আউটসোর্সিং এ সেরা ৮৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত

আউটসোর্সিং এ সেরা ৮৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত
আউটসোর্সিং এ সেরা ৮৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত

তথ্য ও যোগাযোগঃ

শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখে রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হয় এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান।

এসময় আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান বিভাগে ৭টি, স্টার্টআপ বিভাগে ৭ টি, এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স বিভাগে ১৬টি, জেলা পর্যায়ে ৫৪টি এবং ব্যক্তি নারী বিভাগে ৩টি পুরস্কারসহ সর্বমোট ৮৭টি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

সরকারের ২০২৫ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ‘বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ডস-২০২০’ এর আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগী ও স্পন্সর প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল ব্যাংক এশিয়া, এলআইসিটি প্রকল্প এবং আইবিপিসি ।

অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, এমপি বলেন, “বর্তমানে ৩৮০০ ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক্যাল সেবা দেওয়া হয়েছে বাকী ইউনিয়নগুলোতে দ্রুত এই সুবিধা দেওয়া হবে। ব্যাংক এশিয়া একটি দুর্দান্ত কাজ করেছে, যারা ফ্রিলান্সিং করছে তাদেরকে সেবা দিচ্ছে। যেভাবে প্রযুক্তি এগিয়ে যাচ্ছে সেভাবে স্কিল উন্নয়ন করে আমাদেরও সেভাবে থাকতে হবে। শুধু রপ্তানি নয় আমাদের দেশের ডিজিটাল চাহিদা মেটাতেও জোর দিতে হবে। তাই সরকার দেশকে আইটি সেক্টরে এগিয়ে নিতে দেশের প্রতিটি জেলায় আইটি সেন্টার গড়ে তুলছে। তিনিএ ধরনের একটি আয়োজন করার জন্য বেসিস কে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান ।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ‍ পলক,এমপি বলেন, “আজ থেকে ৫০ বছর আগে বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন ঢাকা মানেই বাংলাদেশ নয়! ঢাকার বাইরে যে হাজার হাজার গ্রাম আছে, সেই গ্রামের উন্নয়ন করলেই বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সেই বিকেন্দ্রীকরণে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আইটি ফ্রিলান্সারদের আত্ম পরিচয় সংকট কাটিয়ে তুলতে আইসিটি ডিভিশন থেকে ভার্চুয়াল কার্ড প্রদান করা হবে এবং কার্ড গ্রহণকারীরা নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন”।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়্যারম্যান এ কে এম রহমতুল্লাহ, এমপি বলেন, “১৯৭৪ সালে হেনরী কিসিঞ্জার বলেছিলেন, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি! কিন্তু তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে আজকে ১৬ কোটি মানুষের সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, “বর্তমানে তৈরি পোশাক শিল্পে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে আমাদের এই সস্তা শ্রমের সুবিধা আর থাকবে না। শুধু গার্মেন্টস খাতের উপরে নির্ভর হয়ে পড়ে থাকলে হবে না, বরং মেধাবী কয়েকজনকে একত্রিত হয়ে একটি ছোট আউটসোসিং কোম্পানী গঠন করে মিলিয়ন ডলার অর্জন করার জন্য তিনি প্রতিযোগীদের প্রতি আহবান জানান।

তিনি আরো বলেন, আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে যদি আমরা ইনভেস্টমেন্ট বাড়াতে পারি, তাহলে আমাদের আইসিটি সেক্টর দিয়ে বাংলাদেশের নাম সমগ্র বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পারবো।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আরও বক্তব্য রাখেন, বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড ২০২০-এর আহবায়ক রাশাদ কবির, এলআইসিটির প্রকল্প পরিচালক ও ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক মো. রেজাউল করিম, বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান এবং বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড ২০২০ এর প্রধান বিচারক ও বেসিসের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম রাওলি এবং ব্যাংক এশিয়ার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট জিয়া আরফিন প্রমুখ।

এছাড়া অনুষ্ঠানে বেসিস এর প্রাক্তন সভাপতি এস এম কামাল,বেসিস সহ-সভাপতি (প্রশাসন) শোয়েব আহমেদ মাসুদ, বেসিস সহ-সভাপতি (অর্থ) মুশফিকুর রহমান এবং ব্যাংক এশিয়ার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম ইকবাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, দীর্ঘ ৫ বছর পর এ বছর থেকে আবারো বেসিসের উদ্যোগে বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা শুরু হয়েছে। বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড আয়োজনের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো সরকারের ২০২৫ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করা। পাশাপাশি যারা এখন ব্যক্তি পর্যায়ে আউটসোর্সিং কাজে নিয়োজিত তারা যেন অদূর ভবিষ্যতে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে কোম্পানি গঠন করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রায় প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিতে পারে। কারণ সরকার এখন রপ্তানি আয়ের উপর যে ১০% নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে তা কেবল কোম্পানিগুলোই নিতে সক্ষম।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, আউটসোর্সিং পরিষেবাগুলির মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক প্রতিভাবান উদ্যোক্তা এবং ব্যক্তিরা কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশে ও সমাজে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
-শিশির

FacebookTwitter