অনলাইনঃ
পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানোর কাজ শেষ। তবে সেতুর সম্পূর্ণ কাজ আগামী বছরের শেষে সম্পন্ন হতে পারে। এজন্য পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের সম্ভাব্য তারিখ ধরা হয়েছে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে।
সেতু উদ্বোধনের পর থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের সেতু দিয়ে যাতায়াত সহজ হবে। সেতুতে যাতায়াত সহজ ও দ্রুত হলেও যানবাহনের টোলের ক্ষেত্রে ফেরি পারাপারে যা ছিল তাই থাকছে নাকি বেশি হচ্ছে। ইতোমধ্যেই জনমনে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। সেতুর টোল নির্ধারণের সঙ্গে যাত্রীদের বাস ভাড়া কত হতে পারে সেটি নিয়েও বাস মালিক কম্পানিগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে।
পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির মতে, সেতুতে যানবাহন চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।
তবে সরকার চেষ্টা করছে, স্বাধীনতার ৫০তম বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করার। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন করে যানবাহন চলাচল শুরু করতে চায়।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্যদিয়ে পদ্মার বুকে সেতু দাঁড়ায়। গত বৃহস্পতিবার ৪১তম শেষ স্প্যান বসানোর মধ্যদিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতু দৃশ্যমান হয়। এখন চলছে সেতুর প্রথম তলায় রেলওয়ে স্ল্যাব আর দ্বিতীয় তলায় রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ।
নিজস্ব অর্থায়নে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলে গত বছর ভাড়া নির্ধারণ করেছিল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। আগামী ১৫ বছরের জন্য টোল ভাড়া নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি। সেতুতে যখন থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হবে ঠিক সেই সময় থেকে ভাড়াটি নির্ধারণ করা হবে।
যানবাহন পদ্মা সেতু পারাপারে সওজ’র ভাড়া নির্ধারণী তালিকায় বড় বাসের ক্ষেত্রে ২ হাজার ৩৭০ টাকা, ছোট বাসের জন্য ২ হাজার ২৫ টাকা, বড় ট্রাক ২ হাজার ৭৭৫ টাকা, মাঝারি ট্রাক ২ হাজার ১শ’ টাকা এবং মিনি ট্রাক ১ হাজার ৬২০ টাকা। মাইক্রোবাসের জন্য ১ হাজার ২৯০ টাকা, প্রাইভেটকারের জন্য ৭শ’ ৫০ টাকা এবং মোটরসাইকেলের জন্য ১শ’ ৫ টাকা করা হয়েছে। সওজ-এর প্রস্তাবণায় বলা হয়েছে, ১৫ বছর পরপর ১০ শতাংশ হারে টোল ভাড়া বৃদ্ধি পাবে। তবে এখনো এই প্রস্তাবের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। বর্তমানে ফেরিতে যে হারে যানবাহন পারাপারে ফি দেওয়া হচ্ছে, এর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ফি দিতে হবে পদ্মা সেতু পারাপারে।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে ২০১২ সালে সিদ্ধান্ত নেয় সেতু বিভাগ। সেতু নির্মাণে অর্থ মন্ত্রণালয় ঋণ হিসেবে টাকা দিচ্ছে সেতু বিভাগকে। বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। সেই পরিশোধ বিবেচনায় নিয়েই টোলের এই হার প্রস্তাব করা হয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মোঃ. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, গত বৃহস্পতিবার পদ্মা সেতুতে শেষ স্প্যান বসানো হয়েছে। এই স্প্যানের মধ্য দিয়ে সেতুর মূল কাজ শেষ হয়েছে। অর্থাৎ কাঠামো তৈরি হয়ে গেলো। স্প্যান হচ্ছে সেতুর এক পিলারের সঙ্গে আরেক পিলারের সংযোগ তৈরি করে।
-কেএম