অনলাইনঃ
ঢাকার বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে এক নারী নিহত হওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছে নিজতের পরিবার।
শনিবার রাতে বাড্ডা থানায় নিহতের ভাগিনা নাসির উদ্দিন এ মামলা করেন।
মামলায় এজাহারে বলা হয়েছে, অতর্কিতভাবে ওই নারীকে স্কুলের অভিভাবক, উৎসুক জনতাসহ অনেকে গণপিটুনি দেয়। এতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি জড়িত।
পুলিশের বাড্ডা থানার ডিউটি অফিসার এসআই মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিহতের মরদেহ শনাক্ত করেন তার ভাগিনা ও বোন রেহানা। তারা জানায়, নিহতের নাম তসলিমা বেগম রেনু। তারা ১১ বছরের এক ছেলে ও চার বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। আড়াই বছর আগে তসলিম উদ্দিনের সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে ছেলেমেয়েকে নিয়ে মহাখালী ওয়ারলেস এলাকায় একটি বাড়িতে থাকতেন তিনি।
নিহতের ভাগিনা নাসির উদ্দিন বলেন, রেনু মানসিক রোগে ভুগছিলেন। চার বছর বয়সী মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য তিনি এক স্কুল থেকে আরেক স্কুলে ঘুরছিলেন। এ কারণেই হয়তো তিনি বাড্ডার ওই স্কুলটিতে যান।
বাড্ডা থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, রেনু তার মেয়েকে ভর্তি করার জন্য স্কুলে যান। কিন্তু মানসিক অসুস্থতার কারণে তার আচরণ অস্বাভাবিক ছিল। এজন্য স্কুলের অনেকেই তাকে ছেলেধরা হিসেবে সন্দেহ করছিল। প্রধান শিক্ষক তার সাথে কথা বলার জন্য রুমে নিয়ে যান। কিন্তু স্কুল প্রাঙ্গণে তার অস্বাভাবিকতা দেখে অনেকেই বের করে মারধর করতে চাইছিলেন। প্রধান শিক্ষক রেনুকে বাইরে বের না করলে, স্কুলের কিছু অভিভাবক ও বাইরে থেকে আসা উৎসুক জনতা রুমের গেট ভেঙে তাকে ‘ছেলেধরা’ বলে মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢামেকে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেনুকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে বাড্ডা থানার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আহমেদ হুমায়ুন বলেন, আমরা প্রধান শিক্ষকের স্টেটমেন্ট নিয়েছি, তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে মূল ঘটনা জানা যাবে।
এদিকে শনিবার বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গুজবে কান দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা রাষ্ট্রবিরোধী কাজের শামিল। এছাড়া গণপিটুনি দিয়ে মানুষ মারাকে বড় ধরনের অপরাধ। এগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে।
-কেএম