অনলাইনঃ
ভোটের দুই দিন আগে ঢাকা-১৭ আসনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি ঘোষণা দেন, ‘মহাজোটের প্রার্থীদের সমর্থন দেবে জাতীয় পার্টি। মহাজোট মনোনীত যে সব প্রার্থী আছে তারা ছাড়া অন্যদের সরে যেতে হবে। মহাজোটকে বিজয়ী করার জন্য সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
তবে এর কয়েক ঘণ্টা পরেই এরশাদ বিবৃতিতে জানান, উন্মুক্ত সব আসনে লাঙলের প্রার্থীরা থাকবেন। দলের কোনো প্রার্থী যেন ভোট থেকে সরে না দাঁড়ায়।
বুধবার রাতে দেশে ফিরে বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আল্লাহর রহমত ও দেশবাসীর দোয়ায় এখন তিনি পুরোপুরি সুস্থ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বোন আখ্যা দিয়ে ঢাকা-১৭ আসনে নৌকার প্রার্থী চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে সমর্থনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনের আগে এরশাদের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসায় যান ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারুক। এরশাদ তাকে মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, ‘তোমাকে আসনটি দিলাম। তুমি এগিয়ে যাও। আমার দোয়া রইল তোমার সঙ্গে।’ পরে সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ জানান, ফারুক তার বাসায় এসেছিলেন সমর্থনের জন্য। নিজের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে ফারুককে সমর্থন দিয়েছেন।
২৬টি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মহাজোটের মনোনয়ন পেয়েছে। এছাড়া ১৪৮টি আসনে নৌকার বিপক্ষে লাঙলের প্রার্থী দিয়েছিলেন এরশাদ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, অন্তত ২০টি আসনে লাঙলের প্রার্থীরা নৌকার সমর্থনে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। আরও অন্তত ৫০ জন প্রার্থী প্রচারে নেই। ৭০টির মতো আসনে ভোটের লড়াইয়ে ছিলেন লাঙলের প্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, ২০ থেকে ২৫টি আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। তাদের অধিকাংশ জানিয়েছেন, তারা ভোটে আছেন, শেষ পর্যন্ত থাকবেন।
বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে মহাজোটের প্রার্থীদের সমর্থনে এরশাদের ঘোষণার পর জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা বিভ্রান্তিতে পড়েন। ক্ষণে ক্ষণে বক্তব্য বদলের জন্য আলোচিত সমালোচিত রাজনীতিক এরশাদ পরে বৃহস্পতিবার রাতে বিবৃতিতে বলেন, তার বক্তব্য গণমাধ্যমে ভুলভাবে এসেছেন। এতে তিনি মর্মাহত। উন্মুক্ত আসনে ভোটে থাকতে দলীয় প্রার্থীদের নির্দেশ দেন তিনি।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল চিশতী দাবি করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান উন্মক্ত আসনে দলের প্রার্থীদের নৌকার সমর্থনে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেননি। তার বক্তব্য ভুলভাবে গণমাধ্যমে এসেছে। ফয়সাল চিশতী বলেন, লাঙলের প্রার্থীরা নৌকার বিপক্ষে ভোটে আছেন, থাকবেন।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বলেন, নির্বাচনের আয়োজন সন্তোষজনক। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও সন্তোষজনক। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থীদের প্রচারে হামলার ও বিভিন্নস্থানে প্রার্থী আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে এরশাদের বক্তব্য, এগুলো নতুন কিছু নয়। এটা আমাদের দেশের রীতিতে পরিণত হয়েছে।