আন্তর্জাতিকঃ
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিশ্বের অন্যতম ধনী বিল গেটস দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দিলেন।
বিল ও মেলিন্ডার দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই কাজ করছে।
আশির দশকের শেষ দিকে মেলিন্ডা যখন বিল গেটসের প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটে যোগ দেন, তখন থেকে তাঁদের পরিচয়। তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে।
মাইক্রোসফটে গড়ে তোলা ভাগ্য এখন আলাদা হয়ে যাচ্ছে। আলাদা হয়ে যাচ্ছেন বিল ও মেলিন্ডা গেটস। যে মাইক্রোসফট দিয়ে মোটে ৩১ বছর বয়সে বিল গেটস হয়েছিলেন বিশ্বের কনিষ্ঠতম বিলিয়নিয়ার। যে অর্থ নিজের কাছে না রেখে, সন্তানদের মধ্যে বাটোয়ারা না করে স্রেফ পরের তরে বিলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন বিল গেটস। কিন্তু সে ওয়াদা পূরণের আগেই বিচ্ছেদে যাচ্ছেন বিল ও মেলিন্ডা।
২০১৯ সালে অ্যামাজন জায়ান্ট বেজোস দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদের পর আরেকটি বৃহৎ বিবাহ বিচ্ছেদ দেখতে যাচ্ছে টেক ওয়ার্ল্ড।
“দীর্ঘ চিন্তা-ভাবনা করে, সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে অনেক কাজ করে, আমরা আমাদের বৈবাহিক জীবনের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েঁছি।” বিল ও মেলিন্ডা গেটস টুইটারে তাদের একটি পোস্টে ঠিক এভাবেই বলেছেন।
ফোরবসের দেওয়া তথ্য মতে বিল ও মেলিন্ডা গেটসের সম্পদের পরিমান এখন ১৩০ বিলিয়ন ডলার। ১৯৯৪ সালে তাদের বিয়ে হয়।
জেফ বেজোস ও তার স্ত্রী ম্যাকেনজির মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে ২০১৯ এর মাঝামাঝি সময়ে।
১৩০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে গেটস দম্পতি ছিলেন চতূর্থ সর্বোচ্চ ধনী দম্পতি। বেজোস দম্পতি, এলোন মাস্ক ও ফরাসী ধনকুবের বার্নার্ড অর্নাল্ট রয়েছেন তাদের চেয়ে এগিয়ে।
২০১৯ এর জুলাইয়ে বেজোসরা আলাদা হলে অ্যামাজন স্টকের ৩৮.৩ বিলিয়ন ডলার চলে যায় ম্যাকেনজির হাতে। তাতে তিনি হয়ে উঠেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী।
গেটসদের মতো তারাও ছিলেন আড়াই দশকের দম্পতি। বেজোসরা একসঙ্গে ঘর করেছেন ২৫ বছর। আর গেটসরা করছেন ২৭ বছর ধরে।
ম্যাকেনজি বেজোসও অ্যামাজনের গোড়ার দিকে কোম্পানিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। মাইক্রোসফটে মেলিন্ডা গেটসেরও ছিলো উচ্চ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
গেটস দম্পতির তিন সন্তান- জেনিফার ২৫, ফোবে ১৮ এবং রোরি ২১। ওয়াশিংটন রাজ্যের সিয়াটলের কাছে তাদের মূল বসতবাড়ি।
১৯৮৭ সালে মাইক্রোসফটে কাজ করতে এসে বিল গেটসের সঙ্গে পরিচয় হয় মেলিন্ডা গেটসের। পরে ১৯৯৪ সালের ১ জানুয়ারি তারা বিয়ে করেন।
টুইটে তারা আরও লিখেছেন, তাদের “গড়ে তোলা ফাউন্ডেশন সারা বিশ্বে কাজ করছে এবং মানুষকে স্বাস্থ্যকর ও উৎপাদনশীল জীবন দিতে সহায়তব করে যাচ্ছে” কিন্তু তারা আর মনে করেন না যে, “জীবনের পরবর্তী সময়টি আর দম্পতি হিসেবে একসঙ্গে থাকতে পারছেন।”
এই বিচ্ছেদের ফলে গেটস দম্পতির অর্জিত অর্থ নিয়ে বড় প্রশ্ন সামনে এসেছে। এখনো তারা তাদের সম্পদের অনেকটাই গেটস ফাউন্ডেশনে দান করেননি। দ্য গেটস ফাউন্ডেশন বিশ্বের অন্যতম প্রধান একটি ফিলানথ্রোপিক সংস্থা। এটি যেহেতু একটি পারিবারিক ফাউন্ডেশন এবং গেটসরা বিয়ে বিচ্ছেদে যাচ্ছেন, তাতে গোটা বিশ্বেই এই ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে চলা উদ্যোগ ও কাজগুলো ঝামেলায় পড়তে পারে, এমনটা মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।