খেলার খবরঃ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে বাংলাদেশের প্রথম জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সাল। এরপর সময়ের হিসাবে ১৫ বছরের বেশি বা ৫৫১৯ দিন কেটে গেলেও জয়ের দেখা পাচ্ছিলেন না টাইগাররা।

অবশেষে ৫৫২০ দিন পর আবারও টি-টোয়েন্টির বিশ্বমঞ্চে জয় পেল সাকিব বাহিনী।

বিশ্বকাপ সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানেই থেমে যায় নেদারল্যান্ড। ফলে ৯ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় নিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলো টাইগাররা।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা বেশ ভালোই করেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত। যার সুবাদে পাওয়ার প্লের পাঁচ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৩, যা চলতি বছর ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চও।

তবে ষষ্ঠ ওভারে বিদায় নেন সৌম্য। ফন মিকেরেনের বলে আউট হওয়ার আগে দুই বাউন্ডারিতে ১৪ রান করেন সৌম্য। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর সাজঘরে ফেরেন শান্তও (২৫)। এরপর টানা তিন ওভারে লিটন দাস (৯), সাকিব আল হাসান (৭) ও ইয়াসির আলীর (৩) উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

মিডল অর্ডারে আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহান দলের হাল ধরে আরও ৪৪ রান যোগ করেন। সোহান ১৩ রানে বিদায়ের পর আফিফ ২৭ বলে সমান দুই চার ও ছক্কায় সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন। শেষদিকে মোসাদ্দেক হোসেনের ১২ বলে অপরাজিত ২০ রানে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান করে বাংলাদেশ।

বোলিংয়ে নেদারল্যান্ডসের হয়ে পল ভ্যান মিকোরেন ও বাস ডি লিড ২টি করে উইকেট পান। এছাড়া টিম প্রিঙ্গেল, লোগান ভ্যান বিক, সারিজ আহমেদ ও ফ্রেড ক্লাসেন প্রত্যেকে ১টি করে উইকেট পান।

জবাবে রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশি পেসার তাসকিন আহমেদ ইনিংসের প্রথম দুই বলেই তুলে নেন নেদারল্যান্ডের দুই উইকেট। প্রথম বলে করিডোর অফ আন্সার্টেইন্টিতে খোঁচা মেরে ডাচ ওপেনার বিক্রমজিৎ সিং ফেরে ইয়াসির আলী ক্যাচ নিলে। পরের বলেই বাস ডি লিডকেও উইকেটের পিছনে নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরান দেশসেরা এই পেসার।

এরপর নেদারল্যান্ডকে চাপে রেখে রান আটকে রাখলেও উইকেট নিতে পারছিলেন না বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু সাকিব আল হাসান চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে ওই ওভারে দুটি রানআউট করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। ম্যাক্স ও’ডাউড (৮) এর পর টম কুপার কোনো বল মোকাবিলা করতে না পেরেই ‘ডায়মন্ড ডাক’ নিয়ে সাজঘরে ফেরেন।

এরপর কলিন অ্যাকারম্যান আর অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস মিলে ৪৪ রান করে জুটি দাঁড় করিয়ে ফেলেছিলেন। তাতে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশও। তবে সেই অস্বস্তি থেকে সমর্থকদের মুক্তি দিয়েছেন সাকিব। ডাচ অধিনায়ক এডওয়ার্ডসকে (১৬) ফিরিয়েছেন তিনি। এনে দিয়েছেন বহু আকাঙ্ক্ষিত ‘ব্রেক থ্রু’টা।

পরের ওভারে আঘাত হানলেন হাসান মাহমুদও। বোল্ড করেন টিম প্রিঙ্গলকে, যিনি বলদুয়েক আগেই নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ তুলেও বেঁচে ফিরেছিলেন। দলীয় ৬৬ রানে ৬ উইকেট খুইয়ে বসার পর বৃষ্টিতে কিছু সময় খেলা বন্ধ থাকার পর ডাচরা আবার ব্যাটিংয়ে নামলে একা হাতে ম্যাচ বের করার চেষ্টা করছিলেন অ্যাকারম্যান। তবে অপর প্রান্ত্রে লোগান ভ্যান বিক ও সারিজ আহমেদের উইকেট তুলে নেন টাইগাররা।

কিন্তু ঠিকই ফিফটি তুলে নেন অ্যাকারম্যান। এই ব্যাটার ৪৮ বলে ৬২ রান করে তাসকিনের বলে ফেরার পর বাংলাদেশ জয়ের দাঁড়প্রান্তে পৌছে যায়। ফলে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানে অলআউট হয় ডাচরা।

বোলিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে ২৫ রানে ৪ উইকেট নেন পেসার তাসকিন আহমেদ। এছাড়া আরেক পেসার হাসান মাহমুদ ২টি, সাকিব ও সৌম্য নেন ১টি করে উইকেট।

-আরপি

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily