মিলি সুলতানা, কুইন্স, নিউইয়র্ক থেকেঃ
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ যখন তাঁর মেয়ের বয়সী শাওনের প্রেমে মজে তাকে বিয়ে করেন, তখন কারো উচ্চবাচ্য ছিলো? গুলতেকিন খানকে যখন হুমায়ূন আহমেদ দেখতে বাধ্য করালেন, কোনো একসময় এই শাওনই গুলতেকিনকে আন্টি ডাকতো — হুমায়ূনকে আংকেল আংকেল করে উনার কোলে বসে পড়তো। তারপর কি হল? চারাগাছে ফুল ফুইটাছে ডাল ভাইঙ্গোনা……..! শাওন হুমায়ূনের প্রেমের ফুল বিয়ের ফুল সবই ফুটলো। হুমায়ূন আহমেদ বড় লেখক ছিলেন বলে সমাজে তাঁর নাইয়া পার হয়ে গেল।
কিন্তু এটা কি স্বাভাবিক ছিলো?
সমাজের প্রতিষ্ঠিত দানবরা তাঁকে বাহবা দিলো। তখন আজকের সাংবাদিকরা হিমুর হইলদা রঙের পাঞ্জাবির ভিতরে টিকটিকির মত লুকিয়েছিল। তারপর এলো রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের পালা। সত্তর বছরের তেজী বলবান রেলমন্ত্রী হনুফা খাতুনকে বিবাহ করলেন। এই বিয়ে সরকারী উৎসবে পরিণত হয়েছিলো। মন্ত্রী এমপির বহর কুমিল্লায় হনুফার বাড়ির দিকে ছুটলেন। ব্যান্ড পার্টির বাদ্য বাজনা — হনুফা খাতুনের দেশেরে বিয়ার বাইদ্য আল্লা বাজেরে……. কেউ কেউ উক্তি করেছেন, হনুফার চাঁদমুখ যেন মালকাবানু ছবির শাবানার মত।
সেই তেজি বলবান রেলমন্ত্রী ও হনুফার দুর্বার কেমেস্ট্রিতে তাঁদের যমজ সন্তানও লাভ হল। আমরা রিয়েলিটি ইগনোর করিনি। আমরা বুঝতে পেরেছি হুমায়ূন আহমেদ এবং রেলমন্ত্রীর মেশিন ভালো ছিল। সবচেয়ে প্লাস পয়েন্ট ছিল তাঁদের অবস্থান সমাজের উঁচুতলায়। এসব উঁচুতলার ব্যক্তিদের নিয়ে কেউ কখনো টুশব্দ করেনা। জাতিকে তখন বলপূর্বক গু’ এবং গু’য়ের তলার মাটিও খাওয়ানো হয়।
আজ রিকশাচালকের নিয়ে সবার এত মাথাব্যথা কেন? সে লোয়ার ক্লাসের বলে? হুমায়ূন আহমেদ এবং মুজিবুল হকের অসম বিয়ে নিয়ে আজকের এই নির্লজ্জ সমাজ তখন চুপ ছিল কেন? শামসুর মত হতদরিদ্রদের সেই অপরাধে জেলে যেতে হয়। আজকের সমাজ যেমন নির্লজ্জ, সাংবাদিকরাও তেমনি নির্লজ্জ। উচ্চবিত্তদের প্রশ্নে তাদের কলম ধরা হাতটি প্যারালাইজড হয়ে পড়ে। মুখ দিয়ে ঝরে চাটুকারিতার লালা।
-ডিকে