অর্থনীতিঃ
সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতিতে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলো কর্মীদের বেতন ভাতা কমানোর চিন্তা করায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানদের সংগঠন তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
প্রতিবাদের হুবহু তুলে ধরা হল-
সুতীব্র প্রতিবাদ
করোনা মহামারীর এই মহা দুর্যোগে রাষ্ট্রের প্রতিটি মানুষের ন্যায় সর্বস্তরের ব্যাংকারগণও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ! তাই বিএবির কোন এখতিয়ার বা অধিকার নেই দেশের কয়েক লক্ষ ব্যাংক কর্মকর্তার কষ্টার্জিত বেতন কমানো নিয়ে কথা বলার !!
সাধুবাদ জানাই সর্বজন শ্রদ্ধেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ স্যারকে কেননা তিনিও বিএবির এই অপতৎপরতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তাঁর ভাষায়, “এ ধরনের চিঠি ব্যাংকগুলোর কাজে হস্তক্ষেপের শামিল। বিএবি কোনো অবস্থাতেই তা দিতে পারে না।”
“বিএবি হচ্ছে ব্যাংকের চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানদের সংগঠন। কোনো ব্যাংকের যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র ওই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের। বিএবি পরিচালনা পর্ষদকে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে কোনো অবস্থাতেই চাপিয়ে দিতে পারে না।”
“ব্যাংক কোম্পানি আইনের ক্ষমতাবলে এখনই বাংলাদেশ ব্যাংকের এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা উচিৎ। দ্রুত করা উচিৎ। “বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখার কোনো কারণ নেই। একটি সংগঠন থেকে বেতন কমানোর উস্কানি দেওয়ার সাহস তারা কোথা থেকে পায়, সরকারকেও সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।”
“আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, একটি ব্যাংকের ৯০ শতাংশ টাকার মালিক কিন্তু আমানতকারীরা। উদ্যোক্তা মালিকদের অংশ মাত্র ১০ শতাংশ। ১০ শতাংশের মালিক যারা, তারা এমন স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত কোনো অবস্থাতেই নিতে পারেন না।”
দেশের এই ক্রান্তিকালে যখন প্রায় অধিকাংশ শ্রেণীপেশার মানুষগুলো ঘরে বসে মাইনে পাচ্ছেন, দেশের প্রায় প্রতিটি ব্যাংককে খোলা রেখে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির চাকাকে সচল করতে ব্যাংকারগণ জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে অহর্নিশ তাঁদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে তৎপর! কই সে বিষয়ে তো এবিবি কোন শব্দটিও উচ্চারণ করে নাই!!! করোনা আক্রান্ত্রের এই চতুর্থ স্তরে (কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের সময়কালে) দেশে আক্রান্তের সর্বোচ্চ ঝুকিতে আছেন ব্যাংকারগণ, তা বোধ করি যে কোন বিবেকবোধ সম্পন্ন প্রতিটি মানুষই আজ বুঝতে পারেন! কেননা, সাধারণ মানুষ ইচ্ছে করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে ঘেসতে যাবার কথা নয়, অসুস্থ না হলে ডাক্তারের কাছেও যাবে না! কিন্তু উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত লোকজন নিয়মিত ব্যাংকে আসছেন এবং সদর্পে তাঁদের সেবা প্রদানে ব্যাংকারদেরকে বাধ্য করছেন (কেননা আমরা তো সেবা দানে বাধ্য… চাহিবা মাত্র……. বাধ্য থাকিবে) !
পরিশেষে সেবা আমরা দিচ্ছি দিব, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দিয়ে যাবো! একেতো বেতনের অনেকাংশ আজ ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপাদান, স্যানিটাইজার ইত্যাদি ইত্যাদি কিনতে খরচ হয়/হচ্ছে, তাই কোন ব্যাংকই যেন তাঁদের ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বেতন না কমান! সম্ভব হলে আর্মি / পুলিশ বা অন্যান্যদের ন্যয় ঝুঁকিভাতা প্রদানের দাবী করছি।
ভাল থাকুক সকল ব্যাংকার তবেই না ভালো থাকবে প্রাণের ব্যাংক!!