স্পোটর্সঃ

অবিচল মুশফিকুর রহিমকে কিছুতেই নড়াতে পারছেন না জিম্বাবুয়ের বোলাররা। উইকেটে খুঁটি গেড়ে বসেছেন বাংলাদেশি মিডল অর্ডারের এই আস্থা।

সেঞ্চুরির পর পার করে ফেলেছেন দেড়শ রানের ঘরও। আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছেন ডাবল সেঞ্চুরির দিকে।

২২২ রানের ম্যারাথন জুটির পর সেঞ্চুরিয়ান সঙ্গী মুমিনুল হককে হারিয়েছেন মুশফিক। তবে মনোসংযোগ তাতে সরে যায়নি। নিজের মতোই খেলে যাচ্ছেন মাথা ঠান্ডা রেখে। এগিয়ে যাচ্ছেন দ্বিশতকের পথে। তার চোখ ধাঁধানো ইনিংসটাতে ভর করে বাংলাদেশের লিডও ইতোমধ্যে ২০০ পার হয়ে গেছে।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৬ উইকেটে ৫৩২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। দলের লিড এখন ২৬৭ রানের।

আগের দিনের ৩ উইকেটে ২৪০ রান সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। দিনের প্রথম শেসনেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মুমিনুল হক। তিরিপানোর বলে কভার ড্রাইভ করে অধিনায়ক হিসাবে প্রথম সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছান। ১৫৬ বলে ১২ চারে বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান তুলে নেন তার ক্যারিয়রের নবম সেঞ্চুরি। 

মুমিনুল আর মুশফিকের রসায়নে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সেঞ্চুরির পথে এগোতে থাকেন মুশফিক। ৯৯ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজ বিরিতি যান অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। বিরতি থেকে ফিরেই শতক তুলে নেন মুশফিক। ১০১তম ওভারের তৃতীয় বলে চার মেরে ক্যারিয়ারের সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। 

মুমিনুল আর মুশফিকের জুটি ভাঙতে তৎপর হয়ে উঠে জিম্বাবুয়ের বোলাররা। শেষ পর্যন্ত ২২২ রানের জুটি ভেঙে দেন এন্দলোভু। চাকাভার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেয়ার আগে ২৩৪ বলে ১৪টি চারের মারে ১৩২ রান করেন মুমিনুল। তবে আগেই তামিমকে ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। তামিম আর মুমিনুলের সেঞ্চুরির সংখ্যা এখন সমান ৯টি করে। 

মুমিনুলের বিদায়ের পর দারুন শুরু করেন মোহাম্মদ মিঠুন। কিন্তু সেট হতে পারলেন না তিনি। এন্দলোভুর বলে চাকাভার তালুবন্দি হন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। রিভিউ নিয়েও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি মিথুন। ফেরার আগে তিন চারে ২৩ বলে ১৭ রান করেন তিনি।   

এরপর উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন দাসকে সঙ্গী করে রানের পাহাড়ে ছুটছেন মুশফিকুর রহিম। এরইমধ্যে নিজের নামের পাশে দেড় শতাধিক রান যোগ করেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। ছুটছেন দ্বিশতকের পথে।

প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ২৬৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সাইফের বিদায়ে খানিকটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠে স্বাগতিকরা। চা বিরতির আগে শান্ত ফিফটি তুলে নিলেও বিদায় নেন তামিম। ফিফটিটাকে ৭১ রান অবধি নিয়ে যেতে পেরেছেন শান্ত। নিজের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১৩৯ বলে সাতটি চারের সাহায্যে।

এরপর বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। সঙ্গী হিসেবে পান অভিজ্ঞ মুশফিকুরকে।  ১৭২ রানে ৩ উইকেট চলে যাওয়ার পর এই জুটি অবিচ্ছিন্ন থেকে দ্বিতীয় দিন পার করেছে। যেখানে মুমিনুল ৭১ করে অপরাজিত আছেন। তিনি এই রান করেছেন ১৩৯ বলে সাতটি চারের সৌজন্যে। মুশফিকের ৩২ রান এসেছে ৬৮ বলে ছয়টি চারের সাহায্যে।

ইনিংসের শুরুটা মোটেও ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ বলে নিয়াওচির বলে খোঁচা মারতে গিয়ে রেগিস চাকাভার তালুবন্দি হয়েছেন সাইফ হাসান। এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন নাজমুল শান্ত ও তামিম ইকবাল। দুজনেই ফিফটির পথে এগোচ্ছিলেন। ৮৯ বলে ৪১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তামিম। ত্রিপানোর বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন এই ওপেনার।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। ব্যাট করতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২২৬ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। দলীয় ৭ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ১১১ রানের জুটি গড়েন প্রিন্স মাসভাউরে (৬৪) এবং অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। 

এরপর তৃতীয় আঘাতটিও হেনেছেন নাঈম। বোল্ড করে ফিরিয়েছেন অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেলরকে (১০)। অবশ্য সিকান্দার রাজার সঙ্গে আরভিনের জুটি বড় হতে দেননি সেই নাঈমই। রাজাকে ফিরিয়েছেন লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে। তার আগে তিনি ৬২ বল খেলে করেছেন ১৮ রান। একপ্রান্ত আরভিন আগলে রাখলেও অন্যপ্রান্ত থেকে তেমন সঙ্গ পাননি। মারুমাকে এলবিডব্লুয়ের ফাঁদে ফেলে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেছেন আবু জায়েদ।

ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝেই ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন আরভিন। ২২৭ বলে তিনি ১০৭ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১৩টি চারের সৌজন্যে। প্রথম দিন শেষে জিম্বাবুয়ে সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ২২৮ রান।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ৪ উইকেট হাতে নিয়ে দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে স্কোরবোর্ডে আর মাত্র ৩৭ রান যোগ করতে সমর্থ হয় জিম্বাবুয়ে। প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬৫ রান।  শেষ ব্যাটসম্যান হিসাবে রেগিস চকাভাকে (৩০) শিকার করেন তাইজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের হয়ে পেসার আবু জায়েদ ও স্পিনার নাঈম হাসান ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া ২টি শিকার করেন তাইজুল।

-কেকে

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily