অনলাইন রিপোর্টঃ
শোক দিবসের আলোচনা সভা শেষে ফেরার পথে প্রটোকল দেয়া নিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) বেলা ১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে শোক দিবস উপলক্ষে টিএসসি মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, ঢাবির টিএসসি মিলনায়তনে সমাবেশ শেষে জাহাঙ্গীর কবির নানকের সাথে কেন্দ্রীয় সভাপতি শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম বের হয়ে যান। এতে পিছনে পড়ে যান ঢাবি শাখার সভাপতি সঞ্জিত। এদিকে নানকের সাথে বাকিরা থাকায় তাদের অনুসারীদের উপস্থিতিতে সেখানে বিরাট জটলা বেধে যায়। এ জটলার কারণে সঞ্জিত টিএসসি থেকে বের হতে পারছিলেন না। বের হওয়ার সময় একুশে হলের একজনের সাথে ধাক্কা লাগায় সঞ্জিত তাকে থাপ্পড় দেয়।
নানক চলে যাওয়ার পরে সঞ্জিত শোভনকে বলেন, ‘‘আপনার ছেলেদের কোন ম্যানার শেখান নাই? তারা আমাকে বের হওয়ার জায়গা দেয় নাই কেন?’’ এসময় সূর্যসেন হলের আসলাম নাসক একজন তার প্রতিবাদ করে বলে, ‘‘কি ম্যানার শেখাতে হবে?’’ তখন সঞ্জিত আসলামকে মারধর করে। এরপরেই দুই গ্রুপে ঝামেলা শুরু হয়। প্রায় ১৫ মিনিটের মতো এ হাতাহাতি ও মারামারি চলে।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, টিএসসি প্রাঙ্গণে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়ায়। ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনকে দেখা গেছে। তবে, ছাত্রলীগের শীর্ষ এ চার নেতার কাউকেই হাতাহাতি থামাতে দেখা যায় নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘‘আমি আর শোভন ভাই কথা বলছিলাম। এসময় বাইরের কয়েকজন এসে সেখানে চিল্লাচিল্লি করছিল। আমরা তাদের চিনি না। কেউই চিনে না। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হতেও পারে নাও হতে পারে। আমি শিউর না। পোলাপানের সাথে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল, তারা ওদেরকে সরিয়ে দিয়েছে। আমরা তাদের থামিয়ে দিয়েছি।’’
এদিকে সাদ্দাম নিশ্চিত করেছেন যে, হাতাহাতিতে জড়ানোরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জুনিয়র নেতাকর্মী। তবে তিনি ঘটনাস্থলে তার উপস্থিতির বিষয়ে অস্বীকার করেছেন। যদিও প্রমাণ দেয়ার পরে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন।
জানতে চাইলে সাদ্দাম হোসেন গোলযোগের সময়ে তার সেখানে উপস্থিতির কথা প্রথমে অস্বীকার করে বলেন, ‘‘টিএসসিতে গোলযোগ হয়েছে বলে আমার জানা নাই। জুনিয়রদের মধ্যে মনে হয় কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে সিনিয়ররা কিছুই করেনি। আমরা তা দেখিনি। গোলযোগের সময়ে আমরা সেখানে ছিলাম না। আমরা আসার পরে তা হয়ে থাকতে পারে।’’
ভিডিওতে আপনাদের দেখা যাচ্ছে বললে তারপর তিনি উপস্থিতির কথা স্বীকার করে বলেন, সিনিয়ররা গিয়ে জুনিয়রদের থামাইছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের মুঠোফোনে কল দেয়া হলেও তিনি কল রিসিভড করেন নি।
–আরবি