী নেই। আমার মেয়েটাই আয় করে। তার আয় দিয়ে আমার সংসার চলে। এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা প্রশান্ত বাড়ৈ চাপ সৃষ্টি করে আমার মেয়েকে এভাবে ঝুপড়ি ঘরে রেখেছে। আমার মেয়ের যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে এর দায় কে নেবে?’
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা প্রশান্ত বাড়ৈ বলেন, ‘এলাকাবাসীর সিদ্ধান্তেই তাকে পুকুর পাড়ে ঝুপড়িঘরে কেয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। আমি একা কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। এখন অপরাধ হলে সবার হবে। এখানে আমার একার কোনো দায় নেই।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক। এলাকাবাসী তাকে এভাবে না রেখে আমাদের জানালে আমরা তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখতে পারতাম।’ ওই নারী স্বাস্থ্যকর্মীকে উদ্ধার করে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
-কেএম