মিন্নির জামিন হয়েছে

সারাদেশ:

বরগুনার রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হয়ে যাওয়া আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) তাকে জামিন দেন বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

গতকাল বুধবার (২৯ আগস্ট) হাইকোর্টে জামিনের শুনানি হয়। শুনারিতে অর্ধ শতাধিক আইনজীবী মিন্নির পক্ষে অংশ নেন। শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করে আদালত।

গত ২০ আগস্ট মিন্নির জামিন আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে কেন তাকে জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল হাইকোর্টের এই বেঞ্চ। রুলের পাশাপাশি মামলার যাবতীয় নথিসহ তদন্ত কর্মকর্তাকে (আইও) তলব করেছিল হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেনকে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।

আদালতে নেয়ার আগেই রিফাত হত্যায় মিন্নির সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন, মামলার তদন্ত পর্যায়ে এমন বক্তব্য দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে এর যৌক্তিকতা নিয়ে ওই দিন প্রশ্ন তুলেছিল আদালত। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় আসামিকে হাজির করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংবাদ সম্মেলন করারও সমালোচনা করে হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির গতকাল আদালতে হাজির হয়ে মামলার যাবতীয় নথি উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া পুলিশ সুপারের পক্ষে ব্যাখ্যা দেয় রাষ্ট্রপক্ষ।

জামিন পেতে গত ১৮ আগস্ট হাইকোর্টের এই বেঞ্চে আইনজীবীদের মাধ্যমে আবেদন করেন মিন্নি। এর আগে গত ৮ আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্টের একটি অবকাশকালীন বেঞ্চ মিন্নির জামিন প্রশ্নে কোনো আদেশ না দিয়ে রুল দিতে চাইলে আবেদনটি ফিরিয়ে নেন তার আইনজীবী জেড আই খান পান্না। 

এরও আগে নিম্ন আদালতে দুই দফা জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর গত ৫ আগস্ট প্রথম দফায় হাইকোর্টে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন মিন্নি। গত ২১ জুলাই বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়। এরপর ৩০ জুলাই বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতও তার জামিনের আবেদনে সাড়া দেয়নি।

গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রী মিন্নির সামনে রিফাত শরীফ খুন হওয়ার পরদিন ১২ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। এরই মধ্যে এ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। পরে নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ অভিযোগ করেন, মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের সম্পর্ক ছিল এবং তার ছেলে হত্যায় পুত্রবধূ মিন্নিরও সংশ্লিষ্টতা ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ জুলাই সকালে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যায় রিফাত হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে মিন্নিকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। 

রিমান্ডে নেওয়ার পর ১৯ জুলাই পুলিশ জানায়, রিফাত হত্যার সংশ্লিষ্টতায় মিন্নি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে বাবা মোজাম্মেল হোসেন দাবি করেন, জবরদস্তি ও তড়িঘড়ি করে মিন্নির কাছ থেকে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

-কেএম

FacebookTwitter