নাসার গ্লোবাল জাজমেন্টে বাংলাদেশের ১৭ প্রজেক্ট

নাসার গ্লোবাল জাজমেন্টে বাংলাদেশের ১৭ প্রজেক্ট
নাসার গ্লোবাল জাজমেন্টে বাংলাদেশের ১৭ প্রজেক্ট

বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তিঃ

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা নাসা সম্প্রতি তাদের ওয়েবসাইটে “নাসা স্পেস অ্যাপস প্রতিযেগিতার” প্রাথমিকভাবে মনোনীত প্রজেক্টের তালিকা প্রকাশ করেছে। বিশ্বের ১৫০ দেশের ৪১৩টি প্রজেক্টের মধ্যে বাংলাদেশের ১৭টি প্রজেক্ট প্র্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়েছে। ৬ষ্ঠ বারের মতো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর তত্ত্বাবধানে “নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২০” বাংলাদেশ পর্বের বিজয়ী ও রানার্স আপ দলের ১৭ টি প্রজেক্ট জমা দেয় বেসিস, যার প্রতিটি প্রজেক্ট-ই নাসার গ্লোবাল জাজমেন্টের প্রাথমিক স্বীকৃতি পেয়েছে।

নাসার গ্লোবাল প্রতিযোগিতায় ২০২০-এ বিশ্বের ১৫০ দেশ থেকে ৩ হাজার ৮ শত টিমের মধ্য থেকে ২ হাজার ৩শ’র অধিক প্রজেক্ট জমা পড়ে। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে ৪১৩ টিমকে নাসা গ্লোবাল জাজমেন্টের মনোনয়ন দেয়। প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, ডিজাইনার, আর্টিস্ট, শিক্ষাবিদ, উদ্যোক্তাসহ সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করাই লক্ষ্যেই এই প্রতিযোগিতা শুরু করেছে নাসা। আর এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে বেসিস বাংলাদেশের ৯টি শহরে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২০ বাংলাদেশ নামে বড় পরিসরে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সেখান থেকে প্রতিযোগিতায়  বিজয়ী ও রানার্স আপ দলের  ১৭টি প্রজেক্ট নাসায় জমা দেয় বেসিস। যার ১৭ টি প্রজেক্ট-ই নাসার প্রাথমিক মনোনয়নে স্থান পেয়েছে। এদিকে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে এবার ৫০ লাখ শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত করার পাশাপাশি ১ লাখ শিক্ষার্থীদের সরাসরি এ প্রতিযোগিতায় যুক্ত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। “নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২০”এ সহযোগি প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে সিএসএ, সিএনইএস, জেএএক্সএ ও ইএসএ।

বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতে, গার্মেন্টস খাতের বিকল্প এক্সপোর্টের খাত তৈরি করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের আইটি কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানসমূহ দক্ষতার সাথে কোয়ালিটি সম্পন্ন কাজ করছে “নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২০এ” বাংলাদেশের ১৭টি প্রজেক্ট প্র্রাথমিকভাবে মনোনীত হওয়া তারই প্রমান। সরকারের ২০২৫ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বেসিস সত্রিুয়ভাবে সচেতনতার সাথে কাজ করছে। বাংলাদেশের সরকার ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতি আমাদের আহবান, আইটি কাজে কেবলমাত্র বিদেশী প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর না করে, দেশীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর নির্ভর করা এখন সময়ের দাবি”।

বেসিসের পরিচালক ও নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২০ এর আহ্বায়ক দিদারুল আলম সানি বলেন, “প্রতিবারের মতো এবারো বেসিস এর তত্ত্বাবধানে নাসাতে আমাদের দেশের ১৭ টি প্রজেক্ট জমা দিয়েছিলাম। যার প্রতিটি প্রজেক্ট-ই এ বছর নাসার গ্লোবাল জাজমেন্টের মনোনয়নে স্বীকৃতি পেয়েছে, যা আমাদের দেশের জন্য খুবই আনন্দের। এছাড়া আমাদের দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তার প্রমাণও বলা যেতে পারে এটি। আমরা আশা করছি ২০১৮ সালের মতো এবছরও আমার নাসা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ান হতে পারবো”।

নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ এর উপদেষ্টা আরিফুল হাসান অপু বলেন, “নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২০এর গ্লোবাল জাজমেন্টে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ শতভাগ মনোনয়ন পেয়েছে। এটি আমাদের জন্য গৌরবের, আমরা বিশ্বাস ও প্রত্যাশা করি সাফল্যের এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং আশা করছি এবারও চ্যাম্পিয়ান হবো।”

উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন টিম পৃথিবী এবং মহাকাশে বাস্তব-বিশ্বের সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য নাসার উন্মুক্ত ডেটা নিয়ে কাজ করছে। প্রতি বছরের নির্দিষ্ট সময়ে নাসার গ্লোবাল অর্গানাইজিং টিমের সহায়তায় বিশ্বজুড়ে শত শত রিজিওনাল শীর্ষস্থানীয়রা ইভেন্টের আয়োজন করে। যেখানে অংশগ্রহণকারীরা নাসার প্রস্তাবিত চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধান করে গেমস, স্মার্টফোন এবং কম্পিউটার অ্যাপস, ভিডিও, শিক্ষাদানের সরঞ্জামসহ আরো অনেক কিছু তৈরি করে। তার প্রেক্ষিতে গত ৪ অক্টোবর ভার্চুয়ালি নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ- ২০২০ বাংলাদেশ সাফল্যের সাথে শেষ হয়। ভার্চুয়ালি ৪৮ ঘণ্টা টানা হ্যাকাথনের পর যাচাই পর্যবেক্ষণ শেষে ৬০টি প্রকল্প থেকে শীর্ষ ১৭ টি প্রজেক্ট নির্বাচিত করা হয়, সেই ১৭ প্রজেক্ট পরবর্তীতে নাসাতে পাঠানো হয়। এর আগে নাসা থেকে ২০১৮ সালে বেস্ট ডাটা ইউজার ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।

FacebookTwitter