অনলাইনঃ
রাজধানীর ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হল এখন ব্যবহৃত হচ্ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত র‌্যাব সদস্যদের চিকিৎসায়। সেখানে স্থাপিত হয়েছে একটি ফিল্ড হাসপাতাল।

একসময় যেখানে রঙিল চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হতো সেখানে এখন ঠাঁই পেয়েছে পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম।

এই ফিল্ড হাসপাতাল ছাড়াও করোনায় আক্রান্ত সরকারের এ এলিট ফোর্সের সদস্যরা বসুন্ধরা ফিল্ড হাসপাতাল, হলি ফ্যামেলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সংরক্ষিত বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত র‌্যাবের কতজন সদস্য প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সে সংখ্যা প্রকাশ না করলেও র‌্যাব সদর দপ্তর সূত্র জানায়, মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। আর করোনায় আক্রান্ত কোনো র‌্যাব সদস্য এখন পর্যন্ত মারা যাননি।

যেসব ফিল্ড হাসপাতালে র‌্যাব সদস্যরা চিকিৎসা নিচ্ছেন সেখানে তাদের নিজস্ব উদ্যোগে ভেন্টিলেটরসহ কোভিড চিকিৎসার অন্যান্য সরঞ্জাম কিনে স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া র‌্যাবে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা নির্ধারিত রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ও ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেই সাথে সংস্থাটিতে কর্মরত সেনা সদস্যরা চিকিৎসা নিচ্ছেন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)।

এদিকে করোনায় আক্রান্ত সদস্যদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা সার্বক্ষণিক মনিটর করার জন্য র‌্যাব সদর দপ্তর একটি অ্যাপস তৈরি করেছে বলে জানা গেছে। এই অ্যাপসে রোগীর ডিটেইল তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীর অবস্থা সরাসরি মনিটরিং করেন র‌্যাব মহাপরিচালক, গোয়েন্দা শাখার প্রধান, ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক। কোনো রোগীর জটিলতা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক জরুরি চিকিৎসা সহায়তার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

এছাড়া ঢাকার বাইরের কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ র‌্যাব সদস্যদের পরিবহনে সংস্থাটির এয়ার ইউংকে যুক্ত করা হয়েছে। তাদের নিজস্ব হেলিকপ্টারকে সাময়িকভাবে পোর্টেবল ভেন্টিলটর, পালস অক্সিমিটার এবং অক্সিজেন সংযুক্ত করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব হেলিকপ্টারে প্রতিটি জিনিস দুটি করে রাখা হয়েছে, যাতে একটি নষ্ট হলে আরেকটি দিয়ে কাজ চালানো যায়।

দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গুরুতর অবস্থায় তিনজন র‌্যাব সদস্যকে হেলিকপ্টারে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনা হয়েছে বলে জানা যায়। এদের মধ্যে একজনকে প্লাজমা থেরাপিও দিতে হয়েছে। ওই তিন র‌্যাব সদস্যই এখন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

র‌্যাবের এয়ার উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল মীর আসাদুল আলম এ বিষয়ে বলেন, ‘করোনায় ফ্রন্ট লাইনার হিসেবে যারা মাঠে যুদ্ধ করছেন এমন কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে সরকারের আদেশে তাকে দ্রুত হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনতে হয়।’

র‌্যাবের দুটি হেলিকপ্টারের মধ্যে একটি এখন সার্বক্ষণিকভাবে করোনা ফাইটারদের স্থানান্তরের জন্য তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ র‌্যাব কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘র‌্যাব-পুলিশ ছাড়াও চিকিৎসক বা অন্য যে কোনো পেশার কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হেলিকপ্টারে দ্রুত স্থানান্তরে প্রয়োজন হলে র‌্যাব প্রস্তুত।’

করোনায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি মানবিক সহায়তা দরকার উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘সবাই তাদের প্রতি আরো বেশি মানবিক ও যত্নশীল হলে তারা ভরসা পাবে।‘

-ডিকে

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily