আইন আদালতঃ

মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকায় অন্তত ১৭ পুলিশের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

গতকাল সোমবার এ সংক্রান্ত চিঠি পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ থেকে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তারা সবাই তেজগাঁও ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সদস্য। একজন কনস্টেবল ছাড়া অন্যরা পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই)। এ ছাড়া মাদক কারবারে জড়িত থাকায় আদাবর থানার চার পুলিশ সদস্যকে গতকালই সাসপেন্ড করা হয়েছে। পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করে। সোমবার একটি পথ্রিকায় ‘মাদক কারবারে দুই থানার ২০ পুলিশ সদস্য!’ এ শিরোনামে খবর প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়।

দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, মাদক সিন্ডিকেটে যুক্ত যেসব পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন এসআই মোশাররফ চৌধুরী, নবীন জাহান রানা, শাহরিয়ার, সুমন মিয়া কামাল হোসেন, এএসআই রানা ও কনস্টেবল তোফাজ্জল। এ ছাড়া মাদক কারবারে জড়িত আদাবর যে চারজনকে গতকাল সাসপেন্ড করা হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন এসআই আশরাফুল ও এসআই রফিক।

দায়িত্বশীল অপর এক সূত্র জানায়, মাদক সিন্ডিকেটে যুক্ত কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে প্রায় নিয়মিত চিহ্নিত মাদক কারবারিদের যোগাযোগের তথ্য মিলেছে। মাদক কারবার সংক্রান্ত কলরেকর্ড জব্দ করা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে মাদক কারবারিদের সহযোগিতা করে আসছিলেন অসাধু এসব সদস্যরা। মাদক সিন্ডিকেটে সংশ্নিষ্ট পুলিশের এসব সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রত্যাহারের পাশাপাশি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে।

জানা গেছে, গতকাল তেজগাঁও থানা এলাকার আওতাভুক্ত রেললাইন বস্তি ও আশপাশ এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানকার মাদক আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ আছে, দীর্ঘদিন ধরেই রেললাইন এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা চলছিল। টাকার বিনিময়ে এতে সহায়তা করছিলেন কয়েকজন অসাধু পুলিশ সদস্য।

গত ২৮ জুন থেকে টানা কয়েক দিন তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড, রেললাইন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে তেজগাঁও কেন্দ্রিক মাদক কারবারিদের সেকেন্ড ইন কমান্ড শারমিন ওরফে স্বপ্নাসহ অন্তত ২০ মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। মূলত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই মাদক কারবারে পুলিশের সংশ্নিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরে গুরুত্ব বিবেচনায় পুরো বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব বর্তায় একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ওপর। তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই তদন্তে মাদক কারবারে পুলিশের সংশ্নিষ্টতার বিষয়টি উঠে আসে।

সর্বশেষ গত শনিবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মাসিক অপরাধ সভায় তেজগাঁও কেন্দ্রিক মাদক কারবারে পুলিশের সংশ্নিষ্টতার বিষয়টি আলোচনায় আসে। সেখানে প্রসঙ্গটি তোলেন তেজগাঁওয়ের ডিসি হারুন-অর রশিদ। মাদক কারবারিদের কাছ থেকে মাসোহারা নেওয়ার সঙ্গে জড়িত পুলিশ বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। এতে ঢাকার ৫০টি থানার ওসি ও পুলিশের সকল ইউনিটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় কমিশনার মাদকের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

-কেএম

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily