প্রশাসনঃ
কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের বিষয়টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। এছাড়াও বাংলাদেশ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সুসম্পর্ক অটুট থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
৫ আগস্ট, বুধবার দুপুর ২টার পর কক্সবাজারে সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ নিহত হওয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এক সংবাদসম্মেলনে সেনাবাহিনী প্রধান এই মন্তব্য করেন। এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদও উপস্থিতি ছিলেন।
এ সময় আজিজ আহমেদ বলেন, সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ হত্যাকাণ্ড বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এর দায় কোনো প্রতিষ্ঠানের নয়। স্বাধীনতার পর থেকেই সেনাবাহিনী ও পুলিশের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। সেই সম্পর্ক বজায় থাকবে।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রী যৌথ তদন্তকমিটি গঠন করে দিয়েছেন। সেটি সঠিকভাবে কাজ করবে। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী সব রকম সহযোগিতা করবে এবং পুলিশও একইভাবে সহযোগিতা করবে।
এছাড়াও সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ নিহতের ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তকর তথ্য না ছাড়ানোর জন্যও আহ্বান জানান আইজিপি বেনজীর আহমেদ।
এর আগে বুধবার দুপুরে হেলিকপ্টারে করে তারা টেকনাফের পৌঁছান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। সেখানে পৌঁছে প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য শুনেন এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এর আগে ৩১ জুলাই, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ায় মেরিন ড্রাইভ সড়কে একটি চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান (৩৬) নিহত হন।
এ বিষয়ে পুলিশ দাবি করেছিল, ওই সেনা কর্মকর্তা তার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার আসছিলেন। এসময় তার গাড়িতে আরো একজন ছিলেন। মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশ গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এই শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক। এক পর্যায়ে সেনা কর্মকর্তা তার কাছে থাকা পিস্তল বের করলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে ওই সেনা কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন। পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আজ শনিবার সকালে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
তবে পুলিশের এমন ভাষ্য নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন ওঠে। ঘটনার প্রত্যক্ষর্শী নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তার এক সঙ্গীর বক্তব্যের সঙ্গে পুলিশের ভাষ্যের কিছুটা অমিল রয়েছে বলে একটি সূত্র জানায়। এমন প্রেক্ষাপটে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সেখান থেকে ২০ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ২ জুলাই, রবিবার এই প্রত্যাহার আদেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বোন শারমিন শাহরিয়া তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করেছেন হয়েছে। এ মামলায় টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া চেকপোস্টের ইনচার্য লিয়াকত হোসেনসহ ৯ জনকে আসামী করা হয়েছে।
আজ ৫ আগস্ট, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ উপজেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারহার আদালতে মামলাটি দাখিল করা হয়।
-কেএম