নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
শেয়ার বাজারে আসছে বাংলাদেশী ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। উদ্দেশ্য প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের দ্রুততর অগ্রগতিতে দেশবাসীকে সম্পৃক্ত করা; জনগণকে ওয়ালটনের উন্নয়ন অংশীদার করা। মাল্টি ন্যাশনাল ব্র্যান্ড হিসেবে ওয়ালটনকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আরো ব্যাপকভাবে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে শেয়ার বাজারে প্রবেশ করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদিত মূলধন (অথরাইজড ক্যাপিটাল) দেখানো হচ্ছে ৬০০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন (পেইড আপ ক্যাপিটাল) ৩০০ কোটি টাকা। শেয়ার বাজারে কোনো প্রাইভেট প্লেসমেন্ট দিচ্ছে না ওয়ালটন। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও)-এর মাধ্যমে বাজারে শেয়ার উন্মুক্ত করা হবে। পূঁজিবাজারে ওয়ালটনের ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে আছে ট্রিপল এ ফাইনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। আর রেজিস্টার টু ইস্যু প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
শেয়ার বাজার থেকে কত টাকা সংগ্রহ করা হবে? এ প্রশ্নের জবাবে ওয়ালটনের অ্যাডিশনাল অপারেটিভ ডিরেক্টর মোঃ ইয়াকুব আলী এফসিএ বলেন, ক্যাপিটাল এখানে মূখ্য নয়। বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য একটা নজির। গ্রাহকপ্রিয়তায় ওয়ালটন এখন দেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড। ওয়ালটনের এই উন্নয়নে সাধারন জনগণকে সম্পৃক্ত করাই প্রধান উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, বিশ্বমানের রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও এসি উৎপাদনে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দেশ-বিদেশে সমাদৃত। গত বছর ওয়ালটন চালু করে দেশের প্রথম ও একমাত্র কম্প্রেসর উৎপাদন কারখানা। এর ফলে এশিয়ায় অষ্টম এবং সারা বিশ্বে ১৫তম কম্প্রেসর উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয় বাংলাদেশ। ওয়ালটনের তৈরি ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত কম্প্রেসর, এর যন্ত্রাংশ, রেফ্রিজারেটর, এসিসহ বিভিন্ন পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বিশ্ববাজার টার্গেট করে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজাইনের ফ্রিজ এবং এসির উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক ব্যবসা ইউনিটের প্রধান এডওয়ার্ড কিম জানান, ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত প্রযুক্তিপণ্য ও খুচরা যন্ত্রাংশ রপ্তানির মাধ্যমে ২০২৮ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের টার্গেট নিয়েছে ওয়ালটন। তিনি অবশ্য নির্দিষ্ট সময়ের আগেই টার্গেট পূরণের ব্যাপারে আশাবাদি। তিনি বলেন, গুগল, এ্যাপল বা মাইক্রোসফটের মতো আন্তর্জাতিক পথ নকশা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে ওয়ালটন।
ওয়ালটনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং সিএফও আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, ওয়ালটন করপোরেট গভর্নেন্স কোড-২০১৮ সম্পূর্ণরূপে অনুসরণ করে। অর্জিত লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ (প্রফিট শেয়ারিং) কর্মীদের মাঝে বণ্টন করা হয়। উৎপাদন ব্যবস্থায় গ্রিন টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়। যে কারণে এ বছর ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ জাতীয় পরিবেশ পদক পেয়েছে। আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনে পেয়েছে এইচএসবিসি এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। ওয়ালটন চাইছে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জনগণের অংশীদারিত্ব বাড়াতে। যে কারণে বাজারে প্রাথমিক শেয়ার (আইপিও) ছাড়ছে ওয়ালটন।
সূত্রমতে, ওয়ালটনের লক্ষ্য রয়েছে ভবিষ্যতে সিঙ্গাপুর, হংকং, বেইজিং, সাংহাইসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের শেয়ার মার্কেটে তালিকাভুক্ত হওয়ার।
-এসএম