অনলাইন ডেস্ক:
নতুন করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর বিস্তার রোধ করা না গেলে আগামী কয়েক বছর ধরে আফ্রিকার দেশগুলোকে ভোগাবে। এ সতর্কবার্তা দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, আগামী ১২ মাসে মহাদেশটিতে এক লাখ ৯০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে ভাইরাসের সংক্রমণে।
দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার এক টেলিকনফারেন্সে করোনাভাইরাস নিয়ে সমীক্ষা প্রতিবেদনে এ প্রাক্কলন তুলে ধরেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আফ্রিকার প্রধান ডা. মাতিশিদিসো মোয়েতি।
গত মাসে এক সতর্কবার্তায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, আফ্রিকায় ছয় মাসের মধ্যে অন্তত এক কোটি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। তবে সরকারগুলোর পদক্ষেপের ওপর ভিত্তি করে এ সংখ্যা কমবেশি হতে পারে।
তবে সর্বশেষ প্রকাশিত সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এক বছরে আফ্রিকায় দুই কোটি ৯০ লাখ থেকে চার কোটি ৪০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে চিকিৎসা দিতে গেলে আফ্রিকার প্রায় সবগুলো দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। কারণ মহাদেশটিতে প্রতি ১০ লাখ মানুষের বিপরীতে একটি আইসিইউ শয্যা এবং একটি ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা আছে।
আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার পরে। তাই এ অঞ্চলে সংক্রমণের হার অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে কম। তবে এ মহাদেশে সংকট দীর্ঘায়িত হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।
ডা. মাতিশিদিসো বলেন, পৃথিবীর অন্যত্র যেভাবে করোনাভাইরাসের বিস্তার হয়েছে আফ্রিকায় সম্ভবত সেভাবে বিস্তার হবে না। বরং এ মহাদেশটিতে ভাইরাসের সংক্রমণ হবে ধীর গতিতে। সে জন্য আগামী কয়েক বছর ধরে এ মহাদেশ ভাইরাসের হটস্পট হয়ে থাকতে পারে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘এ অঞ্চলের সরকারগুলো যথেষ্ট উদ্যোগী না হলে আগামী কয়েক বছরের জন্য করোনাভাইরাস আমাদের জীবণের অংশ হয়ে যাবে। আমাদের নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে, সংক্রমণের উৎস খুঁজে বের করতে হবে এবং আক্রান্তকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
আফ্রিকার ৪৭টি দেশের তথ্যের ভিত্তিতে প্রাক্কলন সমীক্ষাটি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এসব দেশে বাস করে প্রায় একশ’ কোটি মানুষ।
মহাদেশটিতে ৫১ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ১২ জনের। তবে গত সপ্তাহ থেকে এ অঞ্চলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
ডা. মাতিশিদিসো বলেন, আফ্রিকার কয়েকটি দেশে সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। আমরা আশঙ্কা করছি, চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এসব দেশে সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছাতে পারে।
তবে সংক্রমণ ঠেকাতে আফ্রিকার অনেক দেশে লকডাউন কার্যকর রয়েছে। এতে সংক্রমণ কমতেও পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
-এফকে