আন্তর্জাতিকঃ
ভারতের দিল্লি থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের দূরত্ব প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার। কিন্তু অবিশ্বাস্য মনে হলেও এই দীর্ঘপথে শুরু হচ্ছে বিলাসবহুল বাস সার্ভিস।
ভারতের অ্যাডভেঞ্জার্স ওভারল্যান্ড নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালে চালু করতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক এই বাস সার্ভিস।
নতুন এই বাস সার্ভিসে যাত্রীরা ৭০ দিনে ২০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ১৮টি দেশ ভ্রমণ করতে পারবেন।
যাত্রীরা পুরো যাত্রার জন্য একসাথে টিকিট কিনতে পারবেন। এই বাস সার্ভিসের নাম দেয়া হয়েছে বাস টু লন্ডন। এতে চারটি ক্যাটাগরি থাকছে। কেউ যদি লন্ডন পর্যন্ত না যেতে চান তা হলেও সমস্যা নেই। তিনি কয়েকটি দেশ ঘুরে নিজস্ব উদ্যোগে ফিরে আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে একরকম প্যাকেজ ধার্য করা হবে।
তবে লন্ডন পর্যন্ত সফর করতে একেকজনকে গুণতে হবে ১৫ লাখ টাকা। রয়েছে ইএমআই অপশনও। যাত্রীরা চাইলে কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন।
এই সফরে যাওয়ার জন্য মোট ১০টি দেশের ভিসা থাকা জরুরি। যাত্রীদের ভিসার ব্যবস্থাও করে দেবে সংস্থাটি।
২০ সিটের এ বাসে থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা। ২০ জন যাত্রী ছাড়াও বাস পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন আরও চারজন। ড্রাইভার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ড্রাইভার, এটেন্ডেন্ট ও গাইড। একেক দেশে একেকজন গাইড থাকবেন।
ডেইলি মিরর বলছে, বাস সার্ভিটি চালু করার জন্য ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
১৮টি দেশের ওপর দিয়ে এই বাস চলবে। ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, চীন, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাকিস্তান, রাশিয়া, লাটবিয়া, লিথুনিয়া, পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য।
এরই মধ্যে উদ্যোক্তাদের সাথে কথা হয়েছে মস্কো, ভিলনিয়াস, প্রাগ, ব্রাসেলস এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট সহ ইউরোপীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে শুরু করে উজবেকিস্তানের প্রাচীন শহর যেমনঃ তাসখন্দ ও সমরকন্দ কর্তৃপক্ষের সাথে।
এমনিক বাসটি কাজাখস্তানের ক্যাস্পিয়ান সাগরের একটি ক্রুজকে যুক্ত করবে, তার পর গোবি মরুভূমি, চীনের গ্রেট ওয়াল, চেংদুর দর্শনীয় স্থান এবং তারপরে সিল্ক রুট দিয়ে যাত্রা করবে।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে চূড়ান্ত যাত্রা বিরতির আগে মিয়ানমারে দর্শনীয় প্যাগোড়াগুলোও ভ্রমণ করার সুযোগ পাবেন যাত্রীরা।
এ বাস সার্ভিস বিষয়ে অ্যাডভেঞ্জার্স ওভারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সঞ্জয় মদন এবং তুষার আগরওয়াল বলেন, প্রত্যেকটি দেশের রুটের যাত্রা নির্বিঘ্ন ও নিশ্চিত করার জন্য অনেক গবেষণা ও যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।আমরা সবকিছু তথ্য ও অনুমতি চূড়ান্ত করেছি। যাত্রীদের ভ্রমণ মসৃণ, ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত ও যোগাযোগে সহযোগিতা করতে অভিজ্ঞ ইংরেজিভাষী স্থানীয় গাইড থাকবেন।
তারা বলছেন, আমাদেরকে নতুন সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এই বিষয়ে আমরা প্রস্তুত। আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে আলোচনা সম্পন্ন করেছি।
নতুন এই সার্ভিসটি যুক্তরাজ্য ও ভারতের মধ্যে একটি বৈপ্লবিক সংযোজন।
তবে ইতিহাস বলছে, এর আগে ব্রিটিশ আমলেও লন্ডন টু কলকাতায় বাস সার্ভিস চালু ছিলো।
-পিকে