বিনোদনঃ
বিনোদন জগতের তথা থিয়েটারের অতি চেনা মুখ ইশরাত নিশাত আর নেই। সদা হাস্যোজ্জল এই মানুষটি থিয়েটারের মানুষদের আড্ডায় মাতিয়ে রাখতেন।
গতকাল (১৯ জানুয়ারি) রাতে তিনি গুলশানে বোনের বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫৬ বছর।
তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নন্দিত অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা লিখেছেন-“গুডবাই ইশরাত।” সেই সঙ্গে ওই অভিনয় শিল্পীর একটি সাদাকালো ছবিও পোস্ট করেছেন।
ইশরাত নিশাতের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি দিয়ে এবং নানারকম স্মৃতিচারণমূলক স্ট্যাটাস দিয়েছেন ভক্তরা। থিয়েটার থেকে যারা টিভি নাটকে এসেছেন তারা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন তাকে।
শোবিজ জগতের শিল্পীরাও স্মৃতিচারণমূলক লেখা দিয়ে তাকে ভালোবাসায় সিক্ত করছেন।
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, “নিশাত আপা, আপনার আসল ঠিকানা আসলে কোথায় ছিলো? থিয়েটারে, আমাদের অন্তরে না কী আপনি যেখানে চলে গেলেন- সেখানে?”
ইশরাত নিশাতের মা ছিলেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী নাজমা আনোয়ার।
থিয়েটার অঙ্গনে ইশরাত নিশাত বিদ্রোহী কণ্ঠ হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি ছিলেন।
ঢাকার অন্যতম দর্শকপ্রিয় নাট্যদল দেশ নাটকের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন অনেক বছর ধরে। এই নাট্যদলের হয়ে অভিনয় যেমন করেছিলেন, তেমনি নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
দেশ নাটকের হয়ে কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন ইশরাত। তার নির্দেশিত মঞ্চ নাটক ‘অরক্ষিতা’ নাটকপাড়ায় বেশ প্রশংসা পেয়েছে। এছাড়াও দেশ নাটকের হয়ে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন ‘যাত্রানাস্তি’ ও ‘পার্থক্য’ নাটক দুটি। দেশ নাটকের প্রথম দিকের সব নাটকেই তিনি অভিনয় করেছিলেন।
মঞ্চে আলোক নির্দেশক হিসেবেও কাজ করেছেন ইশরাত। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন আবৃত্তি শিল্পীও।
গেলো বছরের শেষ দিকে ইশরাত নিশাত একটি সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। নাসিরউদ্দিন ইউসুফ পরিচালিত সিনেমাটির নাম ‘আলফা’।
এদিকে ইশরাত নিশাত সব শেষ অ্যাকটিং নির্দেশক হিসেবে দেশ নাটকের ‘জলবাসর’ নাটকে কাজ করছিলেন। মাসুম রেজা নাটকটির নাট্যকার ও নির্দেশক। এ মাসেই ‘জলবাসর’ নাটকটির শো হওয়ার কথা ছিলো।
ইশরাত নিশাতের মরদেহ আজ (২০ জানুয়ারি) বেলা ১টা থেকে রাখা রয়েছে সেগুনবাগিচার জাতীয় নাট্যশালার সামনে। সেখানে ৩টা পর্যন্ত রাখা হবে। শ্রদ্ধা জানানো শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ এ তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এরপর তাকে দাফন করা হবে বনানী কবরস্থানে।
-ডিকে