আইন আদালতঃ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অপমানজনক, অগ্রহণযোগ্য এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের কারণে মাওলানা মামুনুল হক ও জুনায়েদ বাবুনগরী গংদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহের মামলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
গতকাল ৬ ডিসেম্বর, রবিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর এ আবেদন করেন।
এতে বলা হয়, বিগত ১৩ নভেম্বর খেলাফত মজলিশের নেতা মাওলানা মামুনুল হক ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য তৈরির তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, ভাস্কর্য নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে সরে না আসলে আরেকটি শাপলা চত্বরের ঘটনা ঘটাবেন এবং ভাস্কর্য ছুঁড়ে ফেলবেন।
অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী গত ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক মাহফিলে, কোন ভাস্কর্য তৈরি হলে তা টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন।
তাদের ঐদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য গত কয়েকদিন যাবত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়ে আসছে। তাদের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের রেশ ধরে তাদের অনুসারীরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান স্বীকৃত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের ডান হাত ও পুরো মুখমণ্ডল, বা হাতের অংশবিশেষ গত ৪ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে ভেঙে ফেলে।
আবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের অপর নাম | গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান স্বীকৃত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হানা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল। মাওলানা মামুনুল হক ও জুনায়েদ বাবুনগরীদের প্রত্যক্ষ মদদে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হেনেছে দুবৃর্ত্তরা। যা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অপমানজনক, অগ্রহণযোগ্য এবং তাদের এইরুপ ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং কার্যকলাপ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বিরাগ ও ঘৃণা সৃষ্টির অশুভ অভিপ্রায়ে করা হয়েছে বিধায় মাওলানা মামুনুল হক গং’রা দণ্ডবিধির ১২৩, ১২৪ক এবং ৫০৫ ধারার আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে তথা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও আদর্শে উজ্জীবিত দেশপ্রেমিক বাঙালি হিসেবে মাওলানা মামুনুল হক গংদের বিরুদ্ধে উপরোক্ত ধারায় মামলা করতে আগ্রহী।
তাই উক্ত আবেদনে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৯৬ ধারা বিধান মোতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আমলে নেওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে সরকার কর্তৃক অনুমোদনের প্রয়োজন থাকায় মাওলানা মামুনুল হক গংদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার জন্য আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদের অনুকূলে অনুমোদন প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
-ডিকে