তথ্য প্রযুক্তিঃ
মোবাইল কোম্পানী গ্রামীণফোন ও রবিতে প্রশাসক নিয়োগ করতে চায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
বিটিআরসি বলছে, পাওনা টাকা আদায় করতে প্রশাসক বসাতে কোনো আইনি বাধা নেই। প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হলে অপারেটরদের পরিচালনা পর্ষদ ও প্রধান নির্বাহীর কোনো ক্ষমতা থাকবে না।
সরকারের নিয়োগ করা প্রশাসক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না করে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। পরিশোধ করা শেষ হলে সরকারও প্রশাসক তুলে নেবে। খবর প্রথম আলো’র।
বিটিআরসির দাবি অনুযায়ী, এই দুটি টেলিকম কোম্পানীর কাছে বিটিআরসি’র পাওনা ১৩ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি টাকা। এ টাকা আদায়ে ব্যান্ডউইডথ সীমিত করা এবং প্যাকেজ ও সরঞ্জামের ছাড়পত্র (এনওসি) দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল বিটিআরসি। তাতে কোনো কাজ না হওয়ায় ৫ই সেপ্টেম্বর দুই অপারেটরকে লাইসেন্স (টু-জি ও থ্রি-জি) বাতিল কেন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। জবাবের জন্য ৩০ দিন সময় বেধে দেয়া হয়।
অপারেটরদের কাছ থেকে রাজস্বের ভাগ (সাড়ে ৫ শতাংশ), বিভিন্ন ফি বা মাশুল ও করের টাকা আদায় করে বিটিআরসি। বিটিআরসি জানিয়েছে, অপারেটরগুলো ঠিকমতো পাওনা টাকা দিয়েছে কি না, তা যাচাইয়ে গ্রামীণফোনের ওপর ১৯৯৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত একটি নিরীক্ষা করা হয়। এতে ৩ হাজার ৩৪ কোটি টাকা পাওনা দাবি করা হয়।
যদিও পদক্ষেপটিকে অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছে গ্রামীণ ফোন ও রবি। তাদের দাবি অনুসারে যে নিরীক্ষার ভিত্তিতে বিটিআরসি অর্থ দাবি করছে, সেটা অযৌক্তিক। নিরীক্ষাটির প্রক্রিয়া, কার্যপ্রণালি ও ফলাফলের বিপক্ষে গ্রামীণফোন বারবার আপত্তি জানিয়েছে। বিটিআরসি সব প্রচেষ্টা অগ্রাহ্য করেছে এবং এই অযৌক্তিক নিরীক্ষা দাবি আদায়ে অন্যায্যভাবে বল প্রয়োগ করেই যাচ্ছে। রবি বলেছে, তারা সময়মতো চিঠির জবাব দেবে। তবে বিটিআরসির চিঠির আগেই নিরীক্ষার বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলা করেছে গ্রামীণফোন ও রবি। গত ২৫শে আগস্ট রবি প্রথমে মামলা করে, পরের দিন মামলা করে গ্রামীণফোন।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী, কোনো অপারেটর লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করলে তার লাইসেন্স বাতিল ও স্থগিত করতে পারে বিটিআরসি। লাইসেন্স স্থগিত করা হলে সরকারের অনুমোদন নিয়ে প্রশাসক (অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা রিসিভার) নিয়োগ দেওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. রেজাউল কাদের সাংবাদিকদের বলেন বলেন, দুই অপারেটরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাদের জবাব সন্তোষজনক না হলে টাকা উদ্ধারে আইন অনুযায়ী যেসব পদক্ষেপের সুযোগ আছে, তা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
-কেএম