কূটনৈতিক ডেস্কঃ
লিবিয়ায় নিহত ২৬ বাংলাদেশির মধ্যে ২৪ বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা সবাই মানব পাচারকারীদের গুলিতে মারা যান। এর মধ্যে ৮ জনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। এ ঘটনায় পাচারকারীদের শাস্তির দাবি করেছেন নিহতদের স্বজন ও এলাকাবাসীর।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার রসুলপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেন আকাশ। পাচারকারীদের গুলিতে নিহতদের একজন। পরিবারের সবচেয়ে আদরের ছোট সন্তানের মৃত্যুতে শোকাতুর বাবা-মা।
আকাশের স্বজনরা জানান, লিবিয়ায় একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করার সময় আকাশের সঙ্গে পরিচয় হয় দালাল তানজিমুলের সঙ্গে। তার গ্রামের বাড়ি ভৈরবের শ্রীনগরে। ওই দালালের মাধ্যমে আকাশসহ ৩৮ বাংলাদেশি ইটালির পথে রওয়ান হন। ১৫ দিন আগে লিবিয়ার বেনগাজি থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে তাদের ত্রিপলী নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথে মিজদাহ শহরে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য সবাইকে জিম্মি করে চক্রটি। এ সময় তাদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন করা হয়। এর এক পর্যায়ে অভিবাসীদের হাতে এক পাচারকারী মারা যায়। এরই জেরে অভিবাসীদের দিকে বৃহস্পতিবার এলোপাতাড়ি গুলি চালায় দুষ্কৃতিকারীরা। এতে ঘটনাস্থলেই হ ২৬ বাংলাদেশি মারা যান। তার মধ্যে আকাশ রয়েছেন।
আকাশের ভাই জানান, আমারে ভাই বার বার প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছে। ১০ হাজার ডলার চেয়েছে, এত টাকা আমরা কিভাবে দেব? তারা অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। আমার ভাই বার বার প্রাণ ভিক্ষা চেয়েও রক্ষা পেল না।
এ ঘটনায় ভৈরবের সোহাগ মিয়া, মাহবুব হোসেন, সাকিব মিয়া, মামুন মিয়া, মোহাম্মদ আলী, জানুমিয়াসহ ৭ জন নিহত হয়েছে। তাদরে বাড়িতেও একই অবস্থা। সুখের জন্য জমি বিক্রি ও ঋণ করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারা। দালালচক্রের ফাঁদে পড়ে এখনে পথে বসার সামিল হয়েছে এই পরিবারগুলোর। এখন সন্তানের মৃতদেহ দেশে ফেরত আনার জন্য সরকারের সহযোহিতা কামনা করেন তারা। একই সঙ্গে দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি করেন তারা।
লিবিয়ায় নিহত ২৬ বাংলাদেশির বাকিদের মধ্যে আরো রয়েছেন- আসাদুল, আয়নাল, মনির, সজীব ও শাহীন তাদের বাড়ি টেকেরহাটে। এছাড়াও গোপালগঞ্জের সুজন ও কামরুল, হোসেনপুরের রহিম। মাদারীপুরের জুয়েল, মানিক বিদ্যানন্দী। ঢাকার জাকির, জুয়েল, শামীম, সৈয়দুল, ফিরোজ আরফান। নারায়ণপুরের লাল চান্দ এবং যশোরের রাকিবুল।
-ডিকে