বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে

অনলাইনঃ
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছে, ৪৫টি দেশ নিয়ে গঠিত এশিয়া প্যাসিফিক অর্থনীতিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা এশীয় উন্নয়ন আউটলুকে এডিবি বলেছে, ২০১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে যা ১৯৭৪ সালের পর সবচেয়ে দ্রুত সম্প্রসারণ।

বাংলাদেশে এডিবি’র আবাসিক পরিচালক মনমোহন পরকাশ আজ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে শেখ হাসিনার কাছে এশীয় উন্নয়ন আউটলুক (এডিও) হস্তান্তর করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

এডিবি তাদের এডিও’তে আভাস দিয়েছে যে, বাংলাদেশ ২০১৯ ও ২০২০ অর্থবছরে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে, যা হবে একটি নতুন রেকর্ড।

এডিও’তে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ এশীয় প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্রুততম প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত রাখবে।’

এডিবি’র বার্ষিক প্রকাশনা এডিও এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ৪৫টি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা- মূল্যায়ন ও পূর্বাভাস দিয়ে থাকে।

এতে বলা হয়, এশিয়ার অধিকাংশ দেশের প্রবৃদ্ধি হবে মাঝারি। ২০১৯ সালে এটি হবে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২০১৭ সালে ছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ ও ২০০৮ সালে ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ।

তবে দক্ষিণ এশিয়া শ্লথ প্রবৃদ্ধির প্রবণতা কাটিয়ে ২০১৯ সালে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ ও ২০২০ সালে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।

এডিও’তে বলা হয়, এই প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামকগুলো হচ্ছে : শক্তিশালী নেতৃত্ব, সুশাসন, স্থিতিশীল সরকার ও অব্যাহত রাজনৈতিক শান্তিপূর্ণ অবস্থা, সুষ্ঠু সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিমালা ও সঠিক উন্নয়ন অগ্রাধিকার।

এতে উচ্চ সরকারি বিনিয়োগ, জোরালো ভোগ চাহিদা, বিনিয়োগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, উন্নত বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বেসরকারি খাতের ঋণের ক্ষেত্রে উচ্চ প্রবৃদ্ধিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এডিও’তে উল্লেখ করা হয়, বৈশ্বিক দুর্বল প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও বাংলাদেশে অনুকূল বাণিজ্য সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, রফতানি ও রেমিটেন্স আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়, অব্যাহত নীতি পরিবেশের কারণে জোরালো সরকারি বিনিয়োগ এবং দ্রুত বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং আওতা বৃদ্ধিসহ উচ্চ কর সংগ্রহ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নেবে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সংস্কার উচ্চ বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে, যা প্রবৃদ্ধির সহায়ক হবে।

শেখ হাসিনা এডিবি’র আবাসিক পরিচালককে বলেন, তাঁর সরকার একটি সুপরিকল্পিত উপায়ে দেশের অর্থনীতিকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ‘আমরা এ বছরও বাজেট প্রণয়নের আগে আমাদের বিশ্লেষণ করেছি।’

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে ছিল তখনও তাঁর দল দেশের স্বার্থে বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সামগ্রিকভাবে দেশকে উন্নত করার এবং ধনী-গরিব ও গ্রাম-শহরের ব্যবধান হ্রাস করার স্বপ্ন ছিল। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে, যেখানে সারা বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা তাদের শিল্পকারখানা স্থাপন করতে পারবে।

মনমোহন পরকাশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সরকারের সকল উন্নয়ন কর্মসূচি জনমুখী।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার এসময় উপস্থিত ছিলেন।
-বাসস

FacebookTwitter