দেবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান বরখাস্ত

অনলাইন ডেস্কঃ

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাসনাৎ জামান চৌধুরী জর্জকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করা, প্রশাসনিক কাজে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।

গত ৫ আগস্ট স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব আনজুমান আরা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জর্জকে বরখাস্ত করা হয়।

একই সঙ্গে উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ কে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় লোকজনকে উল্লাস করতে দেখা গেছে। তাঁরা একে অন্যকে মিষ্টিমুখ করান।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার অধীনে আয় বর্ধক দুটি ট্রেডের প্রশিক্ষণে বাছাই প্রক্রিয়ায় বাধা দেন দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাসনাৎ জামান চৌধুরী জর্জ।

এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেসকো বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতির আনন্দ শোভাযাত্রা উপলক্ষে প্রস্তুতি সভায় তিনি বিঘ্ন ঘটান। তাঁর কথা মতো না চলায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

পাশাপাশি ইউএনও পরিবারের সদস্যদেরও প্রায় আট ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে উপজেলা চেয়ারম্যান হাসনাৎ জামান চৌধুরী জর্জের লোকজন। এসব বিষয়ে প্রশাসনসহ সংশিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদ আইন (সংশোধিত) ২০১১ অনুযায়ী জর্জকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

একই সঙ্গে উপজেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান-১ ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পরিমল দে কে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ঘটনার বিবরনে স্থানীয়রা জানায়, উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা হাসনাৎ জামান চৌধুরী জর্জের বিরুদ্ধে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

অভিযোগ রয়েছে, তাঁর কথা মতো না চললে যেকোনো কর্মকর্তার সঙ্গে তিনি অশোভন আচরণসহ বিভিন্ন হয়রানি করেন। এসব কারণে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা ইচ্ছাকৃতভাবে বদলি নিতে বাধ্য হন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর দেবীগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে পৌর প্রশাসক ও তৎকালীন ইউএনও ফিরুজুল ইসলামসহ ছয় গণমাধ্যমকর্মীকে লাঞ্ছিত করে চেয়ারম্যানের লোকজন। এ সময় ইউএনওসহ ওই ছয় সাংবাদিককে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।

দেবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আসম নুরুজ্জামান বলেন, এটা দেবীগঞ্জ উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের জন্য একটি স্বস্তির সংবাদ। হাসনাৎ জামান চৌধুরী জর্জের বরখাস্তের খবরে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে আনন্দ উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে।

-আরবি

FacebookTwitter