অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘করোনার জন্যই আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি না দিলেও খেলাপি হওয়া থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি শুধু ব্যাংকগুলোর আয় নয়, অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমানে আমরা বৃহত্তর স্বার্থে ব্যবসায়ীদের পক্ষে আছি।’

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বছরজুড়েই ঋণ খেলাপি হওয়া ঠেকিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি না দিলেও চলবে। কিস্তি না দিলে কেউ ঋণ খেলাপি হবে না। একইভাবে কয়েক দফা এ সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। ফলে দেশের ব্যাংকগুলো ক্ষতিতে পড়ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা করোনার জন্যই বাড়ানো হয়েছে। এখন আমরা মোটামুটিভাবে সুযোগ দিয়েছি টাকা তো মাফ করে দেইনি, টাকা আমরা পাব। কিন্তু সময় বাড়িয়ে দিয়েছি। সময় না বাড়িয়ে এ সময় যদি আমরা বাধা সৃষ্টি করি তাহলে এক্সপোর্ট অর্ডারগুলো (রফতানি আদেশ) বাস্তবায়ন করা যাবে না। আমরা আমদানি করছি, এখনই এলসিগুলোর নিষ্পত্তি করতে পারবো না। বিভিন্ন জায়গায় বাধাগ্রস্ত হবে।’

তিনি বলেন, ‘যেই মুহূর্তে লোনটি ক্লাসিফাইড হবে, সেই মুহূর্তে স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। এই মুহূর্তে আমার মনে হয়, এটা করা ঠিক হবে না। করোনাকালে তাদের (ব্যবসায়ীদের) সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষই বলছে- এ সিদ্ধান্তের ফলে তাদের আয়ের ওপর প্রভাব ফেলছে। এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি শুধু আয় নয়, অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করে করা হয়েছে। এখন কোনো না কোনোভাবে কিছু হলে কেউ তো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু আমরা এখন বৃহত্তর স্বার্থে ব্যবসায়ীদের পক্ষে আছি। আমি মনে করি, ব্যবসায়ীরা যদি ভালো থাকে ব্যাংকগুলোও ভালো থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর প্রত্যেকটি ব্যাংকই ভালো করেছে, তাদের ধন্যবাদ। প্রত্যেকের ব্যালেন্স সিট অনেক ভালো। খেলাপি ঋণের পরিমাণও কমের দিকে। আমি মনে করি, এটাই সময় তাদের ক্লায়েন্টদের সাহায্য করার জন্য। ক্লায়েন্টগুলো তাদের (ব্যাংকের), সরকারের না। ক্লায়েন্ট কোনোভাবে উপকৃত হলে দিনের শেষে লাভবান হবে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংক তো তাদের কোনো কাস্টমারকে খেলাপি ঘোষণা করে কষ্ট দিচ্ছে না। সুতরাং তাদের ব্যবসায় প্রভাব পড়ার কোনো কারণ নেই।’

এদিকে গত সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি না দিলেও কোনো ব্যবসায়ীকে ঋণ খেলাপি ঘোষণা করা যাবে না। আবার এই সময়ে ঋণের ওপর কোনো ধরনের দণ্ড সুদ বা অতিরিক্ত ফি আরোপ করা যাবে না। যদি কেউ ঋণ শোধ করে নিয়মিত গ্রাহক হন, তাকে খেলাপি গ্রাহকের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ সুযোগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার এ সুযোগ বাড়িয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। এই সময়ে কেউ কিস্তি শোধ দিলে ওই গ্রাহককে সুদ ছাড় দিতে পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

-কেএম

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily