কূটনৈতিক সংবাদঃ
করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহতার আশঙ্কায় এবার ঢাকা ছেড়ে গেলেন ইউরোপের ১৫ দেশের ১২৪ নাগরিক। শুক্রবার মধ্যাহ্নে জার্মান সরকারের ভাড়া করা একটি বিশেষ ফ্লাইটে তারা ঢাকা ত্যাগ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, পশ্চিম ইউরোপ তথা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১১০ জন এবং পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের ১৪ জন নাগরিক ফ্রাঙ্কফুর্টের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ওই বিমানে চড়েছেন।
ব্যাংকক হয়ে ঢাকা আসা জার্মানীর ওই ফ্লাইটে আরও প্রায় দুই শতাধিক যাত্রী ছিলেন জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকক আসা ইউরোপগামী ওইযাত্রীদের আমরা ঢাকায় বিমান থেকে নামতে দেয়নি। ঢাকার যাত্রীদের বোর্ডিং প্রক্রিয়ার পুরোটা সময় তারা ফ্লাইটের ভেতরেই অপেক্ষমাণ ছিলেন।
এদিকে ঢাকাস্থ জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফাহরেনহোলজ জার্মান স্পেশাল ফ্লাইট ও বিমানবন্দরে বোর্ডিং প্রক্রিয়ার ডজন খানেক ছবি পোস্ট করে পৃথক ৪টি টুইট বার্তায় আপডেট প্রচার করেন। সেখানে তিনি জানান, জার্মানীসহ ইউরোপের ১৫ টি দেশের নাগরিক জার্মান সরকারের ভাড়া করা বিমানে ঢাকা ছেড়ে গেছেন। তবে তিনি (রাষ্ট্রদূত পিটার) ঢাকায় থাকছেন। জার্মান দূতাবাস টিম এবং ইইউ ডেলিগেশন কার্যালয়ের টিম যৌথভাবে ফ্লাইট ব্যবস্থাপনায় যুক্ত ছিলো।
বেশ সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশের সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থা। এ তিনি দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিংক টুইট বার্তায় বিমানবন্দরে তার টিমের সঙ্গে তোলা একটি ছবি প্রচার করে লিখেন- ইইউ ডেলিগেশন জার্মান দূতাবাসের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করছে। আমাদের ১১০ জন নাগরিক ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন। চার্টার্ড ফ্লাইটটি পরিচালনা এবং অন্য কাজে আন্তরিক সহযোগিতার জন্য আমরা এয়ারপোর্ট অ্যান্ড ইমিগ্রেশন অথরিটির প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য ইইউ কার্যালয়ের ৯ কর্মকর্তা (যারা থাই এয়ারের ঢাকা ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেতে পারছিলেন না) ফিরেছেন কি-না বা অন্য ইউরোপীয় কূটনীতিকরা ওই স্পেশাল ফ্লাইটে গেছেন কি-না? তাতক্ষনিক তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্তায় নাগরিকদের বিষয়ে বলা হলেও কূটনীতিকদের বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। সেগুনবাগিচার করোনা সেলের ওই বার্তায় এটা স্পষ্ট যে, পূর্ব ও পশ্চিম ইউরোপ মিলে যে ১২৪ জন ঢাকা ছেড়ে গেছেন তাদের মধ্যে বেশ ক’জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতও গেছেন, যারা এখানে বেড়াতে এসে আটকা পড়েছিলেন। তবে ফ্লাইটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ইউরোপীয়ান গেছেন, যারা বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। করোনার ভয়াবহতা ঠেকাতে ওই প্রকল্পগুলোর কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তারা দ্রুত ঢাকায় ফিরবেন বলেও মন্ত্রণালয়ের বার্তায় আশা করা হয়।
উল্লেখ্য,ইউরোপের নাগরিকদের বিদায় জানাতে ইইউ রাষ্ট্রদূত, জার্মান রাষ্ট্রদূতসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
-ডিকে