ফুলবাড়ীতে মাদ্রাসা সুপারের শাস্তি চায় শিক্ষার্থীরা

ফুলবাড়ীতে মাদ্রাসা সুপারের শাস্তি চায় শিক্ষার্থীরা
ফুলবাড়ীতে মাদ্রাসা সুপারের শাস্তি চায় শিক্ষার্থীরা

অমর চাঁদ গুপ্ত অপু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েবাড়ী দাখিল মাদ্রাসার সুপার ইমামুল হকের অপসারণসহ শাস্তির দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।

গতকাল সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১ টায় মাদ্রাসার সম্মুখ সড়কে মাদ্রাসা সুপার ইমামুল হকের বিরুদ্ধে অনিয়মন, দুর্নীতি, ছাত্রী ও নারী শিক্ষিকাদের অনৈতিক কাজের কুপ্রস্তাব দেয়াসহ শ্লীলতাহানীর অভিযোগে তার অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী মোছা. সুমাইয়া, আরভী আক্তার নূপুর, ইসমাত মুনহাতা মিথি, আশা মনি, রতনা আক্তার, ফাতেমা আক্তার, মো. শাওন, সজিব ইসলাম, অভিভাবক অভিভাবক রাবেয়া আক্তার, আফরুজা বেগম, ফারজানা বেগম প্রমুখ।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্রীরা বলেন, মাদ্রাসার সুপার ইমামুল হক ছাত্রীদেও কুপ্রস্তাবসহ শ্লীলতাহানি করে থাকছেন। ছাত্রীদেরই নয়, নারী শিক্ষিকা ও আয়াকেও কুপ্রস্তাবসহ উত্যক্ত করাসহ সময় ও সুযোগ বুঝে জড়িয়ে ধরেন। এমন দুশ্চরিত্র মাদ্রাসা সুপারকে মাদ্রাসা থেকে অপসারণসহ তাকে শাস্তির আওতায় আনা না হলে মাদ্রাসার সকল ছাত্রী একযোগে মাদ্রাসা ত্যাগ করবে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ছাত্রীর অভিভাবক রাবেয়া আক্তার, আফরুজা বেগম ও ফারজানা বেগম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি এমন লম্পট মানুষ সুপার পদে বহাল থাকেন তবে আমরা আমাদের মেয়েদেরকে মাদ্রাসায় পাঠাবো কার ভরসায়? সুপারকে মাদ্রাসা থেকে অপসারণ করা না হলে মেয়েদেরকে মাদ্রাসা থেকে বের করে অন্যত্র ভর্তি করতে বাধ্য হবেন। কারণ মাদ্রাসা সুপারের কাছে কোনো মেয়েই সুরক্ষিত নয়।

মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী মাদ্রাসার আয়া দুলালী আরা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে মাদ্রাসা সুপার ইমামুল হক তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছেন।

এরই মধ্যে গত ৩ অক্টোবর তারিখে তার বকেয়া দুই মাসের বেতন চাইতে গেলে, সুপার তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ জুতা দিয়ে মারতে তেড়িয়ে আসেন।

বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার ইমামুল হকের ০১৭১৮ ৬৭৬২৫৮ নম্বরের মুঠোফোনে ফোনকল দেওয়া হলে তার মুঠোফোনের সুইচ অফ পাওয়া যায়। পরে তার বাড়ীতে গিয়েও তাকে না পাওয়ায় এ বিষয়ে তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি লাবু মন্ডল বলেন, মাদ্রাসা সুপারকে পৃথক দুইটি শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাবও দিয়েছেন।

কিন্তু শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবারো শোকজ নোটিশ পাঠানো হবে। তবে ঘটনার পর থেকে সুপার মাদ্রাসায় না আসায় সহ-সুপার সাইফুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দিয়ে মাদ্রাসা চালাতে হচ্ছে।

খয়েরবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, অভিযোগে প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সুপারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। #

-শিশির

FacebookTwitter