অর্থনীতিঃ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল বারকাতের বিরুদ্ধে দেশের শীর্ষ দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোয় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সে সংবাদের কিছু অংশে অধ্যাপক আবুল বারকাতের নামি জড়িয়ে ভূল তথ্য পরিবেশন করায় উক্ত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অধ্যাপক আবুল বারকাত। প্রতিবাদে তাঁর বক্তব্য নিম্নরুপ:
২৯ জুলাই ২০২০ তারিখে প্রথম আলো পত্রিকার দশম পৃষ্ঠায় “হঠাৎ করেই জনতার চেয়ারম্যান বদল: রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক” শিরোনামের খবরটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
খবরটির তৃতীয় প্যারার প্রথম দুটি বাক্যে আমার নাম জড়িয়ে লেখা হয়েছে “জানা গেছে, অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ জালিয়াতির কারণে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় জনতা ব্যাংক। অধ্যাপক আবুল বারকাত চেয়ারম্যান থাকাকালীন দেওয়া ঋণে এই দুই প্রতিষ্ঠানের কাছে আটকে গেছে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা”।
১. আমি ২০০৯ সেপ্টেম্বর-২০১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে পাঁচ বছর জনতা ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করি।
২. ব্যাংকের বোর্ড (পর্ষদ) এবং ব্যাংকের ম্যানেজমেন্ট (ব্যবস্থাপনা)-এ দু’য়ের দায়িত্ব এক নয়। পর্যদের দায়িত্ব ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক প্রেরিত, একাধিক ক্রেডিট কমিটি কর্তৃক মূল্যায়িত, সুপারিশকৃত, স্বাক্ষরিত এবং ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কর্তৃক স্বাক্ষরিত ও সুপারিশকৃত এবং মেমো আকারে উত্থাপিত ঋণ ও অগ্রীম (খড়ধহং ধহফ ধফাধহপবং) প্রস্তাবসমূহ পর্ষদে বিস্তারিত আলোচনাপূর্বক অনুমোদন দেয়া অথবা অনুমোদন না দেয়া। পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে ব্যবস্থাপনা বা ম্যানেজমেন্টের।
৩. উল্লেখ্য যে আমি যে পাঁচ বছর ব্যাংকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছিলাম তখন বিভিন্ন সময়ে আমার পরিচালনা পর্ষদে যাদেরকে সম্মানীত পরিচালক হিসেবে পেয়েছিলাম তারা হলেন: জনাব এনামূল হক চৌধুরী (প্রাক্তন এমডি, সোনালী ব্যাংক), জনাব আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী (প্রাক্তন এমডি, কমার্স ব্যাংক লি.), জনাব ফজলে কবির (বর্তমান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর), জনাব দবির উদ্দিন আহমেদ (প্রাক্তন আমলা), জনাব আর এম দেবনাথ (ব্যাংকার, শিক্ষক ও কলাম লেখক), জনাব শাহজাহান কামাল (বর্তমান এমপি), ড. ফাহমিদা খাতুন (নির্বাহী পরিচালক, সিপিডি), জনাব পারভিন মাহমুদ (চাটার্ড একাউনটেন্ট), জনাব বলরাম পোদ্দার (ব্যবসায়ী), জনাব সানজিদা আহমেদ খান (বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা), ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ (চাটার্ড একাউনটেন্ট), জনাব নগিবুল ইসলাম (পরিচালক, এফবিসিসিআই), জনাব বি করিম (পুলিশের প্রাক্তন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা), জনাব আবু নাসের (পরিচালক, এফবিসিসিআই), এম কামরুল ইসলাম (চাটার্ড একাউনটেন্ট, বর্তমান পর্ষদ-পরিচালক, সোনালী ব্যাংক), জনাব এস এম মঈন উদ্দিন আহমেদ (ব্যবসায়ী), জনাব মাহবুবুর রহমান হিরণ (ব্যবসায়ী), অধ্যাপক ডা. রউফ সর্দার (চিকিৎসক), জনাব এমদাদুল হক (প্রাক্তন আমলা), জনাব নজিবুর রহমান (ব্যবসায়ী), অধ্যাপক ড. নিতাই চন্দ্র নাগ (অধ্যাপক, অর্থনীতি, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়)।
৪. আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে আমার জানামতে অ্যাননটেক্স বা ক্রিসেন্ট গ্রুপ নামক কোনো প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেয়া হয়নি। সুতরাং আমার চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে দেয়া ঋণে ‘এই দুই প্রতিষ্ঠানের কাছে আটকে গেছে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা’ এ সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
৫. উল্লেখিত সংবাদটি যেহেতু সমাজের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমার সামাজিক মর্যাদা, নিষ্ঠা, সততা, সুনাম ক্ষুন্ন করে সেহেতু এ মিথ্যা সংবাদের আমি তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করছি।
৬. সার্বিক ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
-শিশির