অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলীঃ
জাতীয় সংসদে গতকাল (১১ জুন, ২০২০) জাতীয় বাজেট পেশ করা হলো। এ বাজেট সম্পর্কে শুধু এটুকুই বলব, দেশের ক্রান্তিকালে সরকারপ্রধান মানুষের বেঁচে থাকার কথা ভেবে যেভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, তার অনেকখানি প্রতিফলিত হয়েছে। আশা করা যায় যে, খাতওয়ারি বরাদ্দ ঠিকমতো দেয়া হবে এবং বাস্তবায়ন করা যাবে। আমাদের দেশে সবকিছুই সরকারপ্রধানকে কষ্ট করে জনগণের মঙ্গল সাধনের জন্য সামাল দিতে হচ্ছে। বাজেট শুনতে শুনতে সাত বছর বয়সে ফিরে গিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যগুলো তৎকালীন দৈনিক বাংলা এবং অবজার্ভারে বেরিয়েছিল। তখন তার অনেক কিছুই বুঝিনি। কিন্তু মানুষের মঙ্গল করার যে মহানব্রত সেদিন বঙ্গবন্ধু গ্রহণ করতে তার অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, এবারও তার ব্যত্যয় প্রধানমন্ত্রী ঘটাননি।
দেশে যেভাবে করোনাভাইরাস নিয়ে ডাক্তার, নার্স এবং মেডিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্টদের একদল চিকিৎসা দিচ্ছে, অন্য দল দিচ্ছে না- এ ধরনের প্রচার বন্ধ করতে হলে আমি মনে করি স্বাস্থ্য খাতে মেডিক্যাল রোবট এবং বাল্ক চেন টেকনোলজির প্রয়োজন। জেলা শহর কেন অনেক বিভাগীয় শহরেও ভেন্টিলেশন, আইসিইউ বেড নেই। মাঝখান থেকে সাধারণ রোগব্যাধির মানুষও বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। অথচ সরকার তো প্রথম থেকেই চিকিৎসা দিতে অনুপ্রাণিত করে আসছে। এনমকি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বেসরকারী হাসপাতালে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা দেয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আনোয়ার খান মেডিক্যাল কলেজ বেশ ঘটা করে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা সরকারী নির্দেশনায় দেয়া হবে, বলেছিল। কিন্তু যখন দেখল হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে না ছুটে কোন্ হাসপাতালে বেড খালি আছে তা যদি রোগীর আত্মীয়স্বজনরা ডিজিটাল উপায়ে জানত পারত এবং কেউ ফিরিয়ে দিলে ট্র্যাকিং করা যেত তবে কষ্ট লাঘব হতো। এতে যখন ব্যবসা হচ্ছে না, তখন সরকারের সঙ্গে চুক্তি থেকে বেরিয়ে এলো। ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তো অনেক কথাই বলেন। কেন তার গণস্বাস্থ্য সাভার ও ধানম-িতে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা ব্যবস্থা করছেন না। এক ডায়ালাইসিসের দোহাই দিয়ে আর কতকাল। আমি বহুবার লিখেছি, ভারতীয় ধনিক শ্রেণী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন এ দেশের ধনিক শ্রেণী। কিন্তু তারা শেখেননি। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। এ দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশে কষ্ট লাগে অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি অন্তত মৃত্যুর সময়ে যে চিকিৎসাটুকু পেতে পারতেন, তা পাননি। বেসরকারী হাসপাতালে এত উচ্চ অর্থমূল্য যে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের পক্ষে সেখানে যাওয়াই সম্ভব নয়। আমরা তো এলোপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু কিছু অর্থ তো বায়োক্যামিক, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদি ও ভেষজ ক্ষেত্রে বরাদ্দ দিয়ে কাজ করা উচিত ছিল। পুলিশ অধিদফতর ভাল কাজ করেছে। সীমিত পরিসরে হলেও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থাও করেছে। আসলে আয়ুর্বেদি-ভেষজ-হ্যাকিমি-কবিরাজি যে নামেই ডাকা হোক- খাঁটি ওষুধ হলে সেটি এ ধরনের ক্ষেত্রেও কাজ করতে পারে। মনে আছে, তিন/চার বছর পূর্বে দক্ষিণ আফ্রিকায় কৃষিক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিলে, সেখানে দেশে-বিদেশের বড় বড় কৃষিবিজ্ঞানীরা সমাধানে ব্যর্থ হন। অথচ সেখানেরই একজন কৃষিবিজ্ঞানী খোঁজা শুরু করেন, কিভাবে চার হাজার বছর পূর্বে এ ধরনের সমস্যা হলে সেটি সমাধান করা হতো। অবশেষে সেই সমাধানের পথ ধরে এগিয়ে তিনি সমস্যার সমাধান করেন। জানি, করোনাভাইরাস নতুন কিন্তু পারিপার্শ্বিক সমস্যা বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে আগে থেকেই হয়ে এসেছে। এখন সেগুলো সমাধানের জন্য বায়োক্যামিক, আয়ুর্বেদি এবং হোমিওপ্যাথি কি বলে থাকে সেটি গবেষণা করা ভাইরোলজিস্ট অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক এবিএম ফারুকের নেতৃত্বে ফার্মেসি বিভাগ এবং বায়োমেডিক্যাল সেন্টার থেকে জরুরী ভিত্তিতে গবেষণা করতে হবে। আসলে ব্যবসায়িক এবং আমলাভিত্তিক মনোভাব থেকে এ ক্রান্তিকালে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের আধুনিক, মধ্য ও প্রাচীন যুগীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং চিকিৎসা পদ্ধতির বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে। এ মুহূর্তে মনে পড়েছে কুমিল্লার বিশিষ্ট হোমিও চিকিৎসক সোহানীর কথা- বেঁচে থাকলে বৃদ্ধ বয়সে নিশ্চয়ই কিছু একটা করতেন। প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের পিতা সৈয়দ সিদ্দিক হোসেন বহু বছর পূর্বে বায়োক্যামিক চিকিৎসার ওপর গভীর পা-িত্যপূর্ণ বই লিখেছিলেন। দেশে হোমিও মেডিক্যাল কলেজ থাকলেও বায়োক্যামিক মেডিক্যাল কলেজ নেই। একটি বায়োক্যামিক মেডিক্যাল কলেজ ও গবেষণাগার স্থাপন করা দরকার। আয়ুর্বেদি এবং হ্যাকিমি চিকিৎসার মান উন্নতের পাশাপাশি ওষুধে যেন ভেজাল না মেশায় সেটা দেখা দরকার। আসলে প্রফেসর ড. এবিএম ফারুকের নেতৃত্বে বায়োক্যামিক/ হোমিও এবং আয়ুর্বেদি-ভেষজ-হ্যাকিমি গবেষণা কাজে স্ব-স্ব বিষয়ে পারদর্শীদের কমিটিতে রেখে জরুরী ভিত্তিতে গবেষণার কাজ শুরু করা দরকার। এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এবং তাদের প্রাপ্ত গবেষণা এবং যারা বিশ্বাস করে তাদের কাছে যথাযথ ওষুধ মানসম্মতভাবে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সততা ও নৈতিকতার সঙ্গে গ্রহণ করতে হবে। মানুষের বেঁচে থাকা যেমন একান্ত প্রয়োজন তেমনি সুস্থ ও নিরোগ থাকাও দরকার। এদিকে দেশে কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সঙ্কট একটি গ্রুপ তৈরি করেছে। বিদেশ থেকে জরুরী আমদানির চেষ্টা সরকার করছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিজ্ঞচিত কর্মকা- করে দেশে- বিদেশে প্রশংসিত হয়েছেন। গত ৪ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত একটি ভার্চুয়াল বৈশ্বিক টিকা সম্মেলনে মানব জাতিকে করোনাভাইরাসের মতো মহামারীর হাত থেকে রক্ষা করতে দ্রুত টিকা উদ্ভাবনের আহ্বান জানান। টিকাদানই সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগের মোকাবেলায় অন্যতম উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জিভিআই এ্যালায়েন্সের সহায়তা কামনা করেন। আসলে এ সম্মেলনে তার বক্তব্য মানুষের প্রতি ভালবাসায় সম্পৃক্ত। বিল গেটস কোটি কোটি ভ্যাকসিনের উৎপাদন ব্যয় দিতে চান। বিল গেটস বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নেও অনুদান দেবেন কিনা অনুরোধ জানিয়ে যোগাযোগ করা যেতে পারে। ওই দুর্যোগে দাঁড়িয়ে বার বার আমাদের মনে করিয়ে দেয় ১৯৬৬ সালের ৭ জুন বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা আন্দোলনের কথা। এ জন্যই এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন যে, বাংলার মানুষ ছয় দফাকে নিয়েছিল তাঁদের বাঁচার অধিকার হিসেবে এবং এটা প্রকৃতপক্ষে তাই ছিল। বঙ্গবন্ধুর ছয় দফাকে বিশিষ্ট গবেষক ও অনুবাদক ও ভাষাসৈনিক প্রয়াত মোবাশ্বের আলী ‘বাংলাদেশের সন্ধান’ গ্রন্থে স্বাধীনতার মূল মন্ত্রধ্বনি হিসেবে উচ্চারণ করেছেন।
আজ কোভিডের বিরুদ্ধে পারস্পরিক দোষারোপ, মিথ্যা বিষোদাগার, একশ্রেণীর ব্যবসায়ী, কিছু টাউট বাটপার দুর্যোগের সময়ে দ্রব্যের দাম বাড়াচ্ছে। প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী সরকারের নির্ধারিত টার্গেট গ্রুপের কাছ পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে, যেটি আসলেই দুর্ভাগ্যজনক। সীমাহীন লোভ মানুষকে হায়েনাতে রূপান্তর করেছে এরা দলমত নির্বিশেষ যে দলেরই হোক নব্য রাজাকারদের তালিকা করা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ঢাকার অনেক ফ্ল্যাট ওনার্স কোপারটিভের কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত শাকসবজি লাগানোর নির্দেশ পালন করেছেন না। আবার ধান সংগ্রহের নির্দেশ দিলেও ধান-চাল সংগ্রহের পরিমাণ কিন্তু আশানুরূপ নয়। ডাক্তার-নার্স ও সেবা প্রদানকারীরা ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা। তাদের অনেকে দায়িত্ব পালন করেন আবার অনেকে করেন না। কিন্তু তারপরও যারা দায়িত্ব পালন করেন সঠিক সময়ে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে বেতন পাচ্ছেন না। সেটি দুর্ভাগ্যজনক। ইস্কাটনের একটি স্বনামধন্য মেডিক্যাল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট এবং ডেন্টাল কলেজের চিকিৎসকদের বেতন কয়েক মাস ধরে বন্ধ। বেতন বন্ধ থাকলে কোভিড ১৯ লাগবে না, স্ট্রোকে বা হার্ট ফেল করেই মানুষ মারা যাবে। একই অবস্থা অনেক বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজেও। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য থোক বরাদ্দ দেয় যেতে পারে। আসলে মানুষকে বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই তারা প্রাপ্য বেতন-ভাতাদি যথাসময়ে পৌঁছে দিতে হবে। কেননা, এটি জ্বালানি হিসেবে কাজ করে থাকে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক একজন বিত্তহীন হোক- নিম্নবিত্ত হোক, মধ্যবিত্ত হোক, নিম্ন মধ্যবিত্ত হোক তার আয়ের উৎস যাতে বন্ধ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। সরকার কিন্তু ঈদের আগে নগদ টাকা পাঠিয়ে দরিদ্র শ্রেণীর কাছে প্রশংসিত হয়েছে। আমাদের দেশের বিত্তশালীদেরও সমাজ, সমস্যার দায় নিতে হবে। কেবল সরকারের ওপর নির্ভর করলেই চলবে না। দেশে নতুন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় খুশি হয়েছি। দেশে যে বিসিএস পরীক্ষা সামনে হবে তাতে ইংরেজী মিডিয়ামের ছাত্রছাত্রীদের থেকে বাংলা মিডিয়ামের প্রশ্ন ভিন্ন হওয়া বাঞ্ছনীয়। কেননা আন্তর্জাতিক পরিম-লে টিকে থাকতে হলে বাংলা মিডিয়ামের বর্তমান যুগের ছাত্রছাত্রীদের অবস্থা ত্রাহি মধুসূদন। এ জন্য পিএসসিকে অবশ্যই একটি সমাধানযোগ্য পথ বেছে নিতে হবে। ইংরেজী মিডিয়ামের ছাত্রছাত্রীদের আকৃষ্ট করতে পৃথক সিলেবাসের অবতারণা করা দরকার। বর্তমানে যারা বাংলা মিডিয়াম থেকে বেরুচ্ছে তাদের ইংরেজী ও গণিত ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাজে সমস্যার সৃষ্টি করবে। এটি অবশ্য শিক্ষা ব্যবস্থার ঘাটতি। করোনার মধ্যে মান হানিকর একটা দুঃসংবাদ প্রকাশিত হলো। জাগো নিউজের ৯ জুন, ২০২০-এর সংবাদে দেখা যায় যে, মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগে কুয়েতে আটক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র এমপি কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুলকে রিমান্ডে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘটনাটিকে ‘ডিসগ্রেসফুল’ বলে অভিহিত করেছেন। এ ধরনের হীন অপরাধী কেবল যে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে তা নয় বরং প্রবাসে বাংলাদেশের যাওয়ার পথও অবরুদ্ধ করছে। কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকা- শৈথিল্যজনক বলে প্রতীয়মান হয়। এদিকে করোনার জাল সনদ বিক্রি করতে গিয়ে মালয়েশিয়ায় দু’জন বাংলাদেশী সে দেশের পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। আসলে এ ধরনের লোকদের জন্য প্রশংসিত ব্যক্তিরাও লজ্জা পান। দেশেও যে এ ধরনের ঘটনা অসাধু চক্র ঘটায় না তা বলার নয়। পুরোপুরি লকডাউনের মধ্যেও কুমিল্লা শহরেই অন্যের বেড়া দেয়া জায়গায় ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছিল প্রশাসনের নাকের ডগায়। আসলে সরকার লকডাউন দিয়েছে, অবস্থা বুঝে ত্রাণসামগ্রী দিয়েছে, খাদ্যসামগ্রীর পাশাপাশি নগদ অর্থ দিয়েছে। কিন্তু বড্ড বেশি লোভাতুর হয়ে পড়ছে একটি শ্রেণীর মানুষ। আবার লকডাউনে অনেকে আইন না মেনে চলায় মাঝখান থেকে পুলিশ বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুবরণ করছেন আবার সুস্থও হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর জহুরীর চোখ- তাই তো মাশরাফি বিন মর্তুজাকে এমপি হিসেবে নির্বাচনের সুযোগ দিয়েছেন। স্থানীয় মানুষের ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। মাশরাফি বিন মর্তুজা যেভাবে স্থানীয় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা প্রশংসনীয়। নারী ও শিশু নির্যাতন এই কোভিড-১৯ এর সময়েও বন্ধ হয়নি। যেখানে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা নেই, সেখানে পাশবিকতা চলছে।
ঢাকায় সম্প্রতি চীন থেকে ১০ সদস্যের মেডিক্যাল টিম এসেছে। চীনের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবেলায় মতবিনিময় করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। দেশের বিশেষজ্ঞরাও অনেক সরকারী হাসপাতালকে উন্নত করতে অনুরোধ করছেন, তবে কাজ হচ্ছে না। মিরপুরের ‘মুক্তিযোদ্ধা হাসপাতাল’ সম্পর্কিত একটি সরকারী হাসপাতালের বেহালদশা সম্পর্কিত রিপোর্ট চ্যানেল একাত্তরে প্রচারিত হয়েছে। এটি দেখে খুবই দুঃখ লাগল, কিভাবে অর্থের অপচয় করে ভুতুড়ে হাসপাতালে পরিণত করেছে। নারায়ণগঞ্জের সিটি ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও তার স্ত্রী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে নারায়ণগঞ্জের এমপি শামীম ওসমান ভিন্নমতের হয়েও তার পাশে দাঁড়িয়েছেন, এটি প্রশংসনীয়। তবে বেসরকারী হাসপাতালগুলোর চিকিৎসার উচ্চমুল্যের লাগাম টানা উচিত। ইউনাইটেড হাসপাতালের ঘটনা জাতিকে কষ্ট দিয়েছে। মানুষের জীবন নিয়ে এত হেলাফেলা হয় না।
লেখক : ম্যাক্রো ও ফিন্যান্সিয়াল ইকোনমিস্ট ও প্রফেসর
শিশির