রাফির শরীরের বর্ননা দিয়েছেন তার মর্গের বোন

অনলাইনঃ
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে এরই মধ্যে দাফন করা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়।

মেয়েদের ময়নাতদন্ত করার সময় একজন নারী অভিভাবক উপস্থিত থাকতে হয়। কিন্তু রাফির ময়নাতদন্তের থাকার মত অবস্থায় তার কোনো স্বজন ছিলেন না।

এ সময় বোন পরিচয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের এজিএস ফাতিমা তাহসিন। তিনি ময়নাতদন্তের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন ফেসবুকে।

ফাতিমা লিখেছেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটা থেকে ঢাকা মেডিকেলে। সকাল সাড়ে আটটায় হিমাগার থেকে বডিটা বের করে এমারজেন্সি মর্গে নিয়ে গেছে। মৃত মানুষটা মেয়ে হলে তার ময়নাতদন্ত করার সময় মা অথবা বোনের থাকতে হয়। রাফির মা অসুস্থ আর আপন কোনো বোন না থাকায় আমাকে বোন হিসেবে রেখেছিলো ময়নাতদন্তের সময়।’

‘মেয়েটার পেটে কোনো মাংস নেই, মুখ দিয়ে লালা ঝরছে, যৌনাঙ্গ পুড়ে বীভৎস অবস্থা, পায়ের নখের লাল টুকটুকে মেহেদী রঙটুকু এখনো চোখে পড়ে।’

‘রাফির মা ভীষণ অসুস্থ গতকাল রাত থেকে, মেয়ে মারা যাওয়ার পর শেষবার একটু দেখতেও পারেননি। আঙ্কেল শোকে পাথর হয়ে গেছে আর মা মা বলে চিৎকার।’

‘ভাই দুইটা একটু পর পর অজ্ঞান হয়ে পড়ছে। মর্গের সামনে দুই-তিনশো সাংবাদিক দাঁড়িয়ে আছে, নেই শুধু রাফি। কান্না থামিয়ে রাখতে পারেননি প্রধানমন্ত্রীর পিএস, মেডিকেল বোর্ডের চেয়ারম্যানও। এম্বুলেন্সে করেই এসেছিলো ঢাকায় আবার ফিরেও যাচ্ছে এম্বুলেন্সে।’

‘বোন, পৃথিবীর চেয়ে ভালো জায়গায় থাকবি নিশ্চয়ই। আমরা যেই নরকে আছি সেখানে এখনও তোর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে, তোর পক্ষে কথা না বলার জন্য আদেশ দিচ্ছে, তোর পাশের এলাকায় গতকাল রাতে তোর মত করে আরেকটা ছেলের গায়ে আগুন দিয়েছে।’

‘আহ! কী সুন্দর! তুইই ভালো আছিস নরক থেকে চলে গিয়ে। শেষবার তোকে লাইফ সাপোর্টে দেখে আসলাম, গতকাল ব্ল্যাড ম্যানেজ করে দিলাম নয়ব্যাগ। আর যেতে হবে না তোকে দেখতে, রক্ত দিতে। ক্ষমা করিস না আমাদেরকে!’

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily