বিনোদনঃ
প্রখ্যাত ও গুনী অভিনেতা এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্য ব্যক্তিত্ব আলী যাকের আর নেই।
২৭ নভেম্বর, শুক্রবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। দীর্ঘ চার বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি।
আলী যাকেরের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তার ছেলে ইরেশ যাকের সামাজিক যোগাযোগমধ্যেম ফেসবুকে এই তথ্য জানান।
ওই পোস্টে ইরেশ যাকের লিখেছেন, ‘চার বছর ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধের পর বাবা আজকে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে চলে গেলো। উনি যেই দোয়া এবং ভালোবাসা পেয়েছেন তার জন্য আমরা হৃদয়ের গভীর থেকে কৃতজ্ঞ। মৃত্যুর দুই দিন আগে বাবার করোনা শনাক্ত হয়। বাবার জানাজার নামাজ আজ বাদ আসর বনানী গোরস্থান মসজিদে পড়া হবে।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ জানান, শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আলী যাকেরের মরদেহ আজ বেলা ১১টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নেয়া হবে।
ছোট পর্দায় অভিনয়ের পাশাপাশি মঞ্চেও দাপুটের সঙ্গে কাজ করেছেন আলী যাকের। মঞ্চে নুরুলদীন, গ্যালিলিও ও দেওয়ান গাজীর চরিত্রে অভিনয় করে জয় করেছেন দর্শক হৃদয়। এছাড়াও ‘অচলায়তন’, ‘বাকী ইতিহাস’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘তৈল সংকট’, ‘এই নিষিদ্ধ পল্লীতে’, ‘কোপেনিকের ক্যাপ্টেন’সহ বেশ কয়েকটি মঞ্চ নাটকের নির্দেশনা করেছেন তিনি।
এছাড়াও ‘আজ রবিবার’, ‘বহুব্রীহি’, ‘তথাপি’র মতো দর্শকপ্রিয় টিভি নাটকেও অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন আলী যাকের। বেতারে ৫০টির বেশি নাটক করেছেন। বেশকিছু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি। টেলিভিশনের জন্য মৌলিক নাটকও লিখেছেন তিনি। তার প্রকাশিত বই- ‘সেই অরুণোদয় থেকে’, ‘নির্মল জ্যোতির জয়’।
আরণ্যক নাট্যদলের ‘কবর’ নাটকে ১৯৭২ সালে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে পথচলা শুরু করেন আলী যাকের। ১৯৭৩ সালে যোগ দেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে। মৃত্যুর আগমুহূর্ত এই নাট্যদলেরই সদস্য ছিলেন তিনি। নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন তিনি।
আলী যাকের একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। ছিলনে বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি গ্রুপের চেয়ারম্যান। তার স্ত্রী অভিনয়শিল্পী সারা যাকের, ছেলে অভিনেতা ইরেশ যাকের ও মেয়ে শ্রেয়া সর্বজয়া।
-কেএম