আমিরুল ফয়সলঃ
শেখ সারহান নাসের (তন্ময়)। বেশ কিছুদিন ধরে উদীয়মান তরুণ এই রাজনীতিককে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ হৈ চৈ চলছে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের নেতা বলা হচ্ছে তাকে। দেখতে সুদর্শন, হাস্যোজ্জ্বল এই তরুণ ইতোমধ্যে রাজনীতিতে বেশ আলোচিত। সম্প্রতি বাগেরহাট-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর সুদর্শন এই প্রার্থীকে আগামী দিনের সম্ভাবনাময় নেতৃত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছোট ভাই শেখ আবু নাসেরের ছেলে সংসদ সদস্য (এমপি) শেখ হেলাল উদ্দীনের একমাত্র ছেলে শেখ তন্ময়। বয়স মাত্র বত্রিশ। গেল এক বছর তাকে বাগেরহাট অঞ্চলের রাজনীতিতে সরব দেখা গেছে। কিছু জনসভায় দেখা গিয়েছে বক্তব্য দিতে। সেসব বক্তব্যে তার স্বতন্ত্র বাচনভঙ্গি ইতোমধ্যে অনেককেই মুগ্ধ করেছে ।
শুধু গত এক বছর নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিয়েছেন শেখ তন্ময়। বিশেষত, ২০০১ সালে তার ফুফু এবং বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাগেরহাট ১ আসনে নির্বাচন করলে তিনি সেইসময় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর যখনই সময় সুযোগ মিলেছে পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে রাজনীতিতে সময় দিয়েছেন। স্থানীয় রাজনীতিতে এখন তাকে নিয়ে বেশ আলোচনা। দলের কর্মীরা তাকে বাগেরহাট-২ আসনের এমপি দেখতে চায়। ছাত্রদের কাছেও তিনি বেশ জনপ্রিয়, বিশেষত ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে তার বন্ধুসুলভ সম্পর্ক থেকে আন্দাজ করা যায় তরুণদের কাছে তিনি বেশ আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব।
বিপুল জনপ্রিয়তা আর ঈর্ষণীয় পরিচিতি থাকা সত্ত্বেও পড়ালেখা শেষ করেই আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে আসলেন। তিনি এতোদিন লন্ডনে অধ্যয়নরত ছিলেন। উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেই দেশে ফিরেন, ২০১৫ সালে। দেশে এসে বিয়ে করেন শেখ ইফরাহ (তন্ময়)কে। তার স্ত্রী পেশায় শিক্ষক। আর তিনি নিজে একজন ব্যবসায়ী।
এরকম সুদর্শন ক্যারিশমেটিক তরুণ নেতার স্বাভাবিকভাবেই অনেক ফ্যান-ফলোয়িং তৈরি হয়ে গেছে। বিশেষ করে অসংখ্য তরুণীর কাছে জনপ্রিয়তম মুখ শেখ তন্ময়। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে বিভিন্ন ট্রল পেজেও দেখা যাচ্ছে ভীষণ মজার সব পোস্ট, এবার বাংলাদেশের সব মেয়েদের ভোট নাকি আওয়ামী লিগে পড়বেই! কেউ কেউ বলছেন, নেতা না হয়ে নায়ক হলে তাকে বেশ মানাত! এসব তরুণীর সিংহভাগই হয়তো রাজনীতির সাতে-পাঁচে তেমন একটা থাকেন না। শেখ তন্ময়ের কল্যাণে যদি আই হেট পলিটিক্স জেনারেশনের কারো কারো রাজনীতিতে আগ্রহ জন্মে, তাতে অবশ্য মন্দ কী!
শেখ পরিবারের নতুন এক সদস্য রাজনীতিতে আসছেন এটা নিয়ে স্বভাবতই আলোচনা হবে। তবে, রাজনীতিতে যোগ্যতা এবং নেতৃত্বের গুণটাই দিনশেষে মুখ্য। রাজনৈতিক দক্ষতা ও প্রজ্ঞা না থাকলে চেহারা দিয়ে জনগণের কোনো উন্নয়ন হবে না। তারেক জিয়া, মাহি বি চৌধুরী, আন্দালিব রহমানের মতো ‘সুদর্শন’রা তো আছেনই উদাহরণ হিসেবে!
তবে একটি ব্যাপারে আমরা সবাই-ই একমত, রাজনীতির ময়দানে শিক্ষিত তরুণদের অংশগ্রহণ নিঃসন্দেহে রাজনীতির গুণগত মান পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে। শেখ তন্ময়ের বক্তব্যে বোঝা যায় শিক্ষিত আর অশিক্ষিত রাজনীতিবিদদের মধ্যে কতটা পার্থক্য। এই পর্যন্ত তিনি যেসব সভায় বক্তব্য রেখেছেন, তাতে বোঝা যায় তিনি বেশ সেন্সিবল। এটাই তাকে এগিয়ে রাখবে ভবিষ্যৎ রাজনীতির ময়দানে। অহেতুক আক্রমণাত্মক বক্তব্য নেই, বিনয়ী হতে জানেন। তার কাছে সবার প্রত্যাশাও একটু বেশি, যেহেতু বঙ্গবন্ধু পরিবারের রক্ত বইছে তার শরীরে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের রাজনৈতিক সুনাম, লিগ্যাসি ধরে রাখতে পারবেন কিনা, এটাই দেখার বিষয়!