কোরবানী কবুল হবার জন্য কি দরকার

কোরবানী কবুল হবার জন্য কি দরকার
কোরবানী কবুল হবার জন্য কি দরকার

ইসলামঃ

মুসলমান ভাই ভগ্নি সামর্থবান আমরা সকলেই কোরবানী করে থাকি। কিন্তু কোরবানী করা কি ফরজ না ওয়াজেব না সুন্নত না নফল তাহা জানি না। জিজ্ঞাসা করা হলে অনেকে বলে থাকেন বৎসরের মাথায় শিরনী (কোরবানী) করতে হয়, তাহা করি।

শরীয়তের হুকুম না জানার কারণে এই রকম বলা হয়। এই জন্য শরীয়তের হুকুম শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। সহি ঈমান, এলম ও আমল প্রত্যেক মুসলমানের থাকা দরকার।

এই তিনটার থেকে একটা বাদ পড়লে বাকী দু’টায় ঈমানের বাত্তি জ্বলবে না। যেমন ইলেকট্রিক ভাল্ব সুইজ হোল্ডার তিনটাই জ্বলবে। প্রকৃত পক্ষে কোরবানী করা ওয়াজেব। ছাহেবে নেসাব বলেন, ওয়াজেব কোরবানী করা হয়।

কিন্তু ফরজ নামাজ, যাকাত আদায় করা হয় না। কোরবানী একটা ওয়াজেব আদায় করি। আর একটা ওয়াজেব আদায় করি। অথচ আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বার বার (৮২) বার হুকুম করিয়াছে নামাজ কায়েম কর, যাকাত আদায় কর এখন আমরা নামাজ ও যাকাত আদায় করি না।

কিন্তু মুসলমানের পরিচয় হচ্ছে নামাজের দ্বারা। নামাজ, যাকাত আদায় না করলে মুসলমানের পরিচয় হচ্ছে না। কোরবানী কি করে কবুল হবে? হযরত রাসূলে পাক (সাঃ) ফরমাইয়াছেন ১০ (দশ) জন লোকের নামাজ কবুল হবে না আল্লাহর দরবারে। যে লোক যাকাত আদায় করে না, যে লোক সুদ খায়, যে লোক মদ পান করে ইত্যাদি। এতে প্রমাণ হল যে নামাজ, যাকাত আদায় না করলে, নিষিদ্ধ কাজ বর্জন না করলে, কোরবানী হবে না।

আগে ফরজ নামাজ, যাকাত আদায় করতে হবে। তারপরে কোরবানী কর। যদি আপনি ২০ (বিশ) হাজার টাকা কোরবানীর জন্য বাজেট করেন তাহলে তা থেকে ১০ (দশ) হাজার টাকা কোরবানীর জন্য ব্যয় করুন আর দশ হাজার টাকা যাকাত আদায় করুন। জ্বিলহজ্জ চাঁদের ৯ তারিখ হতে ১৩ তারিখ আছরের নামাজ পর্যন্ত দৈনিক পাঁচ বার নামাজের সময় পাঁচবার আদায় করতে হয় ওয়াজেবের তকবির, তাহাও আদায় করা হয় না। প্রতিযোগিতা কোরবানী করাতে উক্ত কোরবানী লাভ হবে কি হবে না বিচার করে দেখুন।

ঈমানদার মুসলমান দাবি করলে সর্ব প্রথম ফরজ নামাজ যাকাত আদায় করতে হবে। তারপর ওয়াজেব, সুন্নত তারপর নফল, মোস্তাহাব আদায় করতে হবে।

অন্যথায় লাভ হবে না এবং সুদের, ঘুষের, চুরি, ডাকাতি ছিনতাই পরের যে কোন টাকা ইত্যাদি হারাম। এই হারামের টাকা দিয়ে কোরবানীর সওয়াবের আশা করা যায় না। এই জন্য হালাল উপায়ে জীবিকা উপার্জনের চেষ্টা করা ফরজে আইন। হযরত রাসূলে করিম (সাঃ)-এর বাণী হিসাবে সৎ কাজের জন্য হালাল উপার্জনের টাকা খরচ করা দরকার। যদি যে কোন ব্যক্তি হারাম পথে হারাম টাকা রোজগার করে তারপর সেই টাকা হতে সদকা আদায় করে, কিংবা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে, মসজিদ, মাদরাসা যে কোন সওয়াবের কাজে দান করে, তবে তাহার পুণ্যের ফল হবে না। কারণ আল্লাহ পবিত্র এবং সৎ উপার্জনের পবিত্র হালাল টাকা। আল্লাহ পাক গ্রহণ ও সওয়াব দান করেন। (হাদিস আবু দাউদ)।

উপরে লিখিত বিষয় চিন্তা ভাবনা ও বিচার করে কোরবানী হবে কিনা নিজ এলাকার মসজিদের ইমাম মাওলানা সাহেব হতে জেনে লওয়া ও দেয়া দরকার।

বি. দ্র: কোরবানীর মাসায়েল সবাই লিখে থাকে। কিন্তু হালাল-হারামের টাকার কথা উল্লেখ করা হয় না, লোকে জানতেও পারে না।

  • আলহাজ্জ হাফেজ মো. হোসাইন মোজাহের আহামদ
    মসজিদ বায়তুশ শরফ-রামপুর, পোঃ-কুতুব দেউরী গোলা সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।

-ডিকে

FacebookTwitter