নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নতুন মডেলের এয়ার কন্ডিশনার উন্মুক্ত করলো বাংলাদেশি ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন।
আকর্ষণীয় ডিজাইনের ২৪০০০ বিটিইউ বা দুই টনের এসিটি স্মার্ট ইনভার্টার, ইনভার্টার এবং ফিক্সড স্পিড এই তিন শ্রেণীতে দেশের বাজারে পাওয়া যাবে।
বুধবার (২৮ আগস্ট ২০১৯) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে ক্রিস্টালাইন সিরিজের ২৪-সি মডেলের নতুন ওই এসি উন্মুক্ত করেন মোবাইল ফোন অপারেটর রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও মাহতাব উদ্দীন আহমেদ। সে সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম এবং পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন এসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. তানভীর রহমান, নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, চীফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) প্রকৌশলী ইসহাক রনি, অ্যাডিশনাল অপারেটিভ ডিরেক্টর খোন্দকার শাহরিয়ার মুরশিদ, ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর মফিজুর রহমান, গবেষণা ও উন্নয়ণ বিভাগের প্রধান সন্দীপ বিশ্বাস প্রমুখ।
এর আগে বিকেলে রবির ১০ সদস্যের একটি টিম ওয়ালটন কারখানায় আসেন। দেশীয় প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন শিল্পের অভাবনীয় অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের উদেশ্যে তারা ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে মাহতাব উদ্দীন আহমেদ বলেন, ওয়ালটন কারখানার বিশালত্ব এবং ব্যাপক কর্মযজ্ঞ দেখে আমি অভিভূত। দেশের তরুণ প্রকৌশলীদের গবেষণা ও নকশায় এত চমৎকার অত্যাধুনিক ডিজাইন এবং ফিচারের এসি তৈরি হয়েছে দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স এবং প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন শিল্পে বিপ্লব ঘটিয়েছে ওয়ালটন।
ওয়ালটন এসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. তানভীর রহমান বলেন, ক্রেতাদের হাতে সাশ্রয়ী দামে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির পণ্য দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সর্বশেষ প্রযুক্তি ও ডিজাইনের এসি উৎপাদনে আমাদের রয়েছে নিজস্ব আরএন্ডডি (রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) বিভাগ। সঠিক বিটিইউ’র অত্যাধুনিক ফিচারসমৃদ্ধ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এসি তৈরিতে যেখানে দেশের তরুণ ও দক্ষ প্রকৌশলীরা প্রতিনিয়ত গবেষণা করছেন। ফলে দেশের বাজারে এখন হটকেক ওয়ালটন এসি।
আন্তর্জাতিকমানের ওয়ালটন এসি রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এরই ধারাবাহিকতায় এসি রপ্তানিতে হুন্দাই, রিলায়েন্সসহ বিশ্বের খ্যাতনামা অনেক ব্র্যান্ডের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। আমাদের পণ্যের গুণগতমানে আকৃষ্ট হয়ে বিশ্বের বহু প্রতিষ্ঠানই এখন বাংলাদেশ তথা ওয়ালটনমুখী। এজন্য এসির আরএন্ডডি, প্রোডাকশন থেকে শুরু করে সব বিভাগেই ব্যাপক বিনিয়োগের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
ওয়ালটন এসির গবেষণা ও উন্নয়ণ বিভাগের প্রধান সন্দীপ বিশ্বাস জানান, নতুন আসা স্মার্ট এসিতে সংযোজিত হয়েছে ইনভার্টার প্রযুক্তির কম্প্রেসর। ফলে এই এসি ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা বুঝে সেই অনুযায়ী রেফ্রিজারেন্ট সরবরাহ করে। ঘর ঠান্ডা হয়ে গেলে কম্প্রেসর ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে।
প্রয়োজন অনুযায়ী তাপমাত্রা সরবরাহ করে বিধায় এতে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। কম্প্রেসরের স্থায়ীত্বও বাড়ে। এসি চালুর সময় তুলনামূলক কম শব্দ উৎপন্ন করে।
ওয়ালটন ইনভার্টার এসির কম্প্রেসারে রয়েছে টার্বোমুড। যা রুমের তাপমাত্রা দ্রুত কমিয়ে এনে রুমকে তাড়াতাড়ি ঠান্ডা করে। কম্প্রেসরে ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বস্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব এইচএফসি গ্যাসমুক্ত আর৪১০এ রেফ্রিজারেন্ট। রয়েছে আয়োনাইজার প্রযুক্তি। যা ঠান্ডা করার পাশাপাশি রুমের বাতাসকে ধূলা-ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া মুক্ত করে। কন্ডেন্সারে ব্যবহার করা হচ্ছে মরিচারোধক গোল্ডেন ফিন কালার প্রযুক্তি। যার ফলে ওয়ালটন এসি টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী।
ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর মফিজুর রহমান জানান, ওয়ালটনের আইওটি বেইজড স্মার্ট এসি ভয়েস কমান্ড ও মুঠোফোনে নিয়ন্ত্রণযোগ্য। অর্থাৎ ‘ভয়েস কন্ট্রোল’ বা ‘অ্যামাজন ইকো’র মাধ্যমে রিমোট কন্ট্রোল ছাড়াই ওয়ালটন স্মার্ট এসির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাড়ানো, কমানো, চালু বা বন্ধ করা যায়। এসিতে প্রতিদিন বা মাসিক বিল আসছে কত? ভোল্টেজ লো না হাই? কম্প্রেসর কি ওভারলোডে চলছে? ওয়ালটনের স্মার্ট এসিতে এসব সহজেই জানা যায়।
ক্রিস্টালাইন ছাড়াও ওয়ালটনের রয়েছে রিভারাইন এবং ভেনচুরি সিরিজের ১ টন, ১.৫ টন ও ২ টনের অসংখ্য মডেলের স্পিøট এসি। দাম ৩৬ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ৭৬ হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে। স্পিøট এসির পাশাপাশি ৪ ও ৫ টনের সিলিং ও ক্যাসেট টাইপ এসিও উৎপাদন এবং বাজারজাত করছে ওয়ালটন।
এদিকে, ওয়ালটন এসি কিনে ক্রেতারা পাচ্ছেন পুরো এক বছরের বিদ্যুৎ বিলের সমপরিমাণেরও বেশি টাকা ফ্রি পাওয়ার সুযোগ। তাছাড়া, প্রতিষ্ঠানটির ‘এসি এক্সচেঞ্জ অফার’ এর আওতায় যে কোনো ব্র্র্যান্ডের ব্যবহৃত এসি বদলে নতুন এসি দিচ্ছে তারা। ওয়ালটন প্লাজা ও শোরুমে পুরাতন এসি জমা দিয়ে গ্রাহকরা ২৫ শতাংশ ছাড়ে ওয়ালটনের যেকোনো মডেলের নতুন এসি কিনতে পারছেন। এর পাশাপাশি, দেশব্যাপী চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন ৪ এর আওতায় এসি কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এদিকে, ওয়ালটন এসি কিনে ফেসবুকে পোস্ট দিলে অথবা ওয়ালটন এসির বিভিন্ন তথ্যমূলক কলার টিউন নিজেদের মোবাইলে সেট করলে কিংবা ওয়ালটন এসির ফেসবুক পেজে লাইক এবং শেয়ার দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ৫০০ টাকা ক্যাশব্যাক পাবেন ক্রেতা।
৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি ছাড়াও ইনভার্টার এসির কম্প্রেসরে ১০ বছরের গ্যারান্টি সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন।
এছাড়া, এক বছরের ফ্রি হোম সার্ভিসসহ ৩ বছরের বিনামূল্যের বিক্রয়োত্তর সেবা পাচ্ছেন ক্রেতারা।
-শিশির