হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দর এবং সকল বিমান বন্দরের অভিভাবক। এই বন্দরটার কথা বাহিরে থেকে সাধারণ মানুষ হিসেবে প্রয়োজনের তাগিদে কোন কাজের প্রয়োজন হলে একটা আতংক তৈরী হয়।
কারন, বাহির থেকে পত্র-পত্রিকায় এই প্রতিষ্ঠানটিতে নানা ধরনের লোমহর্ষক কাহিনী জানা যায়। তবে সেসব প্যাসেন্জারের সঙ্গে বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যকার ঘটনার খবর প্রকাশ হয়ে থাকে।
এবার জানা গেল হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনাল নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্প মূলত জাপানের মিৎসুবিশি এবং কোরিয়ার স্যামসাং নামে দুটি প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হয়। অতঃপর এই দুই কোম্পানি তাদের কাজের খন্ঠ খন্ড অংশ দেশীয় বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সাব কনট্রাক্ট দিয়ে কাজগুলো সম্পন্ন করে থাকে। এ ধরনেরই একটি প্রতিষ্ঠান “প্লিয়াডিস কনস্ট্রাকশন এন্ড কনসাল্টিং লিমিটেড”।
“প্লিয়াডিস কনস্ট্রাকশন এন্ড কনসাল্টিং লিমিটেড”। ঢাকার সিএমএম আদালতে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের বিরুদ্ধে গত ৯/৩/২০২৫ তারিখে একটি প্রতারণা মামলা করে। মামলা নম্বর ১৭৪৯ /২৫।
“মামলার বিবরণী জানা গেল, মিৎশুবিশি ও স্যামসং এর সঙ্গে “প্লিয়াডিস কনস্ট্রাকশন এন্ড কনসাল্টিং লিমিটেড” এর “to floor including ramp basement floor screwing superbly এবং student to receive hardner 15 mm thick” কাজটি সম্পন্ন করতে ৩০০ টাকা স্ট্যাম্পের উপরে “প্লিয়াডিস কনস্ট্রাকশন এন্ড কনসাল্টিং লিমিটেড” এর মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হয়।
“মামলার বিবরণী জানা গেল, মিৎশুবিশি ও স্যামসং এর সঙ্গে “প্লিয়াডিস কনস্ট্রাকশন এন্ড কনসাল্টিং লিমিটেড” এর “to floor including ramp basement floor screwing superbly এবং student to receive hardness 15 mm thick” প্লিয়াডিস কনস্ট্রাকশন এন্ড কনসাল্টিং লিমিটেড” বিগত চার বছর যাবত তেত্রিশ জন বিভিন্ন ক্যাটাগরির জনবল নিয়োগ করে যাদের প্রতি মাসের বেতন ভাতা ২০ লক্ষাধিক টাকা।
এ ছাড়া ৭২ কোটি ৬ লক্ষ ৪৯ হাজার ৫৮২ টাকার কাজের প্রত্যাশিত ৯ কোটি ২৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার কাজের পারফরম্যান্স গ্যারান্টির কমিশনের টাকা প্রতিবছর ব্যাংকে ১৬ লক্ষ টাকা জমা করতে হচ্ছে।
সবচেয়ে মজার বিষয় হলো পারফরম্যান্স গ্যারান্টি জমা নিয়েও উল্লেখিত কোম্পানিকে কাজটি না দিয়ে চুক্তি ভঙ্গ করে অন্য প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে “প্লিয়াডিস কনস্ট্রাকশন এন্ড কনসাল্টিং লিমিটেড” এ এম ডি মোঃ জুবায়ের আক্তার চৌধুরী বলেন, যেহেতু তারা কাজ দেননি, যেহেতু তাদের কাছে এই কাজে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
স্যামসং এর সেন্ট্রাল ম্যানেজার সায়েম চৌধুরী বলেন, প্লিয়াডিশ যদি টাইম মত নোটিশ করতো তাহলে হয়তো কিছু একটা করা যেত। তিনি আরো বলেন, ৪ বছর গ্যাপের কারনে এবং অন্য সাব-কন্ট্রাকটরদের কারনে উনারা ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছেন। বিষয়টি অফিসিয়াল সে জন্য আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারি না।
এই মামলা যারা আসামি
১। যুয়োক ইয়ং, সেন্ট্রাল ম্যানেজার, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসার প্রকল্প
২। হিসক কিম কিম, কষ্ট কন্ট্রোল ম্যানেজার, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসার প্রকল্প
৩। মোঃ মোহাম্মদ সায়েম চৌধুরি, সেন্ট্রাল ম্যানেজার,হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসার প্রকল্প
৪। কিউংসু কাং, প্রাক্তন প্রজেক্ট ম্যানেজার, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসার প্রকল্প।
৫। ইয়াংকুয়ান চই, বিভাগীয় প্রকল্প ব্যবস্থাপক, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসার প্রকল্প।
উল্লিখিত আসামীদের বিরুদ্ধে আগামী ২৭/৫/৩০২৫ তারিখে সমন জারি হয়েছে।
এই বিমানবন্দরের অন্যান্য কাজগুলোতেও মালামাল ক্রয়ে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ আছে। এই সকল অভিযোগেরও একটি শক্তিশালী তদন্ত সাব-কমিটি গঠিত হয়েছে। সেই সাব কমিটিতে সেই সাব-কমিটি সদস্যরা হলেন আনোয়ার হোসেন খান, শেখ তন্ময় ও সৈয়দা রুবিনা আক্তার।
বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম যেমন: লিফট, বৈদ্যুতিক কেবল, সুইচ, ভাল্বসহ জেনারেটর, ট্রান্সফরমার, স্কেলেটর ও স্ক্যানিং মেশিন কেনাকাটায় দূর্ণীতির তদন্ত হচ্ছে।
-শি