আড়ং শো-রুমের ১২০ গোপন ভিডিও ধারকের বিরল কথা শুনুন

অনলাইনঃ

তৈরি পোশাক বিপণনের দেশিয় প্রতিষ্ঠান আড়ংয়ের নারীকর্মীদের পোশাক পরিবর্তনের ভিডিও ধারণ করেন সিরাজুল ইসলাম সজীব। চেঞ্জরুমে গোপন ক্যামেরা বসিয়ে একে একে ১২০ ভিডিও ধারণ করেন তিনি। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির সাবেক বিক্রয়কর্মী সজীবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

২৫ জানুয়ারি, শনিবার কাফরুল থানার পূর্ব শেওড়াপাড়া থেকে অভিযুক্ত সজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের উপ-পরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে বনানী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা (নম্বর ৩৫) দায়ের করেন। এর আগে ১৬ জানুয়ারি ভুক্তভোগী এক নারী বনানী থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন।

অভিযোগে ওই তরুণী বলেন, তিনি বনানী আড়ংয়ের আউটলেটে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। একই আউটলেটে কর্মরত অবস্থায় তারই সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম সজীব গোপনে ট্রায়াল রুমে তার পোশাক পরিবর্তন করার ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য চাপসহ বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে।

মামলার এজাহারে তিনি আরো বলেন, ১১ জানুয়ারি রাতে বনানী আড়ংয়ের সাবেক সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম সজীব তার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একটি ভিডিও পাঠায়। তিনি ভিডিওটি খুলে দেখেন যে, বনানী আড়ংয়ের আউটলেটের ট্রায়াল রুমে তার পোশাক পরিবর্তন করার দৃশ্য। পরে একই রাতে সজীব তাকে ভিডিও কলে এসে শরীর দেখাতে বলে এবং এর পরের দিন তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাপ দেয়। পরে তিনি এসব বিষয়ে রাজি না হলে তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় সজীব।

এরপর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে ঘটনার সত্যতা পায়। মামলার তদন্তে পুলিশ একই আউটলেটের ট্রায়াল রুমে সজীবের করা এমন আরো অনেক গোপন ভিডিও’র সন্ধান পায়। এরপর সজীবকে কাফরুল থানার পূর্ব শেওড়াপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া সজীব আড়ংয়ের বনানী শাখার সাবেক কর্মী। তার গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন থানার আমিনাবাদে। ১০৯৮ নম্বর পূর্ব শেওড়াপাড়ার একটি বাসায় সজীব থাকতো। তার কাছ থেকে একটি রেডমি ৫ প্লাস ফোনসেট জব্দ করা হয়। ওই মোবাইলে তার নিজের ফেসবুক আইডি লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে আড়ংয়ের ওই নারীকর্মীর ভিডিও করা এবং হুমকি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সজীব জানায়, সে আড়ংয়ে চাকরি করতো। চাকরিরত অবস্থায় সে চতুর্থ তলার কর্মচারী চেঞ্জ রুমের বাইরের সানসেট’এ দাঁড়িয়ে সেলফি স্টিক দিয়ে মোবাইল ক্যামেরার মাধ্যমে আড়ংয়ের নারী কর্মচারীদের অজান্তে তাদের নিজস্ব ইউনিফর্ম পরিবর্তন করার সময় ভিডিও ধারণ করতো। তার কাছ থেকে ১৩ জন নারীকর্মীর ১২০টি ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ২০১৯ সালের অক্টোবরে এক নারীকর্মীর ভিডিও করার অভিযোগে ডিসেম্বর মাসে সজীবকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তবে তার কাছে আগের করা সব ভিডিও সংরক্ষিত ছিলো। তাকে এক দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। তার কাছ থেকে আরো তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

-বিকে/এম

FacebookTwitter