অনলাইনঃ
ঢাকা শহরে এলাকাভিত্তিক খেলা এবং বিনোদনের পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে শিশু-কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
ফলে শিশুরা টিভিতে কার্টুন ও গেইমস এ আসক্ত হয়ে পড়ছে। পর্যাপ্ত খেলার জায়গার অভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, নারী ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময় বাসায় বন্দির মতই থাকছেন।
সামাজিকীকরণের জন্য এলাকার অভ্যন্তরে গাড়ি কম চলাচল করে এমন রাস্তায় অথবা ছোটগলিতে শিশুদের খেলাধূলা ও বয়োজ্যেষ্ঠদের বিনোদনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
এতে সবার বিনোদন ও সামাজিকীকরণের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের অপরাধও কমে আসবে।
আজ ২৪ ফেব্রæয়ারি ২০২২, বিকাল ০৩:০০ টায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ নং ওয়ার্ড সার্বিক সহযোগীতায় ও বৃহত্তর পশ্চিম জাফরাবাদ বাড়ি মালিক কল্যাণ সমিতি, কারফি সিটিস এলায়ান্স বাংলাদেশ ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডবিøউবিবি) ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে সৈকত হাউজিং এর মিনা হাউজ গলিতে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড- এর উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন।
প্রতি বৃহস্পতিবার বিকাল ৩.০০ থেকে ৫.০০ টা পর্যন্ত সৈকত হাউজিং এ ছবি আঁকা, কারুকাজ শিখানো, দাবা-লুডু-ক্যারাম-দড়ি লাফ-ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড এর ব্যবস্থা করা হবে।
বৃহত্তর পশ্চিম জাফরাবাদ বাড়ি মালিক কল্যাণ সমিতি সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোরশেদ আলোম (স্বপন) এর সভাপতিত্বে এবং ডাবিøউবিবি ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প ব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল এর প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান মনির, বৃহত্তর পশ্চিম জাফরাবাদ বাড়ি মালিক কল্যাণ সমিতি এর অর্থ সম্পাদক মকবুল হোসেন ও সদস্য ওবায়েদুল্লা।
এম এ মান্নান মনির বলেন, পর্যাপ্ত খেলাধূলার সুযোগ না পাওয়ায় শিশুদের মধ্যে কম্পিউটার-মোবাইলসহ বিভিন্ন ডিভাইসের প্রতি আসক্তি বেড়ে গেছে। করোনাকালীন অনলাইনে ক্লাস করার কারণে এ সমস্যা বহুগুণে বেড়ে গেছে। ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। যেগুলো আছে সেগুলো সকলে ব্যবহার করতে পারছে না। কর্পোরেশনের পক্ষে রাতারাতি দ্রæত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের সদিচ্ছা থাকলে এলাকার অভ্যন্তরে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধূলা ও সামাজিকীকরণের জন্য মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড করা যেতে পারে।
মোকবুল হোসেন বলেন, আমার মনে হচ্ছে আজ শিশুরা ঈদের মত খুশি ও আনন্দে রয়েছেঠ। দির্ঘদিন শিশুরা ঘর বন্ধি জীবন যাপন করার ফলে তাদের শারীরিক কোন শরীরির চর্চা না থাকায় তারা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাদের এই ডিভাইস আসক্তি দুর করতে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড একটি সমাধান হিসেব কাজ করতে বলে আমি আশা করছি।
মোঃ মোরশেদ আলোম (স্বপন) বলেন, বর্তমান সময়ে আমাদের শহরের শিশুরা তাদের খেলাধূলার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। মানুষের তুলনায় পার্ক ও খেলার মাঠের সংখ্যা কম। বিশেষ করে কিশোর বয়সের ছেলেরা নানা অপকর্মে জরিয়ে পড়ছে। সামাজিক মূল্যবোধ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা কেবলই গাড়ি কেন্দ্রিক নগর তৈরি করতে গিয়ে সামাজিকীকরণ থেকে সরে আসছি। সেই জায়গায় এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড আয়োজনের মাধ্যমে শিশুদের জন্য খেলাধূলার সুযোগ তৈরি হলে এ সমস্যা অনেকটাই সমাধান করা যাবে।
প্রধান অতিথির বক্তেব্যে শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন বলেন, আমাদের ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ৩৪ নং ওয়ার্ডে ৩ লক্ষ মানুষের বসবাস। এতো মানুষের বিপরিতে মাত্র দুটি খেলা মাঠ রয়েছে যা চাহিদার তুলনায অপ্রতুল। যা নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এলাকাভিত্তিক অব্যবহৃত বা স্বল্প ব্যবহৃত স্থানগুলোতে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড আয়োজন করে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খেলাধূলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টি করা হলে শিশু, নারী, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা উপকৃত হবেন। আমার এই ৩৪ নং ওয়ার্ডে সৈকত হাউজিং ও নিরিবিলি হাউজিং এ দুটি স্থানে মোবাইল প্লেগ্রাউন্ড আয়োজন করা হচ্ছে। আমার ওয়ার্ডে কমিউনিটি ভিত্তিক আরো কিছু এলাকাভিত্তিক খেলার জায়গা তৈরি করা যায় কিনা সে বিষয়েও আমি এবং আমার ওয়ার্ড কার্যালয় কাজ করছে। তিনি ৩৪ নং ওয়ার্ডের শংকর এলাকার চেয়ারম্যান গলি মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড আয়োজন করার ঘোষণা দেন।
-শিশির