রাজনীতিঃ
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকার সাধারণ ছুটি আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অর্থাৎ ৩১ মে থেকে সকল প্রকার কর্মক্ষেত্র খুলে যাবে এবং গণপরিবহনও চলবে। এই সিদ্ধান্তই একটি আতœঘাতী সিদ্ধান্ত। এরপর আবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বাস ভাড়া ৮০ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা বাংলাদেশের জনগণকে আর্থিক ও মানসিকভাবে ভয়াবহভাবে বিপর্যস্ত করবে।
তিনি বলেন, শাসকগোষ্ঠী জনগণের প্রতি নূন্যতম দায়িত্ববোধের পরিচয় দিচ্ছে না। বর্তমানে দেশে রেকর্ড সংখ্যক নতুন রোগী সনাক্ত হচ্ছে, সংক্রমণের হার দ্রুতবেগে বাড়ছে। কোভিড হাসপাতালগুলো ইতিমধ্যেই তার সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছে। কোন নতুন কোভিড রোগীকে তারা জায়গা দিতে পারছে না। এই অবস্থায় হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানো হলো না, সংক্রমণের হার নিম্নগামী হলো
না, নতুন যে ধরনের জীবনপ্রণালীতে মানুষকে অভ্যস্ত হতে হবে সে ব্যাপারে তাদের অভ্যস্ত করা হলো না- কিন্তু লকডাউন তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
লকডাউন তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর পরই সারাদেশের মানুষ কর্মক্ষেেেত্র যোগদানের জন্য বাড়ি থেকে রওনা দিচ্ছে। সেখানে মানুষের গাদাগাদি ভীড় দেখা যাচ্ছে। এই মানুষদের দীর্ঘদিন ধরে কাজ নেই। বেতন নেই। ফলে ভয়াবহ আর্থিক সংকটে আছে। এরপর আবার ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যত এই মানুষদের চরম সংকট ক্সতরি করবে। যেখানে সরকারের দায়িত্ব ছিল সাধারণ মানুষের সমস্ত ধরনের দায়িত্ব নেয়া, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা । সেখানে জনগণের উপরে ভাড়া বৃদ্ধির বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই
গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে না দিলে লকডাউন কার্যকর হয় না। তখন বাঁচার তাগিদেই মানুষকে বের হতে হয়।
সরকার এসব কোন ব্যবস্থাই নেননি। হাসপাতাল প্রস্তুতি, মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছানো, দরিদ্র-নিম্নবিত্ত মানুষকে আর্থিক সহযোগিতা কিছুই সরকার করেননি। বরং পিপিই নিয়ে, মাস্ক নিয়ে দুর্নীতি করেছেন-ফলশ্রুতিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন। এই সংকটের সময়েও ত্রাণের টাকা ও চাল চুরি করেছে সরকারদলীয় জনপ্রতিনিধিরা। সরকার বলছেন অর্থনীতিতে গতি ফিরিয়ে আনতে, সবাইকে নিয়ে বাঁচতে তারা লকডাউন তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তাদের ভাষ্য শুনলে মনে হয় যেন এ ছাড়া তাদের
আর কোন উপায় ছিল না। বাস্তব অবস্থা তা নয়। দেশের এই সক্ষমতা ছিল। কিন্তু তারা পুঁজিপতিদের স্বার্থে কারখানা খুলে দিয়েছেন অনেক আগে, এখন জনগণের কোনো দায়িত্ব নিবেন না বলেই লকডাঊন তুলে দিচ্ছেন। সকল দায়িত্ব নিজের উপর থেকে সরিয়ে জনগণের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে সরকার। স্লোগান তুলছে, “আপনার সুরক্ষা, আপনার হাতে”। জনগণকে নিয়ে তারা একটা রীতিমত তামাশা করেছেন এবং এখন সব দায়িত্ব জনগণের উপর ছেড়ে দিয়ে সবকিছু খুলে দিচ্ছেন এবং বলছেন এটা তারা জনগণের স্বার্থেই
করছেন।
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী অবিলম্বে সরকারকে বাসভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। এবং সকল মানুষের খাদ্যের নিশ্চয়তাসহ লকডাউন কার্যকর করার দাবি জানান।
-শিশির