বিনোদনঃ
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রিয় অভিনেতা মুজিবুর রহমান দিলু।
আজ ১৯ জানুয়ারি, মঙ্গলবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে রাজধানীর হাসপাতালে ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
শারীরিক অবস্থায় অবনতি হওয়ায় গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকে ওই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল মজিবুর রহমান দিলুকে। সেখানকার চিকিৎসক ডা. ওমর ফারুকের তত্ত্বাবধানে এই অভিনেতার চিকিৎসা চলছিল।
গতকালই তার ছেলে অয়ন রহমান জানিয়েছিলেন, তার বাবার ফুসফুসের ৭০ ভাগই আক্রান্ত হয়েছিল। করোনা নেগেটিভ হলেও তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন।
এর আগে ২০০৫ সালে গুলেন বারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়েছিলেন দিলু। তখন দীর্ঘদিন কোমায় ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করেন দিলু। শান্ত-মরিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাহী পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে তার রক্তে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া কিডনিতে দুটো পাথরও শনাক্ত হয়। চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছিলেন তিনি।
সম্প্রতি ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন মজিবুর রহমান দিলু। গত ১২ জানুয়ারি তার শরীরের অবস্থার অবনতি ঘটলে দ্রুতেই উত্তরার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন তিনি।
১৯৫২ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে জন্ম নেয়া মজিবুর রহমান দিলুর অভিনয় শুরু মঞ্চে। এরপর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে অভিনয় শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে নিয়মিত অভিনয় করেছেন তিনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন।
জনপ্রিয় নাটক ‘সংশপ্তক’-এ তার অভিনীত মালু চরিত্র এখনো দর্শকহৃদয়ে গেঁথে আছে। আশির দশকে ছোটদের জনপ্রিয় গল্প ও সংগীতের সমন্বয়ে শ্রুতি নাটক ‘টোনাটুনি’ প্রকল্পের নির্দেশকও ছিলেন দিলু। তার কণ্ঠে পাতা ওল্টাও, শিশুদের মধ্যে অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলো।
মুজিবুর রহমান দিলু অভিনীত মঞ্চনাটকের মধ্যে ‘আমি গাধা বলছি’, ‘নানা রঙ্গের দিনগুলি’, ‘জনতার রঙ্গশালা’ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ‘নীল পানিয়া’, ‘মহাপ্রস্থান’, ‘কিছু তো বলুন’, ‘তথাপি’, ‘আরেক ফাল্গুন’ টিভি নাটকেও অভিনয় করেছেন তিনি। তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটকের মধ্যে ‘সময় অসময়’ এবং ‘সংশপ্তক’ উল্লেখযোগ্য। ‘সংশপ্তক’-এর মালু চরিত্রটি আজও দর্শকদের মনে দাগ কেটে আছে। আশির দশকে ছোটদের জনপ্রিয় গল্প ও সংগীত এর সমন্বয়ে শ্রুতি নাটক টোনাটুনি প্রকল্পের নির্দেশক ছিলেন দিলু। তার কণ্ঠে পাতা ওল্টাও, শিশুদের মধ্যে অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলো যা আজও অনেকেই মনে রেখেছেন।
-বিকে