মাঝে মাঝে আমেরিকার পুলিশকে বাংলাদেশের পুলিশের মত মনে হয়

মিলি সুলতান, কুইন্স, নিউইয়র্ক থেকেঃ

“প্রসঙ্গ: জর্জ ফ্লয়েড — সবশেষে জনতার বিজয় হয়, হতেই হবে।”

মাঝে মাঝে আমেরিকার পুলিশকে বাংলাদেশের পুলিশের মত মনে হয়। এরা অনেক সময় চরম নৈরাজ্যের জন্ম দেয়। কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের নিষ্টুর হত্যার প্রতিবাদ এখন আর কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রইলো না। এই আন্দোলন এখন সমগ্র মার্কিনীদের কঠিন আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। ফ্লয়েডের খুনি ডেরেক চাওভিনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। মার্কিন ইতিহাসে এই প্রথম কোন পুলিশ এত দ্রুত কনভিক্টেড হল।

২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর মিনিয়াপলিসে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের আক্রোশের শিকার হতে হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড নামের এক ব্যক্তিকে। বর্ণবাদের অরাজকতার ইতিহাস আছে আমেরিকায়। বিভিন্ন ঘটনা জানা থাকলেও সেটা নিজের চোখে দেখিনি। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর নিজের অভিজ্ঞতায় প্রথম দেখেছিলাম বর্ণবাদ কাকে বলে। হিজাব পরা কোনো মুসলিমকে সহ্য করেনি সাদা চামড়াওয়ালারা। ম্যানহাটনের টাইম স্কয়ারে সত্তর বছরের চামড়ায় মাকড়সার জালের মত ঝুল পড়া শ্বেতাঙ্গ বুড়িকে দেখেছি হিজাব পরা এক এশিয়ান মুসলিম নারীর গায়ে সশব্দে থুথু ফেলতে, Bitch fucking Muslim বলে গালি দিতে। দেখে কষ্টে অপমানে চোখের জল এসে গিয়েছিল। আবার কিছুক্ষণ পরই সেই অপমান ভুলে গিয়েছি সভ্য শ্বেতাঙ্গদের প্রতিবাদ দেখে। তারা বুড়িকে নিন্দা করেছে। অপমানের শিকার মহিলার কাঁধে হাত রেখে “We’re sorry, she is old shit” বলেছে।

সেদিন মনে শান্তি পেয়েছিলাম শ্বেতাঙ্গদের ভূমিকা দেখে। নিরীহ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদে গোটা আমেরিকা কাঁপছে। বিক্ষোভের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে।
ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদেও কৃষ্ণাঙ্গদের পাশে দাঁড়িয়েছেন শান্তিপ্রিয়,গণতন্ত্রে বিশ্বাসী আমেরিকানরা। পুলিশের বেপরোয়া আচরণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের নিন্দা জানানো অব্যাহত আছে। ব্রুকলিনে ভায়োলেন্ট প্রটেস্ট চলাকালে বিক্ষুব্ধ জনতা NYPD এর পুলিশের দিকে ইট ছুঁড়ে তার দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছে। বিভিন্ন স্টেটে আগুনে গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তবে প্রতিবাদের ভাষা আরও সহনশীল হওয়া উচিত। আমেরিকান জনগণ সিভিলাইজেশনে বিশ্বাস করে। তারা সহিংসতা চায়না। সহিংসতা কখনো শান্তি আনেনা। এই সুযোগে একটা উশৃঙ্খল অংশ রাস্তায় নেমে পরিস্থিতি ঘোলাটে করছে। তদন্ত করলে দেখা যাবে এদের অনেকের বৈধ কাগজপত্র নেই। অবৈধ অভিবাসী এখন সুযোগ নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। এরা প্রতিবাদের নামে সহিংসতার জন্ম দিচ্ছে।

FacebookTwitter