অনলাইনঃ
দুই কারণে শপথ নেননি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রথমত, দলের মহাসচিব হিসেবে সংসদের বাইরে থেকে দায়িত্ব পালন ও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের যোগসূত্র রক্ষার দায়িত্ব পালনকে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা।
দ্বিতীয়ত, ব্যক্তিগত ও শারীরিক অসুবিধার কারণে এক সঙ্গে দুই দায়িত্ব পালনকে কঠিন মনে করছেন তিনি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই ব্যাপারে প্রথমে একমত না হলেও তাকে বুঝিয়ে বলে রাজি করিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এদিকে মির্জা ফখরুল যে আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন সন্ধ্যায় সেই বগুড়া-৬ আসন শূন্য ঘোষণা করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। এখন সংসদে বিএনপি দলীয় এমপিদের নেতৃত্ব দেবেন দলের যুগ্ম মহাসচিব চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হারুনুর রশীদ।
সেই সঙ্গে প্রত্যাহার করা হবে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের জাহিদুর রহমানের বহিষ্কারাদেশ।
সংসদে না যাওয়ার ব্যাপারে নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে দুইটি প্রধান কারণ আছে। একটি হচ্ছে, আমি মনে করছি যে- এই সময়ে সংসদের বাইরে থাকাটাই আমার জন্য বেশি প্রয়োজনীয়।
বিশেষ করে আমার দলের যে উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূল নেতৃবৃন্দের মধ্যে একটি যোগসূত্র রক্ষা করা এবং আমাদের নেতৃত্বের সঙ্গে যোগসূত্র রক্ষা করার দায়িত্বটা আমাকেই এখন পালন করতে হচ্ছে। এটা একটা প্রধান কারণ। আরেকটি হচ্ছে, আমার ব্যক্তিগত কিছু অসুবিধা আছে।
আমার শারীরিক অবস্থা, সবকিছু মিলিয়ে আমি সবসময় সময় দিতে পারব না। অনেক সময় দুটো দায়িত্ব পালন করা আমার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তো এই কারণেই আমি আপাতত সিদ্ধান্ত নিয়েছি সংসদে যাবো না। আর এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তার নিজের দিক থেকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ না থাকলেও দলের সিদ্ধান্তে তার পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমার লিডার যিনি এখন আছেন চেয়ারপারসনের দায়িত্বে, তারেক রহমান, উনাকে জানিয়েই তো আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি তো এককভাবে সিদ্ধান্ত নিইনি। প্রথমে উনি রাজী হতে চাননি, পরে আমি তাকে বুঝিয়ে বলার পরে তিনি একমত হয়েছেন। বিএনপির সংসদে অংশগ্রহণ ও তার বিরত থাকার বিষয়টি রাজনীতিতে কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন জানতে চাইলে মির্জা আলমগীর বলেন, দলের জন্য আমার মনে হয় যে প্রয়োজন ছিল এমন সিদ্ধান্তের। এর মধ্যদিয়ে অনেক রকমের ভুল বোঝাবুঝি দূর হবে। ভ্রান্ত ধারণা দূর হবে। আমি এমন একটি অবস্থায় থাকতে পারবো, যেখানে আমি দলকে আরও ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করতে পারবো।
সংসদে যাওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত দিলেও নিজে যাচ্ছেন না- এটাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন জানতে চাইলে মির্জা আলমগীর বলেন, এটা তো বৃহত্তর স্বার্থে, দলীয় সিদ্ধান্তে। আমরা তো সংসদেই যাচ্ছি কৌশলগত কারণে। কৌশলগত কারণেই আমি বাইরে থাকছি।
রাজনীতিতে বিএনপির কৌশল কি হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির মহাসচিব বলেন, রাজনীতিতে বিরোধী দলের রাজনীতি করার তেমন স্পেস নেই। সংসদে যেটুকু স্পেস আছে, সেটুকুকে আমরা কাজে লাগাতে চাই।
তিনি বলেন, একটা কথা সত্য যে, সংসদে যে চারজন বা পাঁচজন যখনই যাচ্ছেন, এতে করে তাদের একটি অফিসিয়াল অবস্থান তৈরি হয়। যাতে সবজায়গায় তারা কথা বলতে পারে এবং তাদের কথার একটি মূল্য থাকে।
-ডিকে