স্বাস্থ্যঃ
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় নুরজাহান অর্থপেডিক্স হাসপাতালের একটি চক্র সরকারি হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে আনতেন। উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার কথা বললেও অপরিষ্কার ও ফ্লোরে রক্ত মাখা কাপড় ও ওয়ার্ড বয়কে দিয়ে অপারেশন করানো হতো। এই অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালটির পরিচালক বাবুল হোসেনকে ১ বছরের কারাদণ্ড ও ওয়ার্ড বয়কে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নুরজাহান অর্থপেডিক্স হাসপাতালসহ আরও একটি হাসপাতাল সিলগালাও করে দিয়েছে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

গতকাল বুধবার (২৮ অক্টোবর) রাত ১০টা থেকে গভীর রাত ৩ টা পর্যন্ত, টানা ৫ ঘণ্টার অভিযানে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও শ্যামলী এলাকায় নুরজাহান অর্থপেডিক্স হাসপাতালসহ ২টি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও র‍্যাব-২ এর সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।

অভিযান শেষে তিনি বলেন, রাজধানীর শ্যামলী ও মোহাম্মদপুর থানার বাবর রোডে হাসপাতালে দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে এসে কম খরচে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার আশ্বাস দেয়। তারা রোগী আনার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সরকারি হাসপাতাল সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া।

তিনি বলেন, ক্রিসেন্ট হাসপাতালের পরিচালক হাজী মোহাম্মদ আবুল হোসেন। বয়স ৫০ এর কোঠায়। পাশ করেছেন এইচএসসি পর্যন্ত। একাধারে হাসপাতালটির পরিচালক ও রোগীদের ভাঙ্গা হাত-পায়ের এক্সরে দেখে অপারেশনের সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই দেন।

এছাড়াও ক্রিসেন্ট হাসপাতালের অনুমোদনের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে আরও ৪ মাস আগে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে আবুল হোসেনকে ১ বছরের কারাদণ্ড ও হাসপাতালটিকে সতর্ক করা হয়েছে।

পলাশ কুমার বসু বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষ আসে চিকিৎসা নিতে। তারা বেশিরভাগই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল। তারাই বেশি এই সব দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন।

তিনি আরো বলেন, অভিযানের শুরুতেই মক্কা-মদিনা হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়। সেখানে পরিচালক নূর নবীর কোনও ধরনের চিকিৎসা প্রদানের সনদ বা অনুমোদন নেই। তিনি তার রুমে বসে রোগী দেখছেন এবং তাদের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। হাত ভাঙ্গাসহ বিভিন্ন গুরুতর আহত যে রোগীরা আসছেন তাদেরকে অপারেশন করার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। যা তিনি কোনোভাবেই দিতে পারেন না।

এ অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাসপাতালটির পরিচালক নূর নবীকে ১ বছরের কারাদন্ডসহ আনোয়ার হোসেন কালু ও তার সহযোগী আব্দুর রশিদকে ৬ মাস করে সাজা প্রদান করা। একইসঙ্গে মক্কা-মদিনা হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই মানুষের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে এমন এইচএসসি পাশ চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে প্রতারিত না হন। এমন অপচিকিৎসা মানুষের অর্থ ও জীবনের জন্য খুবই বিপজ্জনক। সিলগালা করা হয়েছে জনস্বার্থে। সিলগালা করে টোটাল রিপোর্টটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আছেন তার মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রেরণ করা হবে। যাতে করে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়।
-কেবি

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily