সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ প্রধান তিন আসামিকে নিয়ে টেকনাফের সেই চেকপোস্টে গেছে র্যাব।
২১ আগস্ট, শুক্রবার দুপুর ১টার পরে র্যাব-১৫ কার্যালয় থেকে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে এপিবিএনের ওই চেকপোস্টে নেয়া হয়।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, তদন্তের অংশ হিসেবে মামলার প্রধান আসামি টেকনাফ থানার রবখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাস,বাহারছড়ার শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে ঘটনাস্থলে নেয়া হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদের দেখতে ভিড় করেন।
এর আগে ওই চেকপোস্টে ঘুরে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘মেজর সিনহাকে গুলি বর্ষণের পুরো ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যে। এই দুই মিনিটের প্রতিটি সেকেন্ডের ঘটনাপ্রবাহ আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করছি। প্রতিটি সেকেন্ডই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনার অনেক তথ্য-উপাত্ত আমরা সংগ্রহ করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘তদন্তকাজটি এমনভাবে সম্পন্ন করা হবে, যাতে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোনো দোষী ব্যক্তি রক্ষা না পায় এবং কোনো নিরীহ লোক কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ঘটনাটি যে দুই মিনিটের মধ্যে ঘটেছে, এর প্রত্যেকটি সেকেন্ড আমরা গভীরভাবে অ্যানালাইসিস করছি।’
এ সময় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ, র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম, র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক আজিম আহমেদ এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের সিনিয়র এএসপি খায়রুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। তিনি সহকর্মীদের নিয়ে ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিওচিত্র ধারণ করতে সেখানে গিয়েছিলেন। টেকনাফের মারিষবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ শেষে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফিরছিলেন তিনি। শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে তাকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়। টেকনাফ থানায় দায়ের করা মামলায় সরকারি কাজে বাধা ও গুলিতে নিহত হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। এতে সিনহার সহযোগী সিফাতকেও আসামি করা হয়।
অপরদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মামলায় ভিডিওচিত্রটির পরিচালক শিপ্রা দেবনাথকে আসামি করা হয়। তারা দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন।
পরবর্তীতে ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এদের মধ্যে বরখাস্তকৃত টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিত ৭ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। বর্তমানে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব র্যাবকে দেয়া হয়েছে।
-কেএম