অনলাইনঃ
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যে ভাড়াটিয়াকে বের করে দেয়া রাজধানীর পান্থপথের সেই বাড়ির মালিক নূর আক্তার শম্পাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত।
২২ এপ্রিল, বুধবার তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এ সময় তার বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যা চেষ্টা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই থানার উপ-পরিদর্শক সাইদুর রহমান।
অপরদিকে শম্পার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সাঈদ তার জামিন ও রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার একটি সড়ক থেকে তাকে আটক র্যাব। রবিবার রাতে ৫৮/৭ নম্বর পান্থপথ এলাকার দ্বিতীয় তলায় ভাড়াটিয়ার এক মাসের ভাড়া বাকি থাকায় দুই মাসের নবজাতক শিশুসহ তিন সন্তান ও তার বাবা-মাকে মারধর করে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেন বাড়ির মালিক শম্পা।
র্যাব-পুলিশের সদস্যরা মানবিক বিবেচনায় শম্পার কাছে ভাড়াটিয়াকে ঘরে রাখার অনুরোধ জানায়।
ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া সেলিমের স্ত্রী কুলসুম বেগম বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে। ছোট মেয়ের বয়স দুই মাস। আমার স্বামী সেলিম পান্থপথে কাজ করেন। গত ডিসেম্বর মাসে ১৬ হাজার টাকা ভাড়ায় আমরা নূর আক্তারের বাসায় উঠি।
বাসায় উঠার পর থেকে ঠিকমতো ভাড়া দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে স্বামীর কাজকর্ম না থাকায় গত মার্চ মাসের ভাড়া আমরা দিতে পারিনি। যে কারণে এই মাসের শুরু থেকে বারবার বাড়িওয়ালা আমাদের ভাড়া দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। বারবারই আমরা বাড়িওয়ালাকে বলছিলাম, টাকা থাকলে তারা আগেই ভাড়া দিয়ে দিতেন।
সর্বশেষ গত শনিবার রাতে বাড়িওয়ালা এসে ভাড়া দেয়ার জন্য চাপ দেন। ভাড়া না দিতে পারলে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা বলেন। বাসা থেকে বের হয়ে যেতে না চাওয়ায় তিনি পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ আসার পর সব ঘটনা শুনে বাড়িওয়ালাকে অনুরোধ করেন, রাতটুকু যেন তাদের থাকতে দেওয়া হয়। কিন্তু থাকতে দেননি বাড়িওয়ালা।’
কুলসুম বেগমের অভিযোগ, ‘বাসায় উঠতে না পেরে দুই মাসের বাচ্চাকে নিয়ে বাইরে ছিলাম। পরে থানায় অভিযোগ দিই। আমি আমার এক আত্মীয়ের বাসায় যাই। পরে র্যাব গতকাল আবার ওই বাসায় উঠিয়ে দিয়ে গেছেন।’
কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বাড়িওয়ালা ওই নারীকে বারবার অনুরোধ করেছিলাম, রাতটুকু অন্তত সেলিমদের থাকতে দেন। সকালে বিষয়টি সুরাহা করা হবে। কিন্তু ভাড়াটিয়াদের আর তিনি বাসায় ঢুকতে দেননি। পরে বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন ভাড়াটিয়া সেলিম।’
-কেএম