প্রবাসী কথাঃ
সৌদি আরব থেকে আরো ২০০ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। গতকাল ২৬ অক্টোবর, শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটায় তাদের নিয়ে একটি ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এ নিয়ে চলতি বছর সৌদি আরব থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬ হাজারের বেশি।

পরে দেশে ফেরত এ শ্রমিকেরা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহায়তায় খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছান বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ঢাকা ট্রিবিউন।

শুক্রবার দেশে ফেরতদের একজন কুড়িগ্রামের আকমত আলী। সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে মাত্র পাঁচ মাসে আগে সৌদি আরব যান তিনি। কিন্তু তার সে স্বপ্ন বেশি দিন স্থায়ী হল না।

আকমত আলীর অভিযোগ, তার কাজের অনুমতিপত্র বা আকামার মেয়াদ আরো দশ মাস বাকি। তবুও তাকে জোর করে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছর ১৬ হাজারের বেশি বাংলাদেশি সৌদি আরব থেকে ফেরত এসেছে। এর মধ্যে চলতি মাসেই ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সহায়তায় ৮০৪ জনকে সহযোগিতা করেছে ব্র্যাক। এবার ফেরাদের মধ্যে একদিনে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক কর্মী ফেরত এলেন গতকালই।

গোপালগঞ্জের ছেলে সম্রাট শেখও এদিন অন্যান্যদের সাথে ফেরত আসেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে সম্রাট জানান, আরো আট মাসের আকামা ছিল তার। নামাজ পড়ে বের হতেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি। আর কোনো কিছুই না দেখেই তাকে সোজা দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

একইরকম অভিযোগ নারায়ণগঞ্জের সাইফুল ইসলামের। তার আকামার মেয়াদও এখনো বাকি ছিলো আরো ৬ মাস। এটি দেখানোর পরও তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

সাইফুল বলেন, ‘মাত্র ৯ মাস আগে সৌদি গিয়েছিলাম, আকামার মেয়াদও ছিল ছয় মাস।’ তবুও দেশে ফিরতে হলো তাকে।

চট্টগ্রামের আব্দুল্লাহ জানান, তিনি আকামা তৈরির জন্য কফিলকে (স্থানীয় স্পন্সর) আট হাজার রিয়াল জমা দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেই কফিল কোনো দায়িত্ব নেয়নি।

ফেরত আসা এসব বাংলাদেশিরা এ বিষয়ে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। তাদের মতো আর কাউকে যেন এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য করা না হয়, সে বিষয়ে মনোযোগ দেয়াও দাবিও করেন।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ফেরত আসা কর্মীরা যেসব বর্ণনা দিচ্ছেন সেগুলো মর্মান্তিক। সাধারণ ফ্রি ভিসার নামে গিয়ে এক নিয়োগকর্তার বদলে আরেক জায়গায় কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়লে অনেক লোক ফেরত আসতো। কিন্তু এবার অনেকেই বলছেন, তাদের আকামা থাকার পরেও ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বিশেষ করে যাওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই অনেককে ফিরতে হচ্ছে, যারা খরচের টাকার কিছুই তুলতে পারেননি।’

রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে এই দায় নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘পাশাপাশি নতুন করে কেউ যেন গিয়ে এমন বিপদে না পড়ে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’

-কেএম

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily