স্বাস্থ্যঃ
হামারি সৃষ্টিকারী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের টিকা তৈরি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
১৭ মার্চ, মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে পরীক্ষামূলকভাবে মানুষের দেহে এই টিকা দেয়া হবে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে কাইজার পারমানেন্টে গবেষণাকেন্দ্রে ৪৫ জন সুস্থ স্বেচ্ছাসেবীর দেহে এই টিকা দেয়া হবে।
কভিড-নাইনটিন ভাইরাসের একটি জেনেটিক কোড দিয়ে এই টিকা তৈরি করা হয়েছে। মূলত এটি ভাইরাসটি থেকেই নকল করে তৈরি করা। এটি বিপজ্জনক নয় এবং মানবদেহে সংক্রমণও ঘটাতে পারে না। এমন খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
নতুন এই টিকার বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, এই ভ্যাকসিনটি, বা এ রকম আরো যে কয়েকটি টিকা এখন গবেষণার পর্যায়ে আছে – সেগুলো দিয়ে আদৌ কোন কাজ হবে কিনা তা জানতে আরো অনেক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যাবে।
এমআরএনএ-১২৭৩ নামের এই টিকাটি করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) থেকে তৈরি করা হয়নি। এটি ওই ভাইরাসটির জেনেটিক সংকেতের একটি অংশ কপি বা নকল করেছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেটাই এই টিকাতে যুক্ত করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই টিকা প্রয়োগ করা হলে, মানবদেহের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জাগিয়ে তুলেই ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলা করা যাবে।
এই টিকা স্বেচ্ছাসেবকদের বাহুতে ২৮ দিন পর পর দুবার দেয়া হবে। পরীক্ষাটি যদি ভালোভাবে এবং নিরাপদে সম্পন্ন হয়, তাহলে এটি জনসাধারণের জন্য ব্যবহার উপযোগি করতে ১৮ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
এই ভ্যাকসিনটি মানবদেহে পরীক্ষা করার আগে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ বাদ দিয়েছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ। এই টিকাটি প্রাণীর দেহে সংক্রমণ-প্রতিরোধী ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে তোলে কিনা – এক্ষেত্রে সেই পরীক্ষাটি করা হয়নি।
তবে মডার্না থেরাপিউটিক্স নামে যে বায়োটেকনোলজি কোম্পানি এ কাজটা করছে। এই কোম্পানি জানায়, বহুল-পরীক্ষিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই এই ভ্যাকসিন বানানো হয়েছে।
ইম্পিরিয়াল কলেজ লন্ডনের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ড. জন ট্রেগোনিং জানান, বিদ্যমান প্রযুক্তিই অনুসরণ করে এবং অত্যন্ত উচ্চ মান রক্ষা করে এই টিকা বানানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘এতে যা ব্যবহৃত হয়েছে তা যে মানুষের দেহে ব্যবহার নিরাপদ তা আমাদের আগে থেকেই জানা এবং এই ট্রায়ালে যারা অংশ নেবেন তাদের অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পবর্যবেক্ষণ করা হবে।’ প্রতিষেধক অত্যন্ত দ্রুত তৈরি হচ্ছে, এখন ভাইরাসটির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটতে হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
-কেএম