আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ কারি ফেস্টিভ্যাল শুরু

ব্রিটিশ কারি প্রদর্শনী ব্রিটিশ কারি ফেস্টিভ্যাল শুরু
ব্রিটিশ কারি প্রদর্শনী ব্রিটিশ কারি ফেস্টিভ্যাল শুরু

লাইফস্টাইলঃ
ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলের ব্যুফে ডিনার রেস্টুরেন্ট ‘এলিমেন্টস-অল ডে ডাইনিং’-এ শুরু হলো জনপ্রিয় ব্রিটিশ ক্যুজিন ও কারি প্রদর্শনীর বহুল প্রত্যাশিত আয়োজন ব্রিটিশ কারি ফেস্টিভ্যাল।

যুক্তরাজ্যের মিশেলিন স্টার শেফ ডমিনিক চ্যাপম্যান সহ অ্যাওয়ার্ড-বিজয়ী কারি শেফ জামাল উদ্দিন আহমেদ, জাফর সোলিম উদ্দিন, সৈয়দ জহুরুল ইসলাম, উৎপল কুমার মন্ডল এবং মলয় হালদারের বিশেষ রান্না ও জমকালো এক গ্র্যান্ড গালা ডিনার আয়োজনের মধ্য দিয়ে হোটেলের রূপসী বাংলা গ্র্যান্ড বলরুমে ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, এমপি।

বিশেষ অতিথি হিসেবে ব্রিটিশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সাবেক সভাপতি ও ইউকে হাউজ অব লর্ডস-এর সদস্য লর্ড কারান বিলিমোরিয়া এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া ব্রিটিশ হাই কমিশন-এর ডিরেক্টর অব কমিউনিকেশনস ফ্রান্সেস জ্যাকস, কারি লাইফ ম্যাগাজিন ইউকে-এর সম্পাদক সৈয়দ বেলাল আহমেদ ও প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, “বাঙালি ও ব্রিটিশদের সম্পর্ক নতুন নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে। সেসময় যেসব ব্রিটিশ রাজনীতি-কূটনীতিবিদরা আমাদের পাশে দাড়িয়েছিলেন তাদের এখনো আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।

ব্রিটেনে বসবাসরত প্রায় ৫ লক্ষাধিক প্রবাসী বাঙালি দুই দেশের এই দৃঢ় সম্পর্ক আজও অটুট রেখেছে। এবং নি:সন্দেহে ব্রিটিশ কারি ইন্ডাস্ট্রির কল্যাণে তাদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “যেকোন দেশের শুধু কূটনৈতিক সম্পর্কই নয়, দুটি দেশের মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক মজবুত করতে পর্যটন বিরাট ভূমিকা পালন করে।

একে অপরের সংস্কৃতি, ভাষা, খাবার, ইতিহাস-ঐতিহ্য ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারে পর্যটনের মাধ্যমেই। আমি মনে করি, এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশদের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে এবং অসংখ্য ব্রিটিশ বাংলার সৌন্দর্য ও আতিথেয়তা উপভোগ করতে আগ্রহী হবে।”

ব্রিটিশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সাবেক সভাপতি ও ইউকে হাউজ অব লর্ডস-এর সদস্য লর্ড কারান বিলিমোরিয়া বলেন, “এটি সত্যিই এক অসাধারণ মূহুর্ত যে, আমরা ইন্টারন্যাশনাল শেফ ডে-তে ব্রিটিশ কারি ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করতে পেরেছি। এবং আরো একবার বাংলাদেশে এই আয়োজন আনন্দের মাত্রা দ্বিগুণ করে তুলেছে।

বাঙালিদের রান্নার স্বাদ যেমন অতুলনীয়, তেমনি বাংলাদেশের আতিথেয়তা এখানে ফিরে আসতে আমাদের বারবার অনুপ্রাণিত যোগায়।

আশা করি, বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের মধ্যকার এই সুসম্পর্ক সর্বদা বজায় থাকবে এবং ভবিষ্যতেও আমরা এভাবে দুই দেশের বন্ধুত্ব উদযাপন করতে পারবো।”

তিনি আরও বলেন, “আমি বিশেষভাবে কারি লাইফ ম্যাগাজিনের সায়েদ বেলাল আহমেদ এবং সায়েদ নাহাস পাশা-কে ধন্যবাদ দিতে চাই। তাদের ছাড়া এই আয়োজন সফল হতো না।”

বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, “আমরা জানি যে, করোনা মহামারির ফলে অন্য সবকিছুর মতোই আমাদের পর্যটনখাত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তাই এই খাত এবং বাঙালির অতিথি পরায়নতাকে আবার চাঙ্গা করে তুলতে হলে আমাদের সকলকে একত্রে কাজ করতে হবে।

আজকের এক আয়োজন তারই একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ব্রিটিশ কারি ফেস্টিভ্যালের আয়োজকদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন।”

২০০১ সালে শেরাটন ঢাকা হোটেলে প্রথমবারের মতো বিশ্ব-দাপানো এই ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়, যা সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১১ সালে। বিগত দুই দশকে ব্রিটিশ কারি ফেস্টিভ্যাল বিশ্ব মঞ্চে শেফদের প্রতিভা প্রদর্শনের মাধ্যমে সেরা ব্রিটিশ কারি অভিজ্ঞতা পৌঁছে দিয়েছে ইউরোপ ও এশিয়া জুড়ে। কারি লাইফ ম্যাগাজিন ইউকে ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা’র যৌথ আয়োজনে দীর্ঘ ১২ বছর পর আবারও তা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকায়।

ব্রিটেনে বর্তমানে আনুমানিক ১২০০০ কারি হাউস রয়েছে, এই শিল্পটি ক্রমশ সমৃদ্ধ হচ্ছে এবং এর অধিকাংশ শেফ ও রেস্টুরেন্ট মালিক বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত। কারি বর্তমানে ব্রিটেনের জাতীয় খাবার এবং এই খাবারের জন্য সাধারনত ব্রিটিশরা ব্যক্তিগতভাবে প্রতিবছর ৩০ হাজারের বেশি পাউন্ড খরচ করে থাকে। কারি লাইফ ম্যাগাজিন ইউকে-এর সৈয়দ বেলাল আহমেদ এবং সৈয়দ নাহাস পাশা দুই ভাই সম্মিলিতভাবে এই ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে ব্রিটিশ কারির অনন্য স্বাদ পৌঁছে দিচ্ছে বিশ্বজুড়ে।

সুস্বাদু ব্রিটিশ কারি ব্যুফে উপভোগ করা যাবে মাত্র ৭,৫০০ টাকায় জনপ্রতি। সেইসাথে নির্দিষ্ট ব্যাংকের কার্ডের ব্যবহারে থাকছে বাই ওয়ান গেট ওয়ান সুবিধা। ডিনারে শেফদের পুরো দলটি উপস্থিত থাকবে, ফলে ডিনারে অংশগ্রহণকারীরা পাবেন শেফদের সাথে কথা বলার সুযোগ।

ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ব্রিটিশ কারি ফেস্টিভ্যাল ২০২২-এর টাইটেল স্পন্সর সিটি ব্যাংক-অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস; কো-স্পন্সর হালদা ভ্যালি এবং হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা।

-শিশির

FacebookTwitter