নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
টেলিভিশনের বড় পর্দায় ইউটিউব, ফেসবুক, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গেমিং, মোবাইলে রক্ষিত অডিও, ভিডিও, ইমেজ ইত্যাদি উপভোগ করতে পারায় বাজারে স্মার্ট টিভির গ্রাহক চাহিদা বাড়ছে ব্যাপক। সেই সঙ্গে বাড়ছে বিক্রিও। তাই নিজস্ব কারখানায় স্মার্ট টিভির উৎপাদন বাড়িয়েছে বাংলাদেশী মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ড ওয়ালটন।
সম্প্রতি স্মার্ট টিভির লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেম ‘এন্ড্রয়েড ৭’যুক্ত ৩২, ৩৯ ও ৪৩ ইঞ্চির নতুন মডেলের টিভি বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। নতুন মডেলের প্রতিটি টিভিতে রয়েছে ১ জিবি র্যাম ও ৮ জিবি বিল্ট-ইন মেমোরি।
ওয়ালটন দাবি করেছে, প্রযুক্তি নিয়ে নিয়মিত গবেষণার মাধ্যমে এলইডি ও স্মার্ট টেলিভিশন উৎপাদন খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে তারা। টিভির মান যেমন উন্নত হয়েছে, তেমনি কমেছে উৎপাদন খরচও।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্যানেল, উচ্চ গতির প্রসেসর, লার্জ ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল, হাই কন্ট্রাস্ট পিকচার, ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম, আল্ট্রা স্লিম ডিজাইন ও সাশ্রয়ী মুল্যের জন্য স্থানীয় বাজারে ওয়ালটন স্মার্ট টিভির চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে। তাই, এবার তারা ২৪ হাজর ৯’শ টাকায় গ্রাহকদের দিচ্ছে ‘এন্ড্রয়েড ৭’ যুক্ত লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেমের ৩২ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি। পাশাপাশি, ‘এন্ড্রয়েড ৭’ এর ৩৯ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি ৩৬ হাজার ৯’শ টাকায় ও ৪৩ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি ৩৯ হাজার ৯’শ টাকায় কিনতে পারছেন গ্রাহক।
ওয়ালটন টেলিভিশন সেলস বিভাগের প্রধান মারুফ হাসান জানান, প্রযুুক্তির উৎকর্ষতায় স্মার্ট টিভির উদ্ভাবন টেলিভিশন খাতে এনেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। টিভি বিনোদনে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। বর্তমানে টেলিভিশন ক্রেতাদের বেশিরভাগই স্মার্ট টিভিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। তার মতে, আগামী দিনে সাধারন টিভির বাজার সীমিত হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে দেশের প্রতিটি ঘরে উচ্চ গুণগতমানের স্মার্ট টিভি পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে ওয়ালটন। এরইমধ্যে টেলিভিশন গবেষণা ও মানোন্নয়নে আরো বিশাল পরিমাণ বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারিজের সমন্বয়ে নতুন প্রোডাকশন লাইন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
এখন স্থানীয় বাজারে ৩২, ৩৯, ৪৩, ৪৯ ও ৫৫ ইঞ্চির সর্বমোট ২৫ টি মডেলের এন্ড্রয়েড স্মার্ট টিভি রয়েছে। এর মধ্যে ৫৫, ৪৯ ও ৪৩ ইঞ্চিতে রয়েছে ১ টি করে মডেল এবং ৩৯ ইঞ্চিতে ৩ টি মডেল। তবে মধ্যম আয়ের গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে ৩২ ইঞ্চির স্মার্ট টিভিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অর্থাৎ ১৫ টি মডেল রয়েছে। ওয়ালটনের বড় পর্দার ৫৫ ও ৪৯ ইঞ্চির স্মার্ট টিভির দাম পড়ছে যথাক্রমে ৬৯ হাজার ৯’শ টাকা এবং ৬৫ হাজার ৯’শ টাকা।
ওয়ালটনের টেলিভিশন বিভাগের প্রকৌশলীরা জানান, রিমোট ছাড়াই গ্রাহকের হ্যান্ডসেটে ইনস্টলকৃত ই-শেয়ার অ্যাপসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে ওয়ালটনের স্মার্ট টিভি। ই-শেয়ার থেকে গ্রাহক তার সুবিধামত কী রিমোর্ট, টাচ রিমোট, মাউস ও এয়ার মাউস মোট চারটি ভিন্ন ফরমেটের রিমোট অপশন বেছে নিতে পারবেন। এর মাধ্যমে গ্রাহক ঘরের যে কোন প্রান্ত থেকেও মুঠোফোনে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন টিভির কনটেন্ট। মোবাইল থেকে টিভিতে ইমেজ, ভিডিও ও গেমস মিররিং সুবিধা রয়েছে।
ওয়ালটনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, একসময় স্থানীয় টেলিভিশন বাজার ছিল আমদানি নির্ভর। কিন্তু, দেশেই আধুনিক ও আন্তর্জাতিকমানের মানের টেলিভিশন উৎপাদন শিল্প স্থাপিত হওয়ায় সেই চিত্র বদলেছে। টেলিভিশন উৎপাদন খাতে বাংলাদেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। স্থানীয় বাজারে এখন দেশে তৈরি টেলিভিশনের আধিপত্য। আগামি প্রজম্মের গ্রাহকের কথা চিন্তা করে স্মার্ট টিভি উৎপাদনের প্রতি জোর দিয়েছে ওয়ালটন।
ওয়ালটন টেলিভিশন বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, গ্রাহকদের সময়োপযোগী পণ্য উপহার দিতে ওয়ালটন গড়ে তুলেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ টেলিভিশন গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ। যেখানে কাজ করছেন উচ্চ-শিক্ষিত, মেধাবী ও দক্ষ প্রকৌশলীরা। তারা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওয়ালটন টিভিতে প্রতিনিয়ত সংযোজন করছেন লেটেস্ট সব প্রযুক্তি। নিশ্চিত করছেন টিভির আন্তর্জাতিক মান। যার স্বীকৃতিসরূপ সম্প্রতি ওয়ালটন টিভি অর্জন করেছে ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস) ও স্ট্যান্ডার্ডস অরগানাইজেশন অব নাইজেরিয়া প্রোডাক্ট কনফরমিটি এ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রাম এর টেস্টিং সার্টিফিকেট।
তিনি আরো জানান, আইএসও ক্লাস সেভেন ডাস্ট ফ্রি ক্লিন রুমে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এইচএডিএস (হাই এ্যাডভান্স সুপার ডাইমেনশন সুইচ) এবং আইপিএস (ইন প্ল্যান সুইচিং) প্যানেল তৈরি করছে ওয়ালটন। যা প্যানেলের গুনগত মান ও দীর্ঘস্থায়ীত্ব নিশ্চিত করে। এর ফলে দর্শকরা পান লার্জ ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল এবং হাই কন্ট্রাস্ট পিকচার। সেইসঙ্গে ওয়ালটন টিভি ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন টিভি এশিয়া, মধ্য-প্রাচ্য, আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হচ্ছে। গুনগত উচ্চমান এবং দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত হচ্ছে রপ্তানি বাজার।
ওয়ালটন টিভিতে রয়েছে ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টিসহ এলইডি প্যানেল ও খুচরা যন্ত্রাংশে দুই বছরের ওয়ারেন্টি ও পাঁচ বছরের ফ্রি বিক্রয়োত্তর সুবিধা। আরো রয়েছে আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের আওতায় দেশব্যাপী বিস্তৃত সার্ভিস পয়েন্ট থেকে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবার নিশ্চয়তা।